ডিসেম্বরের নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট চাই: সিলেটে শেখ হাসিনা
সিলেট প্রতিনিধি
একাদশ জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ভোট দিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভোটের বছরের শুরুতে সিলেটে গিয়ে তিন আউলিয়ার মাজার জিয়ারত করেন এবং জনসভায় ভাষণ দেন তিনি। সিলেটের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে গতকাল মঙ্গলবার বিকালের জনসভায় শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের নির্বাচনী প্রচার চালানো এখান থেকেই শুরু। ৗেকা প্রতীকে ভোট চেয়ে তিনি বলেন, ডিসেম্বরে যে নির্বাচন হবে, সে নির্বাচনেও আপনাদের কাছে নৌকা মার্কায় ভোট চাই। নৌকায় মার্কায় ভোট দিতে জনসভায় আগত সবাইকে হাত তুলে ওয়াদা করার আহ্বান জানান আওয়ামী লীগ সভানেত্রী। আপনারা হাত তুলে ওয়াদা করেন নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন। মাঠভরতি মানুষ হাত তুলে শেখ হাসিনার কথায় সায় দেন। আ্ওয়ামী লীগ আয়োজিত এই জনসভায় সরকারি ২০টি প্রকল্প উদ্বোধন এবং ১৮টির ভিত্তিফলক উন্মোচন করেন শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সফরে গিয়ে জনসভায় শেখ হাসিনার ভোট চাওয়ার সমালোচনা করে আসছে বিএনপি। তারা বলছে, এভাবে রাষ্ট্রীয় খরচে দলের পক্ষে প্রচার চালানো আইন-বিরুদ্ধ। নৌকার পক্ষে ভোট চেয়ে শেখ হাসিনা বলেন, অতীতে নৌকায় ভোট দিয়েছেন। নৌকায় ভোট দিয়েছিলেন বলেই আন্তর্জাতিকভাবে দেশের সুনাম হয়েছে। টানা দ্বিতীয় মেয়াদে সরকার গঠনের পর সিলেটে শেখ হাসিনার তৃতীয় সফর এটি। এ উপলক্ষে পুরো শহর সাজানো হয় ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন, বিলবোর্ড আর তোরণে। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী তার বক্তব্যের শুরুতেই সিলেটের প্রয়াত রাজনীতিক আবদুস সামাদ আজাদ, হুমায়ূন রশীদ চৌধরী, শাহ এ এম এস কিবরিয়া, দেওয়ান ফরিদ গাজী ও সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে স্মরণ করেন। ২০০৫ সালের শুরুতে হবিগঞ্জে নিজ নির্বাচনী এলাকায় গ্রেনেড হামলায় নিহত হন সাবেক অর্থমন্ত্রী কিবরিয়া। ২০০৪ সালে যুক্তরাজ্যের তৎকালীন রাষ্টদূত আনোয়ার চৌধুরীর উপর গ্রেনেড হামলা এবং বদর উদ্দিন আহমেদ কামরানের উপর গ্রেনেড হামলার কথাও উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। দশম জাতীয় সংসদ বানচাল করতে বিএনপি-জামায়াত জোটের ভোট কেন্দ্রে আগুন দেওয়াসহ নাশকতামূলক কর্মকা-ের কথাও বলেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, বিএনপি ধ্বংস করতে জানে, সৃষ্টি করতে জানে না। পাঁচ বছরে বিএনপি হাজার হাজার গাড়ি পুড়িয়েছে। তিন হাজার মানুষ তাদের অগ্নিসন্ত্রাসে অগ্নিদগ্ধ হয়েছে। পোড়া মানুষের লাশ দেখে খালেদা জিয়া উৎফুল্ল হয়েছে। আওয়ামী লীগ আমলের উন্নয়নচিত্র তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন,আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসা মানে উন্নয়ন। আর, বিএনপি আসা মানেই ধ্বংস। সেনানিবাস প্রতিষ্ঠাসহ সিলেটের উন্নয়নে নেওয়া নানা পদক্ষেপও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না আসলে দেশের এত উন্নয়ন হত না। লুটেরা আসলে লুটেপুটে খেত। সকালে সিলেটে পৌঁছে সরাসরি শহরের দরগাহ মহল্লায় যান শেখ হাসিনা। সেখানে তিনি হজরত শাহজালালের মাজার জিয়ারত ও মোনাজাত করেন। শাহজালালের মাজার থেকে শেখ হাসিনা যান শহরের প্রান্তে খাদিম নগরে, হজরত শাহপরাণের মাজারে। এরপর সুরমা পারের কুশিঘাট এলাকায় গিয়ে হজরত গাজী বুরহান উদ্দীনের মাজার জিয়ারত করেন তিনি। তিন মাজার জিয়ারত শেষে সিলেট সার্কিট হাউজে যান প্রধানমন্ত্রী। সেখানে নামাজ ও মধ্যাহ্ন বিরতির পর আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে আওয়ামী লীগের জনসভাস্থলে পৌছান। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ছাড়াও এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, তারিক আহমেদ সিদ্দিক, আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুব-উল আলম হানিফ, দীপু মনি, শেখ হেলাল, দেলোয়ার হোসেন, নওফেল চৌধুরী, বিপ্লব বড়ুয়া, মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান, প্রেস সচিব ইহসানুল করিম।