নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
প্রতারনার করে অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগ অহরহ। তেমনি এক প্রতারনার শিকার সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর রানীগঞ্জের রৌয়াইল গ্রামের বাসিন্দা মোছাঃ হাছনা বেগম (৩৭)। হাছনা বেগমের স্বামী মুহিবুর রহমান গ্রীস প্রবাসী। বর্তমানে তিনি ৪৭/৪ বি প্রমুক্ত একতা বাগবাড়ী এলাকার বাসিন্দা।
অভিযুক্ত মোহাম্মদ কামাল আহমেদ (৫৫) সিলেট জেলার ওসমানী নগরের রাউত খাই গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল বারিকের ছেলে। তিনি যুক্তরাজ্যে ম্যানচেষ্টারে থাকেন।
জানা যায় হাছনা বেগমের স্বামী মুহিবুর রহমান ও অভিযুক্ত কামাল আহমদ দুজনেই প্রবাসী। দুজনের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল। এক পর্যায়ে কামাল আহমেদ হাছনা বেগম কে ধর্মীয় বোন হিসাবে সম্পর্কের ভীত মজবুত করেন। এবং তাকে কামাল আহমদের মালিকানাধীন বাগবাড়ী নরসিংটিলা, বাসা নং-৪৭/৪ বি প্রমুক্ত একতা বাসায় বিনা ভাড়ায় থাকতে দেন। এক সময় এই সম্পর্কের সুত্রে কামাল প্রতারনার ছক আঁকতে শুরু করে। মুহিবুর রহমান ও তার স্ত্রী হাছনা বেগম কে শহরে জায়গার মালিক হওয়ার স্বপ্ন দেখিয়ে হাতিয়ে নেয় প্রায় ৩৩ লাখ টাকা। দীর্ঘ দিন অপেক্ষায় থেকে জায়গা তো দুরে থাক টাকার ও কোন হদিস নাই। নানান টালবাহানা করতে থাকেন। একসময় তিনি বিভিন্ন লোক মারফতে হুমকি ধামকি দিতে থাকেন। গত ২৬ এপ্রিল রাতে তিনি বানোয়াট তথ্য উপস্থাপন করে অভিযোগ দায়ের করার পর হাসনা বেগমের বাসায় পুলিশ যায়। ঘটনাস্হলে গিয়ে লামাবাজার ফাঁড়ির এস আই মোহাম্মদ আলী যান। সেখানে উভয়ের পক্ষের সাথে আলাপ করলে অভিযোগের কোন সত্যতা না পেয়ে চলে আসেন। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে হাছনা বেগম বাগবাড়ী এলাকার পঞ্চায়েতের সহায়তা চান।
এক আগে ৩৩ লাখ টাকার বিষয় নিয়ে উভয়ের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। টাকা আত্মসাৎতের কথা জানাজানি হলে সালিশে রূপ নেয়।
মাস খানেক আগে কামাল আহমেদ দেশে আসলে বিষয়টি সমাধানের জন্য একটি সালিশ বৈঠক বসে এসময় কামালের পক্ষে সালিশ বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন জেলা কৃষকদলের যুগ্নআহবায়ক বকুল মিয়া ও যুবদল নেতা মালেক আহমেদ ও নরশিংটিলা এলাকার পঞ্চায়েতের কয়েক জন।
সালিশ বৈঠকে কামাল জায়গা বাবদ নেওয়া ৩৩ লাখ টাকা কথা স্বীকার করেন। এবং টাকার বিনিময়ে তিনি মেজর টিলা বাজার সংলগ্ন অথবা খিজির পুর মৌজার নাজিম গড় নয়তো বাগবাড়ী মৌজার অবস্থানরত বাসা ও জায়গা রেজিস্ট্রারী করার আশ্বাস দিয়ে কৌশলে সেখান থেকে চলে যান। বিচার চলাকালীন সময়ে পরবর্তী তে জানা যায় তিনি আবার যুক্তরাজ্যে চলে যান। সেখান থেকে তিনি নরশিংটিলা এলাকার পঞ্চায়েতের একজন মুরব্বিকে সালিশ না করার জন্য মুঠোফোনে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকি ধামকি প্রদান করেন।
এর আগে কামালের নামে প্রতারনার অভিযোগ এনে বেশ কয়েকটি অভিযোগ বিভিন্ন থানায় দায়ের করেন কয়েকজন ভুক্তভোগী।
এব্যাপারে মুহিবুর রহমানের স্ত্রী আছমা বেগম জানান গত ১২ এপ্রিল সন্ধ্যা আনুমানিক ৬ টার সময় কামালের স্ত্রী রুহেনা বেগম অজ্ঞাতনামা আরো ৪/৫ জন বিবাদী বাগবাড়ীতে আমার বাসায় অনাধিকার প্রবেশ পুর্বক রুমে প্রবেশ করিয়া আমি সহ আমার পরিবারের সদস্যদেরকে বিভিন্ন ধরণের প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করে এবং অদ্যাবধি বিবাদীদের হুমকি অব্যাহত আছে। আমি ও আমার পরিবারের লোকজন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি।
এমতাবস্থায় আমি প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করি। আমি নিজের নিরাপত্তার জন্য গত ২৭ এপ্রিল অনলাইন সাধারন ডায়েরির আবেদন করি। যার ট্র্যাকিং নং: 33USX6 পরে জানতে পারি এই আবেদন নাকি বাতিল করা হয়েছে।
এব্যাপারে আমার পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে।