মোঃ রবিন চৌধুরী,ঢাকা জেলা প্রতিনিধিঃ
রাজধানীর গুলশানে আলোচিত চলচ্চিত্র প্রযোজক ও শিল্পপতি আজিজ মোহাম্মদ
ভাইয়ের বাসায় অভিযান চালিয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। অভিযানে
বাড়িটিতে মদের গুদাম পেয়েছে বলে দাবি মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের। গতকাল ২৭ অক্টোবর ২০১৯ রবিবার বিকালে শুরু হওয়া অভিযান রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত চলে। সেখান থেকে পারভেজ আহমেদ ও নবীন নামে দুজনকে আটক করা হয়েছে।মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ঢাকা মেট্রোর অতিরিক্ত পরিচালক ফজলুর রহমান বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এই অভিযান চালানো হয়। বাসায় বিপুল পরিমাণ মদের সন্ধান পাওয়া যায়। পাশাপাশি ক্যাসিনোসামগ্রী ও গাঁজা পাওয়া গেছে। এছাড়া বাড়ির ছাদে একটি মিনি সিসা বার পান মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তারা। গুলশান ২-এর ৫৭ নম্বর ১১/এ পাশাপাশি দুটি ছয়তলা ভবনে এই অভিযান চালানো হয়। ওই দুটি বাড়ির মালিক আজিজ মোহাম্মদ ভাই ও তার স্বজনরা। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তারা বলছেন, আজিজ বিদেশে অবস্থান করছেন। বাসায় থাকেন তার ভাতিজা ওমর মোহাম্মদ। তবে কোনোভাবে অভিযানের খবর পেয়ে পালিয়ে যান তিনি।ফজলুর রহমান বলেন, ওই বাড়িটি একটি মিনি বারের মতো ছিল। কিন্তু মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের কোনো ধরনের অনুমতি ছিল না। বিপুল পরিমাণ মদ, সিসা, গাঁজাসহ ক্যাসিনোসামগ্রী রাখার অপরাধে মামলা দায়ের করা হবে।পাশাপাশি ভবন দুটিতে অভিযান চালায় মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। ভবন আলাদা হলেও একটি থেকে অন্যটিতে যাতায়াতের পথ ছিল। দুটি ভবনেই আজিজ মোহাম্মদের স্বজনরা থাকেন। মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, একটি ভবনের ছাদের এক কোণে ক্যাসিনোসামগ্রী ও সিসা বার এবং আরেক ভবনের চারতলার একটি কক্ষে বিপুল পরিমাণ মদ পাওয়া যায়।গত মাসে ক্যাসিনো বন্ধে ঢাকার ক্রীড়া ক্লাবগুলোতে র্যাবের অভিযানের পর এ ধরনের আরও অভিযান চালিয়ে আসছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এরপর অভিযানে নেমেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর।অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজের মালিক আজিজ মোহাম্মদ ভাই চলচ্চিত্র প্রযোজক হিসেবেই বেশি পরিচিত। চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী ও সালমান শাহ হত্যাকা-ে জড়িত হিসেবে তার নাম এসেছিল।অলিম্পিকের পাশাপাশি আমবী ফার্মাসিউটিক্যালসের চেয়ারম্যান আজিজ মোহাম্মদ ভাই; তার স্ত্রী নওরীন একই কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক। শেয়ার কেলেঙ্কারির এক মামলায় গত বছর আজিজকে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা জারি করেছিলেন পুঁজিবাজারবিষয়ক ট্রাইব্যুনাল। তার আগ থেকেই তিনি বিদেশে অবস্থান করছেন।গতকালের অভিযানে আটক নবীন জানান, গত সাত-আট বছর ধরে তিনি এখানে কাজ করলেও কখনো আজিজ মোহাম্মদকে দেখেননি। একটি ভবনের চারতলার ফ্ল্যাট ব্যবহার করেন আজিজের স্ত্রী। ওই ভবনের ছাদেই সীসা বার ও ক্যাসিনো সামগ্রী পাওয়া যায় বলে জানান মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। ভবনটির তিনতলায় থাকেন ওমর মোহাম্মদ ভাই, তার বাবা প্রয়াত রাজা মোহাম্মদ ভাই হলেন আজিজের সহোদর। ওমরের ফ্ল্যাটেও কয়েকটি মদের বোতল পাওয়া যায়। পারভেজ নামে আটক এক ব্যক্তি জানান, যে কক্ষে মদ পাওয়া গেছে, তাতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ছিল।অভিযান চলাকালে একটি ফ্ল্যাট থেকে আজিজ মোহাম্মদের বোন সখিনা মীর আলী বের হয়ে আসেন। তিনি পাঁচতলায় বসবাস করেন জানিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, এই ফ্ল্যাটে (যে ফ্ল্যাটে মদের বোতল পাওয়া যায়) কী আছে, না আছে, তা আমাদের জানা নেই। পাশের ভবনের ছাদের সিসা বার সম্পর্কেও কিছু জানা নেই বলে দাবি করেন তিনি।
প্রাইভেট ডিটেকটিভ/২৮ অক্টোবর ২০১৯/ইকবাল