January 15, 2025, 10:43 pm

সংবাদ শিরোনাম
ভিসা জটিলতায় বেনাপোল বন্দরে পরিবহন ব্যাবসার ধ্বস তেজগাঁও থানা ছাত্রদলের শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচি সম্পন্ন শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি প্রজেক্টরে ভেসে উঠায় স্থানীয় জনতার প্রতিবাদ ঢাকায় দুই ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে জখম করলেন সন্ত্রাসীরা: বেনাপোলে ভারতীয় ভয়ঙ্কর ট্যাপেন্টাডোল জব্দ মধুপুর উপজেলা মেম্বার ফোরামের উদ্যোগে তিন শতাধিক কম্বল বিতরণ লামায়-আলীকদম অনুপ্রবেশকালে ৫৮ মিয়ানমার নাগরিকসহ ৫ দালাল আটক শিবচরে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের লিফলেট বিতরন মধুপুর উপজেলা মেম্বার ফোরামের উদ্যোগে তিন শতাধিক কম্বল বিতরণ সেনাবাহিনীর অভিযানে নবীগঞ্জ থেকে দুই মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার

যুদ্ধাহত পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধা হয়েও প্রাপ্য সম্মানটাও নেই.. মজমিল মিয়া

যুদ্ধাহত পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধা হয়েও প্রাপ্য সম্মানটাও নেই..  মজমিল মিয়া

মোঃ ফখরুল ইসলাম জগন্নাথপুর

সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়নে গন্ধর্ব্বপুর গ্রামের মরহুম আকরম উল্লাহ ছোট ছেলে যুদ্ধাহত পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধা মোঃ মজমিল মিয়া। তিনি মুক্তিযুদ্ধে ১৯৭১ সালে পহেলা সেপ্টেম্বর রানীগঞ্জ বাজারের গণহত্যার সময় পাকিস্থানী হানাদার বাহিনী কর্তৃক আক্রমনে ডান পা হারান।

সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, পহেলা সেপ্টেম্বর রানীগঞ্জ বাজাওে পাকিস্থানী বাহিনী গণহত্যা চালায়। সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে যান কয়েকজন, এঁেদরও পাক সেনারা হত্যার উদ্যেশে বেঁধে এনেছিল। কিন্তু এঁেদর বুকে বা পেটে গুলি না লেগে পায়ে লাগায়  তাঁরা বেঁচে যান। তাঁদের মধ্যে একজন হচ্ছেন মোঃ মজমিল মিয়া। তিনি আজও পঙ্গু হয়ে বেঁচে আছেন ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে। পাকবাহিনী রশি দিয়ে বাঁধা সারি সারি লোককে ব্রাশফায়ার করে হত্যা করে তাদের কুশিয়ারা নদীতে ফেলে দেয়। মোঃ মজমিল মিয়ার পায়ের গুলি লেগেছিলো। তাঁর পা কেটে বাদ দিতে হয়। সেই থেকে পঙ্গু মজমিল মিয়া ক্র্যাচে ভর করে করে ৪৬ টি বছর পেরিয়ে এসেছেন স্বাধীন বাংলাদেশে। কিন্তু তাঁর কপালে জুটেনি মুক্তিযুদ্ধের তকমা। আইনের মারপ্যাঁচে এই ধরনের কত আতœদান বিস্মৃতির অতলে হারিয়ে যাচ্ছে,স্বীকৃতির অভাবে আমাদের জানার বাইরে রয়ে গেছে। তিনি ৩ ছেলে ৫ মেয়ে নিয়ে শরিরে বিভিন্ন রোগ নিয়ে কষ্টে জীবন যাপন করছেন।

যুদ্ধাহত পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধা মোঃ মজমিল মিয়ার প্রতিনিধিকে জানান, ১৯৭১ পহেলা সেপ্টেম্বর পাক হানাদার বাহিনী একটি নৌকা রানীগঞ্জ বাজারে অবতরণ করে। পাক বাহিনীর স্থানীয় দুসরা নিরীহ ব্যবসায়ী ও গ্রামের লোকজনদের ধোকা দিয়ে এক জায়গায় জমায়েত করতে থাকে। একে একে প্রায় তিন শতাধিক লোক জড়ো করে। বাজারের গড়িতে ১৫ থেকে ২০ টি সাড়িতে ধার করায়। এক এক করে প্রত্যেক সারিতে ব্রাশ ফায়ার করে বাজারে রক্তের বন্যা বইয়ে দেয়। বাজারের সাদা গলিটি মুহুর্তে মধ্যে লাল হয়ে যায়। দোকান ঘড়ে পাক সেনারা অগ্নি সংযোগ করে এবং মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। ব্রাশ ফায়ার করার পর কিছু লাশ পাক সেনারা নদীতে বাসিয়ে দেয় এবং বাজারের গলিতে প্রায় ১২৬টি লাশ পরে থাকে। এদের মধ্যে মাত্র কয়েকজন লোক সৌভাগ্যক্রমে বেচে যান। তাদের মধ্যে আমি মজমিল মিয়া, গুলিবিদ্ধঅবস্থায় কুশিয়ারা নদীর জলে ভাসতে ভাসতে নিকটবর্তী বাগময়না গ্রামের নদীর চরে আটকে যাই। গ্রামের লোকজন লাশ ভেবে আমাকে ডাঙ্গায় তুলে নেয় তারপর দেখা গেল দেহে প্রাণ আছে। সাথে সাথে স্থানীয় ভাবে আমার চিকিংসার ব্যবস্থা করা হয়। অবস্থায় খারাপ থাকায় ১৯৭১ সালে কাজল হাওর নামে পরিচিত বর্তমান ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে মোটামুটি সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরে আসি। সে সময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনির প্রধান এম,এ জি ওসমানী সহ অনেক কমান্ডার সেখানে গিয়ে দেখা করে আসেন আমার সাথে আমি সহ সেখানে অনেক যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা চিকিৎসাদিন ছিলেন, আমার ডান পায়ে ও পায়ের উড়–তে গুলির আঘাত নিয়ে  সেই ক্ষত এখনো বয়ে বেড়াচ্ছি। নয় মাস যুদ্ধ শেষে দেশ স্বাধীন হলো অন্যদের মতো আমিও আশায় বুক বাঁধি। সেই সময় বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের  কাছ থেকে ৫০০ টাকার চেক পেয়েছি। রানীগঞ্জ শহিদ স্মৃতি সৌধে পঙ্গু লিষ্টে ২নং এ আমার নাম রয়েছে। মুক্তিযোদ্ধে পর আরও অনেক কাগজ রয়েছে। কিন্তু স্বাধীনতার ৪৬ বছর পরও সেই আশা যেন হতাশার পাহাড়। মুক্তিযোদ্ধের যুদ্ধাহত পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছি কিন্তু পায়নি সরকারি সুবিধা, কোনো ভাতা। বারবার ধরনা দিয়ে এখন ক্লান্ত আমি। রানীগঞ্জ বাজারে পরিবার নিয়ে কষ্টে দিন কাটাচ্ছি। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে জীবনবাজি রেখে আমাদের অনেকে যুদ্ধ করেছেন। গুলি যখন লেগেছে তখন মরেও যেতে পারতাম। কিন্তু আজ পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টে দিন কাটাচ্ছি। কেউ ফিরেও তাকায় না। প্রাপ্য সম্মানটাও নেই। আমি এসব কথা প্রধানমন্ত্রীকে বর্তমান সংবাদ পত্রের মাধ্যমে জানাতে চাই।

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর