মোহাম্মদ ইকবাল হাসান সরকারঃ
করোনা পরিস্থিতিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকদের থাকা-খাওয়ার ব্যয় নিয়ে যে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে- তা তদন্ত করে খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নান।সচিব বলেন, অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে সেখানে যদি কোনো ধরনের অনিয়ম হয়ে থাকে তাহলে তদন্তে তা বেরিয়ে আসবে।গতকাল ২ জুলাই ২০২০ ইং তারিখ বৃহস্পতিবার বিকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সচিব এ কথা বলেন।তিনি বলেন, করোনার এই পরিস্থিতিতে হাসপাতালে রোগীরা কেমন আছেন, চিকিৎসা সেবার সঙ্গে জড়িত চিকিৎসক-নার্সসহ অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারী ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা কেমন আছেন- তা দেখতে এখানে এসেছি। হাসপাতালের পরিচালকসহ চিকিৎসক ও নার্সদের সঙ্গে কথা বলেছি।ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গত দুই মাসে চিকিৎসকদের হোটেল ভাড়া, খাওয়া ও যাতায়াত বাবদ ২০ কোটি টাকার ব্যয় হওয়ার চাহিদাপত্রে অনিয়মের অভিযোগ ওঠে।এ নিয়ে সংসদের বাজেট অধিবেশনেও এই প্রশ্ন তোলে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনাও জাতীয় সংসদে বিষয়টি খতিয়ে দেখার কথা বলেন।এদিকে গত ১ জুলাই ২০২০ ইং তারিখ বুধবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক এক সংবাদ সম্মেলনে এই অনিয়মের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন।পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম নাসিরউদ্দিন জানান, হাসপাতালে জনপ্রতি তিন বেলা খাওয়ার খরচ ৫০০ টাকা। খাওয়ার খরচ হিসেবে ২০ কোটি টাকা বলে যা প্রচার করা হচ্ছে সেটি মিথ্যা, ভিত্তিহীন, বানোয়াট এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তিনি গত ২ মাসে হাসপাতালের করোনা রোগীদের চিকিৎসা প্রদান ও চিকিৎসকসহ অন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের থাকা-খাওয়ার হিসাব দেন।তিনি বলেন, ২২৭৬ জন স্বাস্থ্যকর্মীর এক মাসে হোটেলে থাকা-খাওয়া বাবদ খরচ হয়েছে ভ্যাট ছাড়া ১১ কোটি ৮৬ লাখ ৩১ হাজার ২৫০ টাকা। আর ১৫ শতাংশ ভ্যাটসহ খরচ পড়ে ১৩ কোটি ৬৪ লাখ ২৫ হাজার ৯৩৭ টাকা।পরিচালক জানান, চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আনসার সদস্যদের দুই মাস হোটেলে থেকে থাকা-খাওয়া ও পরিবহন ব্যয় ২৬ কোটি টাকা হওয়ার কথা।এর বাইরে ২২৭৬ জনের যাতায়াতে এক মাসে খরচ হয় ৪৬ লাখ ৯৮ হাজার ৮৭০ টাকা।এর আগে এক মাসের খরচ হিসাব করে দুই মাসের জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছিল। তার পরিপ্রেক্ষিতে এই বরাদ্দ দেয়া হয়।
প্রাইভেট ডিটেকটিভ/৩জুলাই ২০২০ /ইকবাল