December 23, 2024, 9:54 am

সংবাদ শিরোনাম
গৌরনদী মডেল থানায় বরিশাল জেলার বিদায়ী পুলিশ সুপারকে বিদায়ী সংবর্ধনা জেলা তথ্য অফিসের উদ্যোগে গৌরনদীতে নারী সমাবেশ অনুষ্ঠিত পটুয়াখালীতে অসামাজিক কাজে জরিত থাকার অভিযোগে নারী সহ আটক-৩। টঙ্গি ইজতেমার মাঠে হামলার প্রতিবাদ খুনিদের বিচার ও কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবীতে হিলিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ জেলা তথ্য অফিসের উদ্যোগে গৌরনদীতে নারী সমাবেশ অনুষ্ঠিত পটুয়াখালীতে ধানক্ষেত থেকে শঙ্খিনী সাপ উদ্ধার দিনাজপুরে “গমের জাত উন্নয়ন ও খাদ্য নিরাপত্তায় স্পীড ব্রীডিং-এর ভুমিকা” শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত পুলিশ ও জনগণের মধ্যে সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়, পুলিশ ও জনগণ একে অন্যের পরিপূরক-রেজাউল করিম মল্লিক দলের পরিবর্তন হয়েছে চরিত্রের পরিবর্তন হয়নি শায়খে চরমোনাই মুফতি ফয়জুল করীম আপনারা শান্তিতে থাকুন আমরা চাই,আমাদেরকেও আপনারা শান্তিতে থাকতে দিন- ডা. শফিকুর রহমান

বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে বামদলগুলোর অর্ধদিবস হরতাল আজ, বিএনপির সমর্থন

বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে বামদলগুলোর অর্ধদিবস হরতাল আজ, বিএনপির সমর্থন

ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক

বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত সারা দেশে অর্ধদিবস হরতাল পালন করবে সিপিবি-বাসদ ও গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা, যাতে সমর্থন জানিয়েছে বিএনপি। গতকাল বুধবার রাজধানীর পুরানা পল্টনের মুক্তি ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে বাম মোর্চার সমন্বয়ক সাইফুল হক শান্তিপূণভাবে এ হরতাল পালনের আহ্বান জানান। বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, সরকার এমন এক সময়ে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছে, যখন চাল, পিঁয়াজসহ নিত্য ব্যবহার্য্য পণ্যের দাম নিয়ে মানুষ দিশেহারা। বিদ্যুতের এই দাম বৃদ্ধির কারণে শ্রমজীবী মেহনতি, স্বল্প আয়ের সাধারণ মানুষ এবং নিম্নবিত্ত মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয়, দুর্দশা, দুর্গতি আরও বেড়ে যাবে। হরতালের সমর্থনে প্রচারে ঢাকা, চট্টগ্রাম, জয়পুরহাট, খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পুলিশি বাধা এসেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। সাইফুল হক বলেন, এখনি জনগণের উপর বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির অত্যাচার-আঘাত প্রতিরোধ করতে না পারলে আগামি দিনগুলোতে জনগণের উপর আরও নতুন নতুন অত্যাচার নেমে আসবে। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) ইউনিট প্রতি বিদ্যুতের দাম গড়ে ৩৫ পয়সা বা ৫ দশমিক ৩ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত জানিয়েছে, যা কার্যকর হবে আগামি ডিসেম্বর থেকে। গত ২৩ নভেম্বর বিইআরসির ওই ঘোষণার পরপরই হরতালের কর্মসূচি ঘোষণা করে বাম দলগুলো। তাদের ভাষায়, বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ওই সিদ্ধান্ত গণবিরোধী। বিএনপি, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি ও নাগরিক ঐক্য বাম দলগুলোর এ কর্মসূচিতে সমর্থন দিয়েছে। সাইফুল হক সংবাদ সম্মেলনে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত সভা, সমাবেশ, গণসংযোগ, পদযাত্রা ও প্রচার মিছিলের মাধ্যমে হরতাল পালন করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত বাতিলের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার সমন্বয়ক বলেন, কয়েকটি রাজনৈতিক দল ছাড়াও ৩০ জন বুদ্ধিজীবী, ২০ জন আইনজীবী, ছাত্র-যুব-শ্রমিক-নারীসহ বিভিন্ন সংগঠন হরতালে সমর্থন জানিয়েছে। এছাড়া তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটিও এ হরতালে সমর্থন জানিয়েছে। সিপিবির সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম, বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতা হামিদুল হক সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। এদিকে, হরতাল সব সময় ‘জনসম্পৃক্ত’ কর্মসূচি নয়- এমন উপলব্ধির পরও বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে বাম দলগুলোর হরতালে ‘পূর্ণ সমর্থন’ দিয়েছে বিএনপি। কর্মসূচিতে বিএনপির সমর্থনের কথা জানিয়ে দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী গতকাল বুধবার এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে বলেন, আমরা মনে করি, জনস্বার্থে এই হরতাল অত্যন্ত যুক্তিসঙ্গত। আগামীকাল (আজ বৃহস্পতিবার) বাম দলগুলো যে হরতাল ডেকেছে, আমি বিএনপির পক্ষ থেকে বিএনপি সেই হরতালকে পূর্ণ সমর্থন জ্ঞাপন করছি। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) ইউনিট প্রতি বিদ্যুতের দাম গড়ে ৩৫ পয়সা বা ৫ দশমিক ৩ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত জানিয়েছে, যা কার্যকর হবে আগামি ডিসেম্বর থেকে। গত ২৩ নভেম্বর বিইআরসির ওই ঘোষণার পরপরই হরতালের কর্মসূচি ঘোষণা করে বাম দলগুলো। তাদের ভাষায়, বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ওই সিদ্ধান্ত গণবিরোধী। কিন্তু পরদিন এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে আমরা অবশ্যই কর্মসূচি দেব। আমাদের একটা ধারণা আছে হরতাল দেওয়া মানে জনগণের সম্পৃক্ততা, এটা সব সময় সঠিক নয়। জনগণের সম্পৃক্ততা নিয়েই আমরা আমাদের পক্ষে যেটা সম্ভব হবে সেই কর্মসূচি দেব। আমরা জনগণের সঙ্গে আছি। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জনকারী দল বিএনপি ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি থেকে টানা তিন মাস হরতাল-অবরোধ করে। ওই কর্মসূচিতে বাসে আগুন দেওয়া ও পেট্রল বোমা ছোড়ার ঘটনায় দেড়শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয় বলে সরকারের তথ্য। বাংলাদেশে এখন রাজনৈতিক কর্মসূচি হিসেবে হরতালের কার্যকারিতা আদৌ আছে কি না তা নিয়ে সে সময় প্রশ্ন তোলেন ক্ষমতাসীন দলের নেতারা। ওই তিন মাসের পর বিএনপি আর কখনো নিজেরা হরতালের কর্মসূচি দেয়নি। তবে বিভিন্ন ঘটনায় অন্য দলের হরতালে তারা সমর্থন দিয়েছে। বাম দলগুলোর ডাকা বৃহস্পতিবারের হরতালে বিকল্পধারা বাংলাদেশ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি, নাগরিক ঐক্যও সমর্থন জানিয়েছে। বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির কঠোর সমালোচনা করে রিজভী বলেন, এই সরকার গণবিরোধী সরকার, এই সরকার মানববিরোধী সরকার, এই সরকার মানবতাবিরোধী সরকার। যতদিন তারা সিংহাসন আটকে রাখবে, ততদিন জনগণ পিষ্ঠ হবে, দলিত হবে, নিষ্ঠুরভাবে তারা দমন করবে। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ‘মিথ্যা মামলায় প্রতি সাপ্তাহে হাজিরা দিতে বাধ্য করে হয়রানির প্রতিবাদে’ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে স্বাধীনতা ফোরামের উদ্যোগে এই মানববন্ধন হয়। রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা তার প্রতিহিংসা পূরণের জন্যই বেগম খালেদা জিয়াকে আইনের নামে, বিচারের নামে হয়রানি করছেন- এটা জনগণের কাছে স্পষ্ট। আমরা বলতে চাই, অনেক জুলুম করেছেন, অনেক মায়ের কোল খালি করেছেন, অনেক মায়ের সন্তানকে গুমের নামে লাল দেয়ালের মধ্যে আটকে রেখেছেন এদেশের প্রধানমন্ত্রী হয়ে। এসব বন্ধ করুন। সংগঠনের সভাপতি আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহর সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মজিবুর রহমান সারোয়ার, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিব, এ বি এম মোশাররফ হোসেন, আবদুস সালাম আজাদ, নিপুণ রায় চৌধুরী, জাতীয় দলের সভাপতি সৈয়দ এহসানুল হুদা মানববন্ধনে বক্তব্য দেন। এর আগে বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে বাম দলগুলোর বৃহস্পতিবারের হরতালে সমর্থন দেয় বিকল্প ধারা, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) ও নাগরিক্য ঐক্য। গত মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে দলগুলোর যৌথ সমাবেশ থেকে হরতালে সমর্থনের ঘোষণা দেওয়া হয়। তিন দলের পক্ষে জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব হরতালে সমর্থন ঘোষণা করে বলেন, ভবিষতে ওঁরা আমাদের কর্মসূচির প্রতি সমর্থন জানাবেন। এই মুহূর্তে একটা জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) বৃহস্পতিবার ইউনিট প্রতি বিদ্যুতের দাম গড়ে ৩৫ পয়সা বা ৫ দশমিক ৩ শতাংশ বাড়ানোর ঘোষণা দেয়। আট বছর আগে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর এ নিয়ে আটবার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হল। বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে ওই দিনই বৃহস্পতিবার আধাবেলা হরতালের ঘোষণা দেয় সিপিবি-বাসদ ও বাম মোর্চা। বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির সমালোচনা করে আ স ম রব বলেন, বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির মাধ্যমে সারা জাতির গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন শেখ হাসিনা। পহেলা ডিসেম্বরে যদি বিদ্যুতের দাম বাড়ানো কার্যকর হয়, তাহলে আপনার সরকারের মৃত্যু পরোয়ানা জারি হবে। আপনার সরকারের গদিতে আগুন ধরে যাবে। বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির কোনো যৌক্তিক কারণ নেই মন্তব্য করে বিকল্প ধারা বাংলাদেশের সভাপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, জনগণের অর্থ লুটপাটের কারণে এটা করা হয়েছে। কুইক রেন্টালে যেসব বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে তাদের সাহায্য করার জন্য, তাদের বেশি করে টাকা দেওয়ার জন্য এবং তাদের থেকে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে বর্তমান সরকারের নেতৃবৃন্দরা এই ব্যবস্থা করেছে। তারা ঘুষ খায়, এর অংশ খায়, সেই জন্য এই টাকা আমাদের দিতে হবে। সমাবেশে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, কুইক রেন্টালের সময় বাড়িয়ে দিয়ে অতিরিক্ত টাকা দিয়েছেন এবং আপনি সেখান থেকে কমিশন খেয়েছেন। লুটপাটের সরকার, ধান্দাবাজের সরকার, মিথ্যাবাদী ও প্রতারক সরকার জনগণকে মিথ্যা কথা বলে লুট করার ব্যবস্থা করেছে।

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর