December 22, 2024, 8:24 am

সংবাদ শিরোনাম
পুলিশ ও জনগণের মধ্যে সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়, পুলিশ ও জনগণ একে অন্যের পরিপূরক-রেজাউল করিম মল্লিক দলের পরিবর্তন হয়েছে চরিত্রের পরিবর্তন হয়নি শায়খে চরমোনাই মুফতি ফয়জুল করীম আপনারা শান্তিতে থাকুন আমরা চাই,আমাদেরকেও আপনারা শান্তিতে থাকতে দিন- ডা. শফিকুর রহমান যশোরে গাছের সাথে বাসের ধাক্কায় নিহত ১ পার্বতীপুরে ঘোড় দৌড় প্রতিযোগিতা ২০২৪ অনুষ্ঠিত বাংলাভিশন ডিজিটালের নির্বাহী সম্পাদকের বিরুদ্ধে নাবিলের অপপ্রচারের প্রতিবাদ হিলিতে বিজিবি দিবসে বিএসএফকে মিষ্টি উপহার বিজিবির কুড়িগ্রামের ফুলবাড়িতে আওয়ামী লীগের নেতা গ্রেপ্তার পটুয়াখালীতে বাড়ির সীমানা নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত-৬ গভীর রাতে আশ্রায়ন প্রকল্পের শীতার্তদের পাশে হাকিমপুরের ইউএনও অমিত রায়

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী -কোম্পানীগঞ্জে মাইকে ঘোষনা দিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষ,আহত শতাধিক

সিলেট ব্যুরোঃ

সিলেটের সীমান্তবর্তী জনপদ কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় মাইকে ঘোষনা দিয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে দু’পক্ষের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ হয়েছে। উপজেলার বর্ণি ও কাঁঠালবাড়ি গ্রামবাসী মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

দফায় দফায় সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে সিলেট-কোম্পানীগগঞ্জ সড়কের কাঁঠালবাড়ি এলাকা। এতে উভয় পক্ষের শতাধিক লোক আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

রোববার দুপুর ১২টার দিকে সংঘর্ষ শুরু হয়। প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী দফায় দফায় এ সংঘর্ষ থামাতে ব্যর্থ হয় পুলিশ। পরে সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দুই পক্ষ দ্বিতীয়বার এ সংঘর্ষে জড়াল। আলাদা সংঘর্ষে অন্তত শতাধিক লোক আহত হয়েছেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার বর্ণি গ্রামের হাজার হাজার লোকজন প্রতিপক্ষ কাঁঠালবাড়ি গ্রামে হামলা করতে লাঠিসোঁটা, দা, বল্লম হাতে নিয়ে সকালে রওয়ানা হয়। ১০ কিলোমিটারের বেশি পথ পায়ে হেঁটে এসে বেলা সাড়ে ১১টায় ঘটনাস্থলে পৌঁছায় তারা।

পথিমধ্যে সিলেট-কোম্পানীগঞ্জ-ভোলাগঞ্জ সড়কের হাইটেক পার্ক সংলগ্ন এলাকায় তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর, বর্ণি জামেয়া মাদরাসার বর্তমান ও সাবেক মুহতামিমসহ গণমান্যরা। কিন্তু তাদের বাধা উপেক্ষা করে সশস্ত্র লোকজন কাঁঠালবাড়ির দিকে রওয়ানা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, এলাকার লোকজনকে লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলায় অংশ নিতে মাইকে আহ্বান জানায় বর্ণি গ্রামের লোকেরা। সেই সঙ্গে লোকজনকে মারামারিতে উদ্বুদ্ধ করতে সিএনজি অটোরিকশায় মাইক বেঁধে স্লোগান দিতে দিতে সামনে এগিয়ে যেতে দেখা যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলেও তাদের কোনো অ্যাকশন দেখা যায়নি। অবস্থা বেগতিক দেখে স্থানীয়রা সেনাবাহিনীর সহযোগিতা চান।

অন্যদিকে, কাঁঠালবাড়ি গ্রামের লোকজনও প্রতিপক্ষকে মোকাবিলায় রণসাজে প্রস্তুত ছিলেন। বেলা ১২টার দিকে সংঘর্ষে জড়ান উভয় গ্রামের লোকজন। এসময় বৃষ্টির মতো চারদিকে থেকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, পরিস্থিতি এতোটাই বেগতিক হয়ে পড়ে যে, মধ্যস্থতাকারীরা বর্ণি এলাকার লোকজনকে নিবৃত্ত করতে ব্যর্থ হন। এরপর উভয় পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়ায়। খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে অ্যাকশনে যান এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এসময় লোকজনকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এরপরও বর্ণি গ্রামের লোকজন মাইকে ঘোষণা দিয়ে উসকানি ছড়িয়ে যাচ্ছিল।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত উভয় গ্রামের লোকজন দুইদিকে রেখে মাঝখানে সেনাবাহিনী ও পুলিশ অবস্থান করছিল।

ঘটনার সূত্রপাত সম্পর্কে জানা যায়, গত শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে মোবাইল চার্জ দেওয়াকে কেন্দ্র করে বর্ণি গ্রামের এক যুবককে কাঁঠালবাড়ি গ্রামের ২০-২৫ জন মিলে মারধর করে। এ ঘটনার জেরে উপজেলা সদর, বর্ণি ও কাঁঠালবাড়ি গ্রামের লোকজনের মধ্যে রাত ৯টা পর্যন্ত চার ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষ হয়। এতে অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়। এসময় বেশ কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর, যানবাহন ও মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হয় পুলিশ। পরে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

রাতে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলেও এই ঘটনার জের ধরে রোববার সকালে বর্ণি গ্রামের লোকজন সংঘবদ্ধ হয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে রণপ্রস্তুতি নিয়ে কাঁঠালবাড়ি গ্রামের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়।

সিলেটের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, সংঘাত এড়াতে কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশ, সালুটিকর তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ ও পুলিশ লাইন্স থেকে অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য সেখানে মোতায়েন করা হয়েছে। আমরা আশাবাদী পরিস্থিতি খুব দ্রুত শান্ত হবে।

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর