মশাহিদ আহমদ, মৌলভীবাজার প্রতিনিধিঃ
অনেক কষ্টে সংসার চলে তাদের। “ভালো মানুষ আছে বলেই, পৃথিবী টিকে আছে” দিন আনে, দিন খায়, কখনো বা তাও জোটেনা এরকম এক পরিবারের।
সদর উপজেলার গিয়াসনগর বাজারের সিরাজ টেইলার এর কারিগর কৃপেন্দ্র সরকার (৩৭) তেমনি শতভাগ অভাবের মধ্যেও বেঁচে থেকে সততার ইতিহাসে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। সম্প্রতি মৌলভীবাজার শহরের ৫৫ মিশন রোড এলাকার লন্ডন প্রবাসী আব্দুল হক প্রয়োজনীয় কাজে ঢাকা যাচ্ছিলেন। এ সময় তার যাত্রাপথে মূল্যবান জিনিষপত্র, দামী মুঠোফোন ও লন্ডনের জরুরি কাগজাতসহ ভৈরবগঞ্জ বাজারের শেখ বাড়ী মাদরাসার উত্তর পর্শ্বে চলন্ত গাড়ী থেকে রাস্থায় ছিঠকে পড়ে যায়। পড়ে কুড়িয়ে পাওয়া ঐ মালামাল আব্দুল হক লন্ডনীর কাছে যোগায়োগ এর মাধ্যমে ফেরৎ প্রদান করেন কারিগর কৃপেন্দ্র সরকার । প্রচন্ড অভাবের মধ্যেও বেঁচে থেকে এমন কাজ করে বিরাট মানসিক শক্তি ও সৎ মানুষ হিসাবে উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন তিনি। দীর্ঘদিন দুবাই দেশে বসবাস করলেও বর্তমানে দোকানে দৈনিক সীমিত কিছু টাকা উপার্জন এরমধ্যে পরিবারের লোকজনদের খাওয়া-দাওয়া, চিকিৎসা খরচসহ যাবতীয় ব্যয় বহন করা অনেকটা কষ্টদায়ক তার। এরপরও এগুলো নিয়েই তিনি মহা খুশি। বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থার প্রেক্ষিতে এত দামী মুঠোফোন, মূল্যবান জিনিষপত্রও জরুরি কাগজাত পাওয়ার পরও তিনি লোভ করেননি। সৎভাবে বাঁচার জন্যই এ লোভ তার মনে আসেনি খেটে খাওয়া এই মানুষটি। কারিগর কৃপেন্দ্র সরকার গিয়াসনগর বাজারের সিরাজ টেইলার এর দোকানে ১১-১২ বছর যাবৎ কারিগর হিসাবে কর্মরত। তিনি শ্রীমঙ্গল উপজেলার উত্তর মাজডিহি, নারাইনপুর গ্রামের মৃতঃ দশরত সরকার ও মাতা-মৃতঃ আলফী রাণী সরকার এর ২য় পুত্র। তিনি ২ছেলে, ১মেয়ে। বড় মেয়ে দশম শ্রেনীতে পড়ে। ১ ছেলে ৭ম শ্রেনীতে পড়ে। অপর পুত্রের বয়স চার বছর। তাদের দুই ভাইয়ের মধ্যে বড় ভাই ডুবাই প্রবাসী এবং তিনিও দীর্ঘদিন ডুবাই দেশে কর্মরত ছিলেন। লন্ডন প্রবাসী আব্দুল হক বলেন- বর্তমান যুগে এরকম সৎ মানুষ পাওয়া খুব মুশকিল। ভালো মানুষের দৃষ্টান্ত কারিগর কৃপেন্দ্র সরকার।
প্রাইভেট ডিটেকটিভ/২৪এপ্রিল২০১৮/ইকবাল