আইনি প্রক্রিয়ায় না হলে আন্দোলনের মাধ্যমেই মুক্ত হবেন খালেদা: মওদুদ
ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মুক্তির জন্য কারো কাছে মাথা নত করবেন না। । গতকাল শুক্রাবর দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন মিলনায়তনে ‘প্রতিহিংসার শিকার দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া অসহায় বিচার ব্যবস্থা, গণতন্ত্রের মুক্তি আর কত দূর’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল এ সভার আয়োজন করে। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ বলেন, একটা বানোয়াট মামলায় খালেদা জিয়াকে সাজা দেওয়া হয়েছে। যে টাকার জন্য সাজা হয়েছে সেই দুই কোটি টাকা এখন আট কোটি টাকায় পরিণত হয়েছে। একটা টাকাও তিনি স্পর্শ করেননি। কোনো কাগজপত্রেই তার স্বাক্ষর নাই। এখন পর্যন্ত কোনো সাক্ষী সুস্পষ্ট করে বলতে পারেননি এ মামলার কোথায় খালেদা জিয়া জড়িত। তারপরেও সাজা হয়েছে, কারণ এটা একটা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার মামলা। খালেদা জিয়ার মুক্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ফৌজদারি আইনের মধ্যেই আছে নারী এবং অসুস্থ ব্যক্তিকে সরাসরি জামিন দিতে পারবে হাইকোর্ট। খালেদা জিয়ার প্রায় ৭৪ বছর বয়স এবং তিনি অত্যন্ত অসুস্থ। তার বিশেষায়িত চিকিৎসা প্রয়োজন। খালেদা জিয়ার জামিন তো সাত দিনের মধ্যে হওয়ার কথা। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত লোককেও জামিন দেওয়া হচ্ছে। যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত অনেক আসামিও হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছেন। কিন্তু খালেদা জিয়ার জামিন হয় না। কারণ সরকার চায় না খালেদা জিয়া মুক্তি হোক। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া অবশ্যই জেলখানা থেকে মুক্ত হবেন। তিনি যেদিন কারাগার থেকে মুক্ত হবেন, সেদিন বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরায় মুক্ত হবে। জনতার স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন ছাড়া খালেদা জিয়ার মুক্তি সম্ভবপর নয়। খালেদা জিয়া কারাগারে থেকে কষ্ট করবেন তবুও তিনি এ সরকারের সঙ্গে আপোশ করবেন না। তাই আপনাদের সবাইকে আন্দোলনের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। চলমান দুর্নীতি এবং মাদকবিরোধী অভিযানের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে মওদুদ বলেন, আপনারা ২০০৯ সাল থেকে ক্ষমতায় রয়েছেন। এতদিন কেন আপনারা দুর্নীতিবিরোধী অভিযান শুরু করেননি। তারপরেও শুরু করেছেন বলে আপনাকে (প্রধানমন্ত্রী) ধন্যবাদ। প্রধানমন্ত্রী আপনি বলেছেন দুর্নীতি বিরোধী অভিযান চালিয়ে যাবেন। আমরা আপনার কাছে দাবি করছি, আপনার সাবেক ও বর্তমান এমপি, সাবেক ও বর্তমান মন্ত্রীদের অতীতের এবং বর্তমান সম্পদের হিসেব জনতার সামনে উপস্থাপন করেন। তাহলেই বুঝতে পারবো আপনি সত্যিকার অর্থেই দুর্নীতিবিরোধী অভিযান পরিচালনা করতে চান। বর্তমান দুর্নীতির জন্য এ সরকার দায়ী অভিযোগ করে ব্যারিস্টার মওদুদ আরও বলেন, দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে শুধু জি কে শামীম, খালিদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে ধরলেই হবে না, এর সঙ্গে জড়িত প্রশাসন মন্ত্রী-এমপিসহ সবাইকে গ্রেফতার করতে হবে। আইনের আওতায় আনতে হবে। আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মেজর জেনারেল (অব) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম বীরপ্রতীক, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রমুখ। সভায় সভাপতিত্ব করেন মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিম। সভা পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খান।