ই-কমার্স খাতের ব্যবসায়ীদের জন্য চালু হলো ডিজিটাল বিজনেস আইডেন্টিটিফিকেশন (ডিবিআইডি) ব্যবস্থা। এখন থেকে ওয়েবসাইট, ফেসবুক পেজ, অ্যাপসসহ সব ধরনের অনলাইন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে এই ব্যবস্থায় নিবন্ধন নিতে হবে। রোববার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ডিজিটাল কমার্স ব্যবসার সার্বিক পর্যালোচনার জন্য আয়োজিত জরুরি আন্ত:মন্ত্রণালয় সভাশেষে এ ব্যবস্থার উদ্বোধন করেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। এসময় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলকসহ সংশ্লিষ্ট খাতের ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে ১১টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানকে নিবন্ধন দেওয়া হয়।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, কয়েকটি প্রতিষ্ঠান প্রতারণা করলেও এ খাতে হাজার হাজার প্রতিষ্ঠান আছে, যারা ভালো ব্যবসা করছে। এসব প্রতিষ্ঠানকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে যাতে তারা আরও ভালো করতে পারে এবং সেজন্য ডিবিআইডি চালু করা হলো। এই ব্যবস্থার মাধ্যমে সবাইকে একটা প্লাটফর্মে নিয়ে আসা হবে। তিনি বলেন, এই পদ্ধতি চালুর অর্থ হলো-একটা সুন্দর ব্যবস্থার মধ্যে দিয়ে আগামীতে ডিজিটাল ব্যবসা পরিচালিত হবে। ডিবিআইডি দেওয়া মানে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানকে একটা ডকুমেন্ট দেওয়া। এটা দেখিয়ে তারা কর সনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) ও ব্যাংক ঋণ কিভাবে পেতে পারে, আমরা সেই ব্যবস্থা করব।
তিনি আরও বলেন, আজ ডিবিআইডি দেওয়া শুরু হলো। এর মাধ্যমে ই-কমার্সে অনিয়ম, প্রতারণা কমে আসবে। তবে এ বিষয়ে গ্রাহকদের সচেতন হওয়ার আহবান জানান।বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, যেসব প্রতারক প্রতিষ্ঠানের টাকা আটকে আছে, তাদের গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেওয়া হবে। আইনি কিছু বিষয় রয়েছে, সেগুলোর সমাধানে আইনমন্ত্রীর সাথে আলোচনা করে টাকা ফেরত দেওয়া হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, ছোট ও নারী উদ্যোক্তাদের সহযোগিতা করবে এই প্লাটফর্ম। এ ধরনের উদ্যোক্তারা যাতে টিআইএন, ট্রেড লাইসেন্স, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা, ব্যাংক ঋণ পেতে সমস্যায় না পড়েন সেজন্য একটা আন্ত:মন্ত্রণারয় সভা করা হবে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক বলেন, ই-কমার্স ব্যবসার ক্ষেত্রে যে ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়েছে,
ডিবিআইডি চালুর মাধ্যমে সেই সংকট দূর হবে। এটি অনলাইন ব্যবসাকে শক্তিশালী ও বিশ্বাসযোগ্য ভিত্তি দেবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি জানান, ডিজিটাল ব্যবসায় অনিয়ম দূর করতে সরকারের চারটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ চলমান রয়েছে। ডিবিআইডি তার একটি কার্যকর প্রথম পদক্ষেপ। এরপর এ খাতের অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য সেন্ট্রাল কমপ্লেন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম সার্ভার চালু করা হবে। ই-কমার্স খাতে কী পরিমাণ লেনদেন হয়, কী পরিমাণ পণ্য কেনাবেচা করে, তা পর্যবেক্ষণের জন্য সেন্ট্রাল লিকুইডিটি ট্র্যাকিং প্রোগ্রাম সিএলটিপি চালু করা হবে।
তিনি বলেন, একটি ইন্টার অপারেটর ডিজিটাল প্লাটফর্ম তৈরি করা হবে, যা একটি পণ্য কোথায় যাচ্ছে তা ট্র্যাকিং করবে। এই চার কার্যকর পদক্ষেপে ই-কমার্স খাতকে বিশ্বাসযোগ্য জায়গায় নিয়ে যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, অতিরিক্ত সচিব ও কেন্দ্রিয় ডিজিটাল কমার্স সেলের প্রধান এ এইচ এম সফিকুজ্জামান, ইক্যাব সভাপতি শমী কায়সার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।