মিয়ানমারকে চাপে রাখতে ইইউ’র প্রতি আহ্বান রাষ্ট্রপতির
ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
রোহিঙ্গা সঙ্কটে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পদক্ষেপের প্রশংসা করে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ জাতিগত নিপীড়নের শিকার এই জনগোষ্ঠী যাতে নিজ দেশে ফেরত যেতে পারে সেজন্য মিয়ানমারকে অব্যাহত চাপে রাখার আহ্বান জানান। গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউর নতুন রাষ্ট্রদূত রেনসে টিরিংক বঙ্গভবনে পরিচয়পত্র দিতে গেলে আবদুল হামিদ এ কথা বলেন। পরে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, রাষ্ট্রপতি রোহিঙ্গা ইস্যুতে ইইউর পদক্ষেপের প্রশংসা করেন এবং আশা প্রকাশ করেন যে, বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত নিতে ইইউর চাপ অব্যাহত থাকবে। গত ২৫ অগাস্ট মিয়ানমারে সহিংসতা শুরুর পর সেনা অভিযানের মধ্যে ৫ লাখের বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম এই পর্যন্ত পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এই ঘটনার শুরু থেকে মিয়ানমারের ভূমিকার সমালোচনা করে আসা ইউরোপীয় কাউন্সিল রোহিঙ্গা নির্যাতনের তীব্র নিন্দা জানিয়ে সেনা অভিযান বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে। রোহিঙ্গা নির্যাতনের কারণে গত সোমবার মিয়ানমারের সেনা প্রধানসহ শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের সব ধরনের আমন্ত্রণ স্থগিত করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। প্রেস সচিব বলেন, ইইউর রাষ্ট্রদূত রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের মানবিক আচরণ এবং সার্বিক পদক্ষেপের প্রশংসা করেন। রাষ্ট্রপতি বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন অংশীদার। ইইউতে বাংলাদেশি রপ্তানি পণ্যের কোটা ও শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার বাংলাদেশের আর্থ–সামাজিক উন্নয়নে ইতিবাচক অবদান রাখছে। এ ছাড়া বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে ইইউর সহযোগিতা দেশের সার্বিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন ভবিষ্যতে এ সহায়তা আরও সম্প্রসারিত হবে। ইইউর রাষ্ট্রদূত বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য–বিনিয়োগ সম্পর্ক ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের আর্থ–সামাজিকিউন্নয়নে ইইউর সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। এর আগে জাপানের রাষ্ট্রদূত হিরোইয়াসু ইজুমি রাষ্ট্রপতির কাছে পরিচয়পত্র পেশ করেন। প্রেস সচিব বলেন, সাক্ষাতে রাষ্ট্রপতি বলেন, জাপান বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন অংশীদার। স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের আর্থ সামজিক উন্নয়নে জাপান অব্যাহত সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া জাইকা বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে ইতিবাচক অবদান রাখছে। রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগে জাপান অন্যতম। তিনি আশা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশে বিরাজমান বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশকে কাজে লাগিয়ে জাপানের বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে আরো বেশি বিনিয়োগ করবে। আবদুল হামিদ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে জাপানকে বিনিয়োগের আহ্বান জানান। রাষ্ট্রদূত বলেন, জাপানের অনেক বিনিয়োগকারী বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী। রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, বাংলাদেশ–জাপানের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে তিনি সর্বাত্মক প্রয়াস চালাবেন। এ ছাড়া দুই দেশের জনগণের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধিতেও কাজ করবেন। রাষ্ট্রদূত এ সময় রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের ভূমিকার প্রশংসা করেন।