গত শনি, রবি এবং সোমবারের টানাবৃষ্টিপাতের প্রভাবে বালাগঞ্জ উপজেলার পূর্ব গৌরীপুর ইউনিয়নের ৪টি গ্রামে কুশিয়ারা নদীর ভাঙ্গনে অন্তত ২০টি পরিবার গৃহহারা হয়েছে। আশ্রয়হীন এসব পরিবারের অর্ধশতাধিক লোকজন মারাত্মক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছেন।
বিশেষ করে নারী, শিশু এবং বৃদ্ধরা দুভোর্গের মধ্যে পড়েছেন। অসহায় এসব লোকজন জরুরী সহায়তার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে আলাপকালে বালাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রদীপ সিংহ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন।
বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) সরেজমিন পরিদর্শন এবং স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েক দিনের বৃষ্টির প্রভাবে নদী তীরবর্তী পূর্ব গৌরীপুর ইউনিয়নের স্থানীয় কায়েস্তঘাট (মাঝপাড়া), হাড়িয়ার গাও এবং সাদেকপুর গ্রামে এসব নদীভাঙ্গনের ঘটনা ঘটেছে। এতে সাদেকপুর গ্রামের মনতাজ উল্লাহ, মতসির আলী, হারুন মিয়া, সমছু মিয়া, লিয়াকত মিয়া, হাড়িয়ারগাঁও গ্রামের জিতু মিয়া, সমির আলী, সিরাজ মিয়া, সফিক মিয়া, বিলাল আহমদ এবং কায়েস্তঘাট (মাঝপাড়া) গ্রামের মো. আলমগীর, তাজিরুন বেগম, মেহেরুন নেছা, আহমদ আলী, আম্মাছ আলী, সেলিম মিয়া, আলমিছ মিয়া, আব্দুল কাইয়ুম প্রমুখ গৃহহারা হয়েছেন। পাশাপাশি এসব গ্রামের কমপক্ষে আরও ২০/৩০টি পরিবার নদীভাঙ্গনের হুমকীর মধ্যে রয়েছে। বিশেষ করে কায়েস্তঘাট (মাঝপাড়া) গ্রামের রাধিকা রঞ্জন দাস, লিটন মিয়া, ফারুক মিয়া, এলাইছ মিয়া, মকদ্দছ আলী, লুৎফুর রহমান, জমসেদ আলী, লুৎফুর মিয়াসহ স্থানীয় অন্যরাও নদীভাঙ্গনের হুমকীর মধ্যে রয়েছেন।
গত কয়েক দিন আগে ফাটল সৃষ্টি হলেও সোমবার রাত এবং মঙ্গলবার ভোরের দিকে অধিকাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে। আলাপকালে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা জরুরী ভিত্তিতে সরকারি সহায়তা কামনা করেছেন।
সরেজমিন পরিদর্শনকালে ঘটনাস্থলে উপস্থিত কায়েস্তঘাট গ্রামের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক রাধিকা রঞ্জন দাস, বালাগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ এম. মুজিবুর রহমান, সমাজকর্মী মাহবুব তালুকদার, সাজুল মিয়া, মতিউর রহমান, ইসলাম উদ্দিন প্রমুখ এসব অসহায় পরিবারের সহায়তার ব্যাপারে সরকারি, বেসরকারি সহায়তা কামনা করেছেন। এ বিষয়ে বালাগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম. মুজিবুর রহমান গৃহহারাদের জন্য ১০শতক ভূমি প্রদানের প্রতিশ্র“তি ব্যক্ত করেন। একইভাবে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক রাধিকা রঞ্জন দাস গৃহহারাদের জন্য ভূমি প্রদানের প্রতিশ্র“তি ব্যক্ত করেছেন।
আলাপকালে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান হিমাংশু রঞ্জন দাস গত দু’দিনে নদীভাঙ্গনের কবলে পড়ে পূর্ব গৌরীপুর ইউনিয়নের উল্লেখিত ৪টি গ্রামের অন্তত ২০টি পরিবার গৃহহারা হয়েছে বলে জানিয়েছেন।
বালাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রদীপ সিংহ আলাপকালে নদীভাঙ্গনের ঘটনার বিষয়ে সত্যতা স্বীকার করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিমাংশু রঞ্জন দাসকে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রস্তুতের জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে আলাপকালে বালাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আবদাল মিয়া নদীভাঙ্গনের শিকার পরিবারগুলোকে সর্বাত্মক সহযোগিতার প্রতিশ্র“তি ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, এসব অসহায় পরিবারকে সহায়তার ব্যাপারে পরিষদের সকলের সাথে কথা বলে সিদ্বান্ত গ্রহণ করা হবে।