মোঃ ইকবাল হাসান সরকারঃ
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার নথি বিচারিক আদালত থেকে রবিবার হাইকোর্টে আসবে বলে জানা গেছে। নথি প্রাপ্তি সাপেক্ষে ওইদিনই বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার জামিন বিষয়ে আদেশের জন্য দিন ধার্য রেখেছেন আদালত। এদিকে খালেদা জিয়ার জামিন পাওয়া না পাওয়া নিয়ে রাজনৈতিক মহল ছাড়াও সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা চলছে। তবে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা আশা প্রকাশ করে বলছেন, আপিলকারী একজন বয়ষ্কা নারী। তাকে যে সাজা দেওয়া হয়েছে তা লঘু প্রকৃতির। এছাড়া তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ। শারীরিক অসুস্থতা এবং সামাজিক অবস্থান বিবেচনায় নিয়ে আমরা জামিন চেয়েছি। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে আদালত খালেদা জিয়ার জামিন মঞ্জর করতে পারেন। দুদক কৌঁসুলি খুরশীদ আলম খান বলেন, বিষয়টি যেহেতু আদালতে বিচারাধীন সেহেতু আমি কোন মন্তব্য করব না।তবে জামিনের বিরোধিতা করে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছিলেন, অপরাধের গভীরতা বিবেচনায় নিয়ে আপিলকারীর জামিন মঞ্জুর করা ঠিক হবে না। এতিমের টাকা খোয়া যাওয়ার মামলায় খালেদা জিয়াকে জামিন দেওয়া হলে আপিলের শুনানি আর কখনই সম্ভব হবে না। এজন্য বিশেষ ব্যবস্থায় পেপারবুক করে দ্রুত মূল আপিলের শুনানি করা দরকার।নথি পাঠানো প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বেঞ্চ সহকারী মোকাররম হোসেন বলেন, সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। রবিবার সকাল দশটার মধ্যে নথি হাইকোর্টে পৌঁছানো হবে। গত ৮ মার্চ বৃহস্পতিবার খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা জামিন আবেদনের ওপর আদেশ দেওয়ার জন্য হাইকোর্টে আবেদন জানান। হাইকোর্ট রবিবার আদেশের জন্য দিন ধার্য রাখেন।গত ৮ ফ্রেরুয়ারী ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের এবং দশ বছরের সশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয় তারেক রহমানসহ অপর ৫ আসামিকে। এই রায়ের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার আপিল গত ২২ ফ্রেরুয়ারী শুনানির জন্য গ্রহণ করেন বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। একইসঙ্গে ১৫ দিনের মধ্যে বিচারিক আদালত থেকে নথি পাঠাতে বলা হয়। আপিল শুনানির জন্য গৃহীত হওয়ার পরদিনই খালেদা জিয়া হাইকোর্টে জামিন চান। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি শুনানি শেষে নথি প্রাপ্তি সাপেক্ষে জামিনের ওপর আদেশ দেওয়া হবে বলে জানায় আদালত।এ অবস্থায় গত ২৭ ফ্রেরুয়ারী রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, খালেদা জিয়ার কারাগারে যাওয়া বা জামিন হওয়া-না হওয়ার বিষয়ে সরকারের কোনো হাত নেই। আদালত যে সিদ্ধান্ত নেবে সেটাই হবে। পরদিন সংবাদ সম্মেলন করে খালেদা জিয়ার আইনজীবী সুপ্রিম কোর্ট বার সভাপতি জয়নুল আবেদীন বলেন, খালেদা জিয়াকে সহজেই মুক্ত হতে দেবে না, এটা সরকারের দুরভিসন্ধি। তার মামলা নিয়ে বিভিন্ন মহল বিভিন্ন রকম বক্তব্য উপস্থাপন করছেন যাতে করে দেশের মানুষ বিভ্রান্ত হয়। যাতে তিনি আদালত থেকে জামিনে বের হতে না পারেন। তিনি বলেন, মামলার নথি তলবের পর নিম্ন আদালত থেকে তা আসতে ২৪ ঘণ্টা সময়ই যথেষ্ট ছিল। কিন্তু সময়ক্ষেপণ করা হয়েছে। ওইদিনই পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, নথি কখন আসবে এটা সম্পূর্ণরূপে বিচারিক আদালতের বিষয়। এ ব্যাপারে আমাদের দোষ দিয়ে কোন লাভ নেই।
প্রাইভেট ডিটেকটিভ/১০মার্চ২০১৮/ইকবাল