বিল্লাল হুসাইন,ঝিকরগাছা (যশোর) প্রতিনিধিঃ
যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার মাটশিয়া গ্রামে এক শিশুকে জোরপূর্বক ধর্ষণ ও পরবর্তীতে গর্ভপাত ঘটনায় অবশেষে মামলা দায়ের করেছে ধর্ষিতার মাতা। ধর্ষক পলাতক থাকলেও তার পিতাকে আটক করেছে বাঁকড়া পুলিশ। ধর্ষিতার মাতা মামলায় উল্লেখ করেছেন, তার মেয়ে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেনীর ছাত্রী।সে গত ৪ মাস যাবৎ প্রায় অসুস্থতা বোধ করে। গত ২৬ শে এপ্রিল ২০২০ ইং তারিখ ঐ শিক্ষার্থী গুরুতরভাবে অসুস্থ হলে পরিবারের লোকজন চিকিৎসার জন্য পাশ্ববর্তী কলারোয়া বাজারের মুন্না ডিজিটাল ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে নিয়ে যায়। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক আল্ট্রাসোনোগ্রাফী করে জানায় ঐ শিক্ষার্থী ৪ মাসের অন্তঃস্বত্ত্বা। তখন মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে (মেয়ে) জানায়, গত (১৫-১১-২০১৯ ইং ) তারিখ দুপুরে বাড়িতে ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় তার আপন চাচাত চাচা মোঃ ফজলে আলী দফাদার (৫৫) এর ছেলে মোঃ জয়নাল আবেদীন। তার ঘরে প্রবেশ করে, ওড়না ও গামছা দিয়ে হাত-পা এবং মুখ বেঁধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।এবং কাউকে কিছু না বলার জন্য হুমকি প্রদান করে বলে কাউকে বললে স্কুলে যাওয়ার পথে ফাকা যায়গায় তাকে জবাই করে নদীতে না হয় মাটিতে পুতে ফেলবে,কে তাকে (মেয়েকে) খুজে পাবে না। ফলে ভয়ে ওই শিক্ষার্থী কাউকে কিছু বলেনি। পরে জয়নাল আবেদীনের পিতা-মাতা বিষয়টি জানতে পেরে, ওই শিক্ষার্থীকে গত ৩০ শে এপ্রিল ২০২০ ইং তারিখে কলারোয়া কোন এক ধাত্রীর মাধ্যমে গর্ভপাত ঘটায়।ফলে প্রচুর পরিমানে রক্তক্ষরণে শিক্ষার্থীর জীবন এখন সংকটাপন্ন। এ ঘটনা জানাজানি হলে স্থানীয়ভাবে শালিশী বৈঠক বসার কথা বলে ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে।(নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) অনুসন্ধানে অতি গোপনীয় তথ্যে বেরিয়ে আসে এলাকার লোকজন বলেন, মেয়ের বাবা গরীব মানুষ তাই স্থানীয় কিছু নেতারা মোটা অংকের টাকা খেয়ে বিষয়টা ধামা চাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে, এমন কি প্রাইভেট পড়ানো ও প্রেম ঘটিত ঘটনা বলে চালানোর জন্য মেয়ের বাবা মার উপর জোর চাপ সৃষ্টি করে, স্বাক্ষর করানোর জন্য কাগজ নিয়ে আসে,মেয়ের পক্ষকে চাপ প্রয়োগ করছে যে মিটমাট করে নাও,না হলে তোমরাই উল্টো কেচে পড়ে যাবা, ফেসে যাবা তোমরা মিটাই নাও । (একথা মেয়ের মা নিজেও বলেন) স্থনীয় জনগনের দাবী, এর পিছনে আর ও যেন ইন্ধন দাতা আছে।প্রশাসনের নিকট দাবি তাদেরকে অনুসন্ধানে বের করে আইনি আওতায় এনে শাস্থি দেওয়া হোক,যাহাতে এই রকম শিশু আর ধর্ষিত না হয়।ছোট্টো অবুজ শিশু মেয়েটা চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা তখন জয়নাল ও তার বাবা – মা মিলে মেয়েটাকে সু-কৌশলে, কেউ জানার আগে বিষয়টি ধামা চাপা দেওয়ার জন্য কলারোয়ায় নিয়ে কোন এক ধাতৃর নিকট থেকে (এম আর) গর্ভপাত করাই।জয়নালের নিকট বিয়ের প্রস্তাব দিলে মেয়েটাকে বিয়ে করতে অস্বীকার করে, এবং বাড়ি থেকে তার মামার সহযোগিতায় পালিয়ে যায় বলে আমজনতা জানান।নিজের ভাতিজি হওয়ার কারণে খুব কৌশলে মেয়েকে নিয়ে গর্ভপাত করাতে সক্ষম হয়। এই নরপিসাস নামের ধর্ষণ কারী ও তার সহযোগী বাবা – মা, গর্ভপাত করানোর ফলে মেয়েটা দীর্ঘদিন মৃত্যুর মুখোমুখি দাড়িয়ে লড়াই করে বেছে আছে।হয়তো যেকোনো সময় মারা যেতে পারতো মেয়েটা।প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করবো এই কুলাঙ্গারের যেন সঠিক বিচার হয়। সে যেন এই ঘটনায় আইনের ফাঁক দিয়ে বের হতে না পারে। যেন তাকে সঠিক শাস্থি হয়। তার জন্য স্থানীয় প্রশাসন সহ ইউ এন ও প্রয়োজনে উদ্বর্তন কর্মকর্তার দৃষ্টি আকর্ষন করব, ধর্ষণ কারী নামের শিক্ষিত পশুটা পলাতক আছে তাকে খুজে বের করুন। আপন ভাতিজিকে শিশু ধর্ষন করে গর্ভবতী করা,আবার ধর্ষন কারী মা- বাবার সহযোগীতায় চার মাসের শিশু (ভ্রুন) হত্যা করার মত জঘন্য পাপ কাজ ধর্ষন ও শিশু (ভ্রুন) হত্যা করার জন্য ধর্ষণ কারীর বাবা ও মাকেও আইনি আওতায় আনা হউক এটাই আম জনতার দাবি। বিভিন্ন ভিবে চেষ্টা করেও জয়নাল আবেদিনের ও তার বাবা মার সাথে যোগাযোগ করতে পারিনি এবং তার মামার সাথে কথা বললেও এই বিষয়ে কোন কথা বলতে রাজী হয়নি।অবশেষে ৮ ই জুন সোমবার ঝিকরগাছা থানায় ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধনী ২০০৩) এর ৯(১) তৎসহ ৩১৩ পেনাল কোড ১৮৬০ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেছে ধর্ষিতার মাতা।যার নং-৭, তারিখ-০৮-০৬-২০২০ ইং।মামলায় জয়নাল আবেদীন (৩০) কে প্রধান করে ৭ জনকে আসামী করা হয়েছে। অন্যান্য আসামীরা হলেন, জয়নালের পিতা ফজলে আলী দফাদার (৫০), মাতা শাহিদা বেগম (৪৫), তার বোন ময়না খাতুন (৩৫), ভগ্নিপতি দিগদানা গ্রামের আকবর আলী খাঁর ছেলে ইশা খাঁ (৩৮), এবং কলারোয়া উপজেলার রহিম বক্সস গাজীর ছেলে আকবর আলী গাজী (৪৮) ও আলতাপ আলী গাজী (৩৫)। এদিকে সোমবার সকালে অভিযোগের ভিত্তিতে বাঁকড়া পুলিশ অভিযান চালিয়ে ধর্ষক জয়নাল আবেদীনের পিতা ফজলে আলী দফাদারকে আটক করেছে । এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বাঁকড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এ এস আই মিজানুর রহমান জানান, ধর্ষকের পিতাকে আটক করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। ধর্ষিতাকে উদ্ধার করে ডাক্টারী পরীক্ষা ও জনানবন্দী নেয়া হয়েছে। বাকী আসামীদের আটকের চেষ্টা অব্যহত আছে।