ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ নির্বাচিত হলেন জান্নাতুল নাঈম অভ্রিল। সেই সঙ্গে জেসিয়া প্রথম রানার আপ ও সুমাইয়া দ্বিতীয় রানার আপ নির্বাচিত হয়েছেন।
শুক্রবার রাত ৮ টা ১০ মিনিটে পর্দা উন্মোচন হয় লাভেলো মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ ২০১৭ এর গ্র্যান্ড ফিনাল। রাজধানীর বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারের নবরাত্রি হলে এই আয়োজনের চুড়ান্ত প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
২৫ হাজার প্রতিযোগী থেকে সেরা ১০ জন লড়েছে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব লড়াইয়ে। যাদের মধ্যে বিজয়ী জান্নাতুল নাঈম যাবেন চীনে অনুষ্ঠিতব্য ৬৭তম বিশ্বসুন্দরী প্রতিযোগিতার মূল আসরে।
প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা শীর্ষ ১০ প্রতিযোগী ছিলেন- রুকাইয়া জাহান চমক, জান্নাতুল নাঈম অভ্রিল, জারা মিতু, সাদিয়া ইমান, তৌহিদা তাসনিম তিফা, মিফতাহুল জান্নাত, সঞ্চিতা রানী দত্ত, ফারহানা জামান তন্দ্রা, জান্নাতুল সুমাইয়া হিমি এবং জেসিকা ইসলাম।
ফাইনালের আয়োজনে অতিথি বিচারক হিসেবে ছিলেন জাদুশিল্পী জুয়েল আইচ, ফ্যাশন আইকন বিবি রাসেল, ফটোগ্রাফার চঞ্চল মাহমুদ, কর্পোরেট ব্যক্তিত্ব রুবাবা দৌলা, মাইক্রোসফট বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোনিয়া বশির কবির, অভিনেত্রী শম্পা রেজাসহ আরও অনেকে। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেছেন শিনা চৌহান।
অনুষ্ঠানে একসঙ্গে গান গেয়েছেন দুই ভাই হৃদয় খান ও প্রত্যয় খান। তাদের সঙ্গে ছিলেন আনিকা। শীর্ষ ১০ প্রতিযোগী ক্যাটওয়াকের পাশাপাশি জনপ্রিয় গানে ঠোঁট মিলিয়েছেন ও নেচেছেন। ছিল চিত্রনায়ক নিরবের পরিবেশনা। অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করেছে এনটিভি।
জান্নাতুল নাঈমের অারেকটি পরিচয় হলো সে একজন নারী বাইকার। বাইক চালানো তার অন্যতম শখ। নানা সময় তাকে নিয়ে ফিচার প্রকাশিত হয়েছে।
যেভাবে ‘লেডি বাইকার’ হলেন জান্নাতুল নাঈম
মাত্র ১৪ বছর বয়সেই বাইক চালানো শিখেছেন। এরপর আস্তে আস্তে মোটরবাইক চালানো তার শখে পরিণত হয়। এ যান ঘিরেই চলতে থাকে তার নানা কসরত। মোটরসাইকেল নিয়ে বিভিন্ন নৈপুণ্য দেখাতে পারদর্শী হয়ে ওঠেন। তার এই বাইকের নৈপুণ্য প্রদর্শনী, বাইক চালানোর ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে দিয়ে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে। আর আস্তে আস্তে সেলিব্রেটি বনে যান তিনি। ফেসবুক ফলোয়ারের সংখ্যা ছাড়ায় ৯০ হাজার।
অভ্রিল বলেন, ‘ছোট বেলা থেকে বাইকের প্রতি তার ঝোঁক ছিল প্রচণ্ড। তাই মামার কাছ থেকে বাইক চালানো শিখে নেন। এরপর সিসির ব্যাপারটা বোঝার পর হাই সিসির দিকে ঝুঁকে পড়েন। ভাইয়ের হোন্ডা সিবিআর ১৫০ সিসি চালাতে শুরু করেন।’
তিনি বলেন, ‘ইয়ামাহা ব্র্যান্ডের চিফ বিজনেসম্যান সুব্রত রঞ্জন দাস তাকে খুঁজে বের করে কোম্পানিতে কাজ করার প্রস্তাব দেন। ওই কর্মকর্তা তাকে বলেন, তাকে নারী বাইক রাইডারদের আইকন হিসেবে তারা কাজে লাগাতে চান। তার মাধ্যমেই হাইস্পিড বাইকের প্রতি নারীদের আগ্রহী করতে চান। প্রথমদিকে প্রস্তাবে রাজি না হলেও পরে নারীদের এগিয়ে নেয়ার চিন্তা থেকে তিনি ওই কোম্পানিতে কাজ করতে আগ্রহী হন।’
অভ্রিল নারীদের জীবনে গতি আনতে কাজ করতে চান। প্রতিবাদী হতে উদ্বুদ্ধ করতে চান। নিজ অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি বহু ছিনতাইকারীকে ধরেছি, ইভটিজারকে ধরেছি। আমি চাই- মেয়েরা সাহসী হোক, অধিকার সচেতন হোক, অন্যায়ের বিরুদ্ধে নিজেরাই প্রতিবাদ করুক।
তার সম্পর্কে বন্ধুদের মন্তব্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমার এই সাহসিকতার জন্য, প্রতিবাদী চরিত্রের জন্য এবং হাইস্পিডের মোটরবাইক চালানোই পারদর্শিতার জন্য তারা তাকে ‘মাফিয়া গার্ল’ হিসেবে ডাকে। তবে এই সম্বোধনে তিনি উৎসাহ পান।’