July 2, 2024, 10:16 am

সংবাদ শিরোনাম

চিলমারীতে আবারও শিক্ষক জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে ছাত্রী যৌন হয়রানির অভিযোগ

আবারও শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে শিক্ষক জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে।
কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থানাহাট পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের গণিত বিষয়ের সহকারী সিনিয়র শিক্ষক জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে আবারও এক শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে সপ্তম শ্রেণির ওই শিক্ষার্থীর অভিভাবক স্কুলের প্রধান শিক্ষক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাখ্যা চেয়ে ওই শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুলের প্রধান শিক্ষক তৈয়ব আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগেও, ২০১৯ সালে ওই সহকারী সিনিয়র শিক্ষক জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে ওই স্কুলের আরেক শিক্ষার্থী যৌন হয়রানির অভিযোগ তোলে। ওই ঘটনায় শিক্ষার্থীর বাবা বাদী হয়ে চিলমারী মডেল থানায় মামলা করেন। সেই মামলায় দুই দফায় প্রায় তিন মাস কারাভোগ করেন ওই শিক্ষক। পরে ওই শিক্ষার্থী অভিযোগ প্রত্যাহার করলে মামলা থেকে রেহাই পান জিয়া।
সপ্তম শ্রেণির ওই শিক্ষার্থী এবং তার মায়ের লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ওই শিক্ষার্থী তার স্কুলের সহকারী সিনিয়র শিক্ষক জিয়াউর রহমানের কাছে গণিত বিষয়ে প্রাইভেট পড়ে আসছিল। কোরবানি ঈদের পর গত ২২ জুন সকালে প্রাইভেট পড়তে গেলে ওই শিক্ষক জিয়াউর রহমান তাকে যৌন উসকানিমূলক কথা বলেন। একপর্যায়ে প্রাইভেট কক্ষের বাইরে টিউবওয়েলের পাড়ে ডেকে তাকে ‘কুপ্রস্তাব’ দেন এবং যৌন হয়রানির চেষ্টা করেন। শিক্ষকের এমন আচরণে ওই শিক্ষার্থী মানসিকভাবে অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে। সে দ্রুত প্রাইভেট পড়ার স্থান ত্যাগ করে বাড়িতে ফিরে আসে। এরপর বিষয়টি তার মাকে জানায়। পরে ওই শিক্ষার্থীর মা স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।
ওই শিক্ষার্থীর মা বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমি স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে বিচার দিয়েছি। তারা কী বিচার করেন সেটা জানার অপেক্ষায় আছি।’

স্কুল সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিক উদ্যোগ হিসেবে প্রধান শিক্ষক ওই শিক্ষার্থীর মৌখিক ও লিখিত জবানবন্দি নিয়েছেন। এ সময় স্কুলের জ্যেষ্ঠ শিক্ষকেরা উপস্থিত ছিলেন।

তবে শিক্ষার্থীর এমন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন অভিযুক্ত শিক্ষক জিয়াউর রহমান। এটি তার বিরুদ্ধে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেন তিনি।

ওই শিক্ষক আরো বলেন, ‘ওই শিক্ষার্থীর মামার সঙ্গে ফেসবুকে বাগবিতণ্ডার জেরে আমি থানায় অভিযোগ দিতে গিয়েছিলাম। বিষয়টি জানতে পেরে তিনি তার ভাগনিকে দিয়ে আমার বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে ষড়যন্ত্রমূলক এই অভিযোগ দায়ের করেছেন। এটা অমূলক অভিযোগ। আমি কোনও অপরাধ করিনি। ওই দিন প্রাইভেট কক্ষে উপস্থিত অন্য শিক্ষার্থীরা তার সাক্ষ্য দেবে।’

মামার সঙ্গে বিরোধে মা-মেয়ে কেন এমন অভিযোগ তুলবেন, এমন প্রশ্নে জিয়া বলেন, ‘ওই শিক্ষার্থীর মা তার ভাইয়ের কথামতো চলেন। তাদের সংসারে সবকিছু তার ভাই দেখাশোনা করেন।’

জিয়ার এমন দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে ওই শিক্ষার্থীর মা বলেন, এগুলো তার (জিয়ার) গা বাঁচানোর অজুহাত। শিক্ষকের আচরণ কেন এমন হবে তার বিরুদ্ধে আগেও এমন অভিযোগ উঠেছিল। কিন্তু তিনি শোধরাননি।’ ওই শিক্ষকের চারিত্রিক আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এই অভিভাবক।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক বলেন এই রকম শিক্ষকদের স্কুল থেকে বের করে দেয়ার দরকার তা না হলে স্কুলেন সুনাম ক্ষন্ন হবে।
থানাহাট পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো.তৈয়ব আলী বলেন, অভিভাবকের অভিযোগ পাওয়ার পর এ নিয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভা আহ্বান করা হয়েছিল। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওই শিক্ষককে শোকজ করা হয়েছে। তাকে ৫ কর্মদিবসের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।’

একই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বারবার একই অভিযোগ ওঠার প্রশ্নে প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘বিষয়টি বিব্রতকর। এটা স্কুল ও শিক্ষার্থীদের সম্মানের প্রশ্ন। এর আগের অভিযোগের পর জিয়া স্কুলের শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়াবেন না মর্মে অঙ্গীকারনামা দিয়েছিলেন। এ ধরনের অভিযোগ উঠবে না বলেও অঙ্গীকার করেছিলেন। কিন্তু তারপরও কেন এমন হলো সে ব্যাপারে তার কাছে জবাব চাওয়া হয়েছে। জবাব পাওয়ার পর বিধি অনুযায়ী তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর