নির্দোষ হলে আদালতে তা প্রমাণ করে দিন: খালেদাকে হানিফ
ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
দুর্নীতির দুই মামলায় বিচারের মুখোমুখি বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া নিজেকে নির্দোষ দাবি করায় তার উদ্দেশে আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুব–উল আলম হানিফ বলেছেন, নির্দোষ হলে বারবার শুনানি না পিছিয়ে আদালতে তা প্রমাণ করে দিন। গতকাল শুক্রবার রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, আপনি যদি নিজেকে নির্দোষ ভাবেন, তা হলে দ্রুত হেয়ারিং করে শেষ করে দেন। তথ্য প্রমাণ দিয়ে প্রমাণ করে দেন যে আপনি অপরাধের সাথে সম্পৃক্ত নন। এতে আপনার দলের নেতা–কর্মীরা যেমন খুশি হবে, আমরাও হব। নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করলে, অন্তত দেশের ভাবমূর্তি ভালো থাকবে। আপনি একাধিকবারের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, আমরা চাই আপনি নির্দোষ হয়ে বেরিয়ে আসুন। কোনো প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির অভিযোগে আদালতে দোষী সাব্যস্ত হউক, এটা মোটেও গৌরবের বিষয় নয়। এটা দেশের জন্য কখনো সম্মান বয়ে আনে না। জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট ও জিয়া দাতব্য ট্রাস্টের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে করা দুই মামলায় আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থন করে দেওয়া বক্তব্যে নিজেকে নির্দোষ দাবির পাশাপাশি রাজনীতিক প্রতিহিংসায় তাকে মামলায় জড়ানো হয়েছে বলে দাবি করেন খালেদা জিয়া। ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে দায়ের করা এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তার ও জিয়া পরিবারের প্রতি বৈরী আচরণের অভিযোগ এনে তাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন বলেও মন্তব্য করেন বিএনপি নেত্রী। তিনি বলেন, আমার ও শহিদ জিয়াউর রহমানের পরিবারের ওপর শেখ হাসিনা যে বৈরী আচরণ করেছেন, তার জন্য আমি তাকে ক্ষমা করে দিয়েছি। প্রতিহিংসার আচরণ আমি করব না। এসব প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতা হানিফ বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন একাধিকবারের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, ওঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ওই মামলা আমরা দেইনি, আমাদের সরকারের সময়ও হয়নি। উনি বললেন, ‘আমি প্রতিহিংসার রাজনীতি করি না, এ কারণে শেখ হাসিনাকে আমি ক্ষমা করলাম’। কাকে কী কারণে… কী কথা বলছেন যে ক্ষমা করলেন? এই মামলা কি শেখ হাসিনা আপনাকে দিয়েছে? এই মামলা কি এই সরকার দিয়েছে? এই মামলা হয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়। এই মামলার দায়ভার তো আমরা নিতে পারি না। রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বাংলাদেশ ইউনাইটেড ইসলামি পার্টি আয়োজিত আলোচনা সভা ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম–সাধারণ সম্পাদক হানিফ। এতে খালেদার দুর্নীতির মামলার সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক মামলার তুলনা করার সমালোচনা করে হানিফ বলেন, এই অপরাধের মধ্যে আপনি আছেন বলেই আপনার মধ্যে শঙ্কা আছে। যে কারণেই আপনি বঙ্গবন্ধুর রাজনীতির সঙ্গে আপনাকে তুলনা করছেন। বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে স্বাধীন বাংলাদেশ গড়ার জন্য তাকে রাষ্ট্রদ্রোহীর মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে নিয়েছিল বার বার। সেই মামলার সাথে আপনার দুর্নীতির মামলার তুলনা করা অত্যন্ত দুঃখজনক। এটা কখনো মেনে নেয়ার মতো নয়। আমরা আশা করব আপনি ভুল চিন্তা বের হয়ে আসবেন। বাংলাদেশ ইউনাইটেড ইসলামি পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইসমাঈল হোসাইনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন।