আতংকে ভারতে পালিয়ে গেছে সিলেটের ৭ সংখ্যালঘু পরিবারের সদস্যরা। ভিটে মাটি ছাড়া সংখ্যালঘু সাঁওতাল পরিবারের সদস্যরা তাদের বাপ দাদার পুরনো ভিটে ফিরে পেতে এবার সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।’
সিলেটের মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবে শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে এমন আকুতি তুলে ধরেছেন ভারতে পালিয়ে যাওয়া সংখ্যালঘু পরিবারের এদেশে থাকা তাদের পরিবারের রতীশ সাওতাল ও তাদের স্বজনরা।’
সংবাদ সম্মেলনে দিনমজুর রতীশ সাঁওতাল বলেন, তার স্ত্রী ও ২ কন্যা নিয়ে শ্রীমঙ্গলের বালিশিরা পাহাড় মৌজার রাধানাথ গ্রামে সরকারের নিয়ন্ত্রনাধিন অর্পিত সম্পত্তিতে বংশ পরস্পরায় শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছিলেন। গত ২৫ অক্টোবর দুপুরে একই এলাকার আব্দুল মতিন ও তার লোকজন বসতবাড়িতে হামলা চালিয়ে বসতবাড়ি দখল করে ভিটে ছাড়া করে।’
রতিশ সাঁতালের মেয়ে সুমী সাঁওতাল (১৭) বলেন ’মতিনের দল আমারে মারাপিট কইরা টানা হেচরাইয়া ঘর থেকে বাইর করছে। পায়ে মারছে হাঁটতে পারছি না’।
সুমী সাঁওতালের মা নিয়তি সাঁওতাল বলেন, গোসল করে আইয়া কাপড় পড়তে আছিলাম। তখন মেয়ে দুইটা ঘরে রান্না করতে আছিল। আমি কাপড় বদলানের সময় আইয়া হেরা আক্রমন করছে। তারা ৩০/৩৫ জন ছিল।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, একই গ্রামের রাম প্রসাদ কৈরী ,রাজরাম পাশী, সত্য গোয়ালা, সুদর্শন বাউড়ি, সিতারাম ভর, অযোদ্ধা রুদ্র পাল, দীন সাঁওতাল ।
সংবাদ সম্মেলনে রাম প্রসাদ কৈরী বলেন, ‘মতিন ৪/৫ দিন আগে আমাকে ঘর থেকে ধরে নিয়ে যায়। তখন তার সাথে ছিল সত্যবান বাউরি। ১০ হাজার টাকাও দেয় আমার হাতে। ঝামেলা দেখে জানের ভয়ে টাকা ফেরৎ দেই।’
রাজরাম পাশী বলেন, এরশাদ সরকার আমল থেকে আব্দুল মতিন আমাদের হিন্দুদের প্রতি বেশী অত্যাচার করেছে। একটি দখল করে বিক্রি করে আবার আরেকটি দখল করে। তার কারনে রাম প্রসাদসহ আরো অনেক পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেছে।’
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, ভুমিদানব মতিন মিয়ার আতংকে দেশ ছেড়ে ইতিমধ্যে ভারতে পালিয়েছে ৭ টি সংখ্যালঘু সাঁওতাল পরিবার। তাদের জমি জমা নিয়ে বিভিন্ন সময় সে মামলা হামলায় নিঃস্ব করেছে। এর মধ্যে ভূপেশ মুন্ডা, কৃষ্ণ মুন্ডা, রাম জনম ভর, জুগেশ মুন্ডা, সুভাষ ভর ও সনছড়া মুন্ডা ভারতে পালিয়ে গেছে। তারাও দেশে ফিরতে চায় এ জন্য তারা দ্রুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ চেয়েছেন। এছাড়া দুর্গা প্রসাদ কৈরী সুরমা চা বাগানে ও জয়রাম কৈরী ফুলছড়া বাগানে পালিয়ে যান।
জানতে চাইলে আনিত অভিযোগ প্রসঙ্গে আব্দুল মতিন বলেন, আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ সম্পুর্ণ বানোয়াট।’