এরাই হলেন ঢাকাই ছবির সেরা জুটি
রাজ্জাক-কবরী
ডিটেকটিভ বিনোদন ডেস্ক
এ জুটির শুরুটা হয়েছিল প্রয়াত নির্মাতা সুভাষ দত্তের হাত ধরে। রাজ্জাক ও কবরীকে জুটি করে সুভাষ দত্ত ১৯৬৮ সালে নির্মাণ করেন ‘আবির্ভাব’ চলচ্চিত্রটি। সেখান থেকেই জুটি হিসেবে এদের দর্শকরা দারুণভাবে গ্রহণ করে। এরপর এ জুটির ‘ময়নামতি’, ‘নীল আকাশের নিচে’, ‘দর্পচূর্ণ’, ‘দীপ নেভে নাই’, ‘অধিকার’, ‘রংবাজ’-এর মতো সিনেমাগুলোতে তাদের প্রেমের অনবদ্য উপস্থাপন দর্শকদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়।
শাবানা-আলমগীর
দেশীয় চলচ্চিত্রের জুটি প্রথার ইতিহাসে ‘আলমগীর-শাবানা’ সর্বাধিক ছবিতে অভিনয় করেছেন। তাদের অভিনীত ছবি ১২৬টি, যার বেশির ভাগই ব্যবসাসফল। এসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, ‘ভাত দে’, ‘সত্য মিথ্যা’, ‘অপেক্ষা’, ‘স্বামী-স্ত্রী’, ‘রাঙা ভাবি’, ‘ননদ ভাবী’, ‘নিষ্পাপ’, ‘সারেন্ডার’, ‘মরণের পরে’, ‘অচেনা’ প্রভৃতি। শাবানার অর্জিত ১১টি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের ৬টিই এসেছে আলমগীরের সঙ্গে অভিনীত সিনেমা থেকে।
ফারুক-ববিতা
ঢাকাই ছবির দর্শক এবং সমালোচক-উভয় মহলের প্রিয় ছিলেন ফারুক-ববিতা জুটি।
১৯৭৩ সালে ‘আবার তোরা মানুষ হ’ সিনেমার মাধ্যমে প্রথমবার একসঙ্গে অভিনয় করেন তারা। এরপর একে একে ‘আলোর মিছিল’, ‘লাঠিয়াল’, ‘নয়নমণি’, ‘সূর্য সংগ্রাম’, ‘প্রিয় বান্ধবী’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ ‘মিয়া ভাই’ এবং ‘পদ্মা মেঘনা যমুনা’ ইত্যাদি সিনেমায় অভিনয় করেন তারা।
বুলবুল আহমেদ-জয়শ্রী কবীর
মাত্র তিনটি সিনেমায় জুটি বেঁধে অভিনয় করেই ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই করে নিয়েছেন বুলবুল আহমেদ-জয়শ্রী কবীর জুটি। বাংলাদেশের অন্যতম মেধাবী নির্মাতা আলমগীর কবীর তার জীবদ্দশায় যে ক’টি সিনেমা তৈরি করেছিলেন, তার অধিকাংশেরই নায়ক ছিলেন বুলবুল আহমেদ। এর মধ্যে ‘সীমানা পেরিয়ে’, ‘রূপালি সৈকতে’ এবং ‘সূর্যকন্যা’য় তার সঙ্গে জুটি বাঁধেন আলমগীর কবীরের স্ত্রী জয়শ্রী কবীর। বুলবুল-জয়শ্রীর ‘সীমানা পেরিয়ে’কে বলা হয় বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ছবি।
ইলিয়াস কাঞ্চন-দিতি
আশি ও নব্বইয়ের দশকের অন্যতম জনপ্রিয় জুটি ছিলেন ইলিয়াস কাঞ্চন ও দিতি। ইলিয়াস কাঞ্চনের সঙ্গে জুটি বেঁধে ‘দয়ামায়া’, ‘আত্মবিশ্বাস’, ‘ভাইবন্ধু’, ‘বাঁচার লড়াই’, ‘আম্মা’, ‘অচল পয়সা’, ‘মায়ের অধিকার’, ‘প্রেমের প্রতিদান’, ‘চরম আঘাত’, ‘এই নিয়ে সংসার’, ‘ভাই কেন আসামী’, ‘আসামী গ্রেফতার’সহ প্রায় পঞ্চাশটি ছবিতে অভিনয় করেছেন দিতি।
শাবনাজ-নাঈম
১৯৯০ সালে প্রয়াত চলচ্চিত্র নির্মাতা এহতেশাম তার নতুন চলচ্চিত্র ‘চাঁদনী’র জন্য দু’জন নতুন মুখ খুঁজছিলেন। অবশেষে তাদের পেয়েও যান তিনি। সেই দু’জনই হলেন নাঈম আর শাবনাজ। প্রথম ছবিতেই জুটি হিসেবে ব্যাপক সাড়া ফেলেন তারা। এরপর একে একে অভিনয় করেন ‘লাভ’, ‘চোখে চোখে’, ‘দিল’, ‘টাকার অহংকার’, ‘ঘরে ঘরে যুদ্ধ’, ‘সোনিয়া’ ও ‘অনুতপ্ত’সহ আরো বেশ কয়েকটি ছবিতে। প্রতিটি ছবিই ব্যবসায়িক সফলতা পায়।
সালমান শাহ-শাবনূর
১৯৯৪ সালে ‘তুমি আমার’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে সালমান শাহর সঙ্গে জুটি বাঁধেন শাবনূর। প্রথম ছবিতেই ব্যাপক সফলতা পায় এ জুটি। যার ফলে পরিচালক-প্রযোজকরা একের পর এক ছবিতে নিতে থাকেন তাদের। সালমান শাহ তার স্বল্প আয়ুর জীবনে অভিনয় করেছিলেন ২৭টি ছবিতে। এর মধ্যে ১৪ টিতেই তার বিপরীতে অভিনয় করেছেন শাবনূর। সালমানের বিপরীতে অভিনয়ের মাধ্যমেই চিত্রজগতের অন্যতম তারকায় পরিণত হন তিনি। যে ক’টি সিনেমায় একসঙ্গে তারা ছিলেন, সেসবের মধ্যে ‘তোমাকে চাই’, ‘জীবন সংসার’, ‘স্বপ্নের ঠিকানা’, ‘আনন্দ অশ্রু’, ‘স্বপ্নের নায়ক’সহ প্রায় প্রত্যেকটিই এখনো দর্শকরা দারুণভাবে মনে রেখেছেন।
রিয়াজ-পূর্ণিমা
নব্বইয়ের দশকের শেষ দিকে প্রথম একসঙ্গে অভিনয় করলেও রিয়াজ-পূর্ণিমা জুটির প্রথম ও সবচেয়ে ব্যবসা সফল সিনেমা ‘মনের মাঝে তুমি’ মুক্তি পায় ২০০৩ সালে। এই সিনেমার পর থেকেই জুটি হিসেবে জনপ্রিয়তা পান রিয়াজ ও পূর্ণিমা। ‘হৃদয়ের কথা’, ‘আকাশ ছোঁয়া ভালোবাসা’ এবং ‘এক পৃথিবী প্রেম’-এর মতো সিনেমায় অভিনয় করেন তারা।
শাকিব খান-অপু বিশ্বাস
নব্বইয়ের দশকের শেষভাগ থেকেই চিত্র জগতে সক্রিয় থাকলেও শাকিব খান প্রথমবারের মতো বড় ধরনের সাফল্য পান ২০০৬ সালের সিনেমা ‘কোটি টাকার কাবিন’ দিয়ে। এফ আই মানিক নির্মিত এই সিনেমায় অভিষেক ঘটে অপু বিশ্বাসের। তার পর থেকেই জুটি বেঁধে তারা অভিনয় করেছেন ৮০টিরও বেশি সিনেমায়।