শাহ মোহাম্মদ রায়হান বারী,রংপুর ব্যুরো: নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
রংপুর সিটি কর্পোরেশনের (রসিক) ৪৯ কোটি টাকার রাস্তার লাইটিং প্রকল্পের ৮টি গ্রুপের সবকটি কাজই পেয়েছেন মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফার পছন্দের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘এডেক্স করপোরেশন লিমিটেড’। বিশেষ এই প্রতিষ্ঠানকে কাজটি দিতে গোপনীয় অফিসিয়াল আদেশ সরবরাহের অভিযোগ শুধু নয়, মেয়রের বিরুদ্ধে টেন্ডারের নমুনা পাল্টে দেয়ার অভিযোগ করেছেন সিটি কর্পোরেশনের তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক এমদাদ হোসেন। নমুনা পরিবর্তনের মাধ্যমে নিম্নমানের বাল্ব সরবরাহ করে ২০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার সুযোগ পেয়েছে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
প্রকল্পের ইলেক্ট্রিক্যাল পণ্য ক্রয়ের জন্য ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর টেন্ডার আহ্বান করে রংপুর সিটি কর্পোরেশন। ৮টি গ্রুপে ৪৮ কোটি ৮৪ লাখ টাকার এই কাজ পেতে ১০টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমা দেন। কিন্তু মেয়রের পছন্দের এডেক্স করপোরেশন লিমিটেড ও মেসার্স খাইরুল কবীর রানা ৮টি গ্রুপেই হন সর্বনিম্ন দরদাতা। সিটি কর্পোরেশনের অফিসিয়াল স্টিমেটের সঙ্গে হুবাহু মিলে যায় এই দুই প্রতিষ্ঠানের দর। পরে এডেক্স কর্পোরেশন লিমিটেডই পায় ৮টি গ্রুপের সবগুলো কাজ। কার্যাদেশ নিয়ে এরই মধ্যে এডেক্স কাজ শুরু করলেও এই শাখার বর্তমান ইনচার্জ সাজ্জাদ হোসেন কিছুই জানেন না। তিনি বলেন, টেন্ডার প্রক্রিয়ার সময় ইলেক্ট্রিক্যাল শাখার ইনচার্জ ছিলেন রফিকুল ইসলাম নামে একজন উপসহকারী প্রকৌশলী। টেন্ডারের নমুনা সুনির্দিষ্টভাবে ইউরোপ, জার্মান ও হল্যান্ডের ৩৬ ওয়ার্টের বাল্বের উলেখ থাকলেও সিটি কর্পোরেশনের তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলী ও সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের পিডি এমদাদ হোসেন অভিযোগ করে বলেন, তার নিষেধ উপেক্ষা করে টেন্ডারের শর্তে বিকল্প হিসাবে চায়নার এলইডিভান্স ৬০ ওয়ার্টের লাইটের কথা উলেখ করেন মেয়র। যা কোন ভাবেই আাইনসিদ্ধ নয়। এমদাদ হোসেন বলেন, লিখিতভাবেই তিনি মেয়রের এই সিদ্ধান্তের বিপক্ষে মতামত দিয়েছেন। তিনি বলেন, মেয়রের বিরোধীতা করার সুযোগ নেই। কিন্তু টেন্ডারের নমুনায় উলেখিত ইউরোপ, জার্মান ও হল্যান্ডের ৩৬ ওয়ার্টের বাল্বই ব্যবহার করা হবে। পুরো ঘটনায় মেয়রের কথিত শ্যালক ভাই ও স্ত্রী জড়িত উলেখ করে দরপত্রে অংশ নেয়া এক ঠিকাদার দূর্নীতিদমন কমিশনে অভিযোগ দায়ের করেছেন। কিন্তু সিটি কর্পোরেশনে পরিবারের কারও জড়িত থাকার অভিযোগ জোর গলায় অস্বীকার করেছেন মেয়র।
টেন্ডার প্রক্রিয়াতেই ঠিকাদারকে কমপক্ষে ২০ কোটি টাকা লাভের সুযোগ করে দেয়া হয়েছে, অভিযোগ করেছেন টেন্ডারে অংশগ্রহণকারী অপর একজন ঠিকাদার।
প্রাইভেট ডিটেকটিভ/২৬ আগষ্ট ২০২০/ইকবাল