’২১ সালের মধ্যে ই-গভর্ন্যান্সে শীর্ষ ১০০ দেশের তালিকায় থাকবে বাংলাদেশ: পলক
ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
২০২১ সালের মধ্যে জাতিসংঘের ই-গভর্ন্যান্স সূচকে সেরা ১০০ দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ঠাঁই করে নেবে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে আয়োজিত ‘ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য ই-গভর্নমেন্ট মাস্টার প্ল্যান’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন। পলক বলেন, আগামী ২০২১ সালের মধ্যে ই-গভর্ন্যান্স র্যাংকিংয়ে আমাদের দুই ডিজিটে আসতে হবে। আমরা এই অবস্থানে আসতে নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছি। এখন এটাই আমাদের লক্ষ্য। তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে ধারাবাহিক উন্নয়নের ফলে চলতি বছর জাতিসংঘের ই-গভর্নমেন্ট জরিপে ১৫০তম স্থান উত্তরণ ঘটে বাংলাদেশের অবস্থান হয়েছে ১১৫তম। জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক সম্পর্ক বিভাগ (ইউএনডেসা) পরিচালিত ই-সরকার ডেভেলপমেন্ট ইনডেক্স (ইজিডিআই) এই জরিপ পরিচালনা করেছে। এই জরিপ বলছে, বাংলাদেশ ০.৪৭৬৩ পয়েন্ট পেয়ে এবং গত দুই জরিপের চেয়ে ৩৫ ধাপ এগিয়ে ১৯৩টি দেশের মধ্যে ১১৫তম স্থানে অবস্থান করে নিয়েছে। ২০১৬ সালের জরিপে এই সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১২৪তম, ২০১৪ সালে ১৪৮তম ও ২০১২ সালে অবস্থান ছিল ১৫০তম। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের আওতাধীন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল ‘ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য ই-গভর্নমেন্ট মাস্টার প্লান প্রণয়ন’ প্রকল্পের খসড়া চূড়ান্ত করেছে। একাজে তাদের সহযোগিতা করছে কোরিয়া ইন্টারন্যাশনাল কো অপারেশন এজেন্সি (কোইকা)। গত বুধবার সকালে কম্পিউটার কাউন্সিল মিলনায়তনে এই চুক্তি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জুনাইদ আহমেদ পলক। প্রধান অতিথি ছিলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার অনুষ্ঠানে আসেননি। পলক কম্পিউটার কাউন্সিলের কর্তাব্যক্তিদের উদ্দেশ্যে বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সময় আমরা বলছি ক্রিয়েটিভ ইকোনমির কথা। তাছাড়া আপনারা যদি সিমলেস সার্ভিস দিতে চান, তাহলে তিনটি মুখ্য বিষয় মাথায় রেখে ই-গভার্নমেন্ট মাস্টার প্লান বাস্তবায়ন করতে হবে। এই তিনটি মুখ্য বিষয় হল, ভেরিফায়েবল ডিজিটাল আইডেন্টিটি, ইন্টার পেয়েবল প্লাটফর্ম, ন্যাশনাল এন্টারপ্রাইজ আর্কিটেকচার। পরে পলক এই তিনটি বিষয়ের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেন, এখন আমরা স্মার্ট কার্ড দিচ্ছি, নাগরিকদের সমস্ত তথ্য এখন একটি ডেটাবেইজে রাখছি। কারও পাসপোর্ট করতে গেলে সেই ডেটাবেইজ থেকে তথ্য যাচাই করতে পারে কর্তৃপক্ষ। নাগরিকদের জন্য যে সেবাগুলো আমরা দেব, তার মূল্য পরিশোধের সুযোগ থাকা উচিত অনলাইনে। নয়তো সব উদ্যোগ ভেস্তে যাবে। ইউনিয়ন পর্যায়ে ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন ও ইনফো সরকার প্রকল্পের আওতায় সরকার যখন ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দিচ্ছে, তখন উপকারভোগীদের ‘ডিজিটাল নেটিভস’, ‘অ্যাডাপ্টার’, আউটলেয়ারস’ এই তিনটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করে নিয়ে তাদের জন্য আলাদা করে উদ্যোগ নিতে নির্দেশ দেন পলক। ২০০০ সালের পরে যে তরুণরা জন্মেছে, তারা বেড়ে উঠেছে তারা হল ডিজিটাল নেটিভস। আমরা অ্যানালগ যুগে জন্মে এখন ইন্টারনেট ব্যবহার শিখেছি, আমরা অ্যাডাপ্টার। আর যারা ইন্টারনেটের ব্যবহার একেবারেই জানে না, তারা আউটলেয়ারস। এই তিনটি ক্যাটাগরির মানুষ সবাই যেন আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফলগুলো ভোগ করতে পারে, সেভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে ই-গভার্নমেন্ট মাস্টার প্লান। তরুণ প্রজন্মকে ডিজিটাল কার্যক্রমে প্রশিক্ষণ দিয়ে স্বাবলম্বী করতে সারা বাংলাদেশে ২৮টি আইটি পার্কে প্রশিক্ষণের বন্দোবস্ত করেছে সরকার। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব জুয়েনা আজিজের সভাপতিত্বে এই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন কোইকার কান্ট্রি ডিরেক্টর জো হেন জু ও কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক মনির হোসেন।