হত্যার প্রতিবাদ রুখতে আবরারের বাবা-মাকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল: আমান
ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
দেশে গণতন্ত্র অবরুদ্ধ, বাকস্বাধীনতা নেই। একের পর এক মেধাবীদের খুঁজে খুঁজে হত্যা করা হচ্ছে। হত্যার প্রতিবাদও করা যাবে না। বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার প্রতিবাদ যেনো কেউ না করতে পারে সে জন্য তার বাবা-মাকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সাবেক ডাকসু নেতাদের ব্যানারে ‘বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার প্রতিবাদে’ আয়োজিত মানববন্ধনে এসব কথা বলেন ডাকসুর সাবেক ভিপি ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান। বিএনপি নেতা আমানউল্লাহ আমান বলেন, সরকার জনগণের নিরাপত্তা দিতে পারছে না। ছাত্রের অধিকার দিতে পারছে না। এর কারণ এ সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়। জনগণের ভোটে নির্বাচিত হলে অবশ্যই তারা জনগণের প্রতি খেয়াল রাখতো। বিনা ভোটের সরকার, তাই জনগণের চিন্তা না করে পকেটভারি করছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমরা ফাহাদের বাড়িতে তার বাবা-মার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম। কুষ্টিয়া লালন শাহ সেতু পার হতে না হতেই শতশত পুলিশ-ডিবি এসে বললো সেখানে যাওয়া যাবে না। নিরাপত্তাজনিত সমস্যার কারণে যেতে দেওয়া হবে না, যেতে দেওয়া হলো না। এর পরদিন দেখলাম হানিফ সাহেব প্রধানমন্ত্রীর কাছে ফাহাদের বাবা-মাকে নিয়ে গেলেন। বুঝতে আর বাকি নেই আওয়ামী লীগ ফাহাদের বাবা-মাকে অবরুদ্ধ করে রেখেছিলো। তাদের উদ্দেশ্যে ছিলো কেউ যাতে তাদের সঙ্গে দেখা করতে না পারে, এ জঘন্যতম হত্যার প্রতিবাদ করতে যেনো না পারে। নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আবরার ফাহাদ হত্যার পেছনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম জড়িত। ছাত্রলীগ ঢাহাদকে ধরে নিয়ে যাওয়াযর সময় ভিসিকে বলা হলেও তিনি হলে আসেননি। কোনো পদক্ষেপও নেননি। ছাত্রটি মারা যাওয়ার পরও আসলেন না। জানাজাতেও এলেন না। অনেক পরে তিনি কুষ্টিয়াতে গেলেন কবর জিয়ারত করতে। তাই এই পাষণ্ড ভিসির অপসারণের দাবি জানাই। তিনি বলেন, দেশ আজ গভীর সংকটের মধ্যে আছে। স্বাধীনতার ৪৮ বছরে এমনটা হয়নি। আজ এমন অবৈধ সরকার ক্ষমতায় আছে, যারা জনগণের ভোটের অধিকার ছিনিযে নিয়েছে। এরা মানুষ তৈরি করতে জানে না। একটি মেধাবী ছাত্র রাজনীতি করতে ছাত্রলীগে গেলে সে খুনি হয়ে বের হয়। ছাত্রলীগ মানে ব্যালট বাক্স ছিনতাই করো। হত্যা করো। র্যাগিং করো, গণরুমে মেধাবীদের রেখে দাও। মান্না অভিযোগ করে বলেন, আওয়ামী লীগের এজেন্ডা হলো মানুষকে পিটিয়ে মারা। বিরোধীদের দমন করা। বিরোধী মত প্রকাশ করলে তাদের কথা বন্ধ করে দেওয়া। তারা শত কোটি টাকার ঋণের খেলাপি হয়েও নির্বাচনে দাঁড়াতে পারে। আর খালেদা জিয়া মাত্র দুই কোটি টাকা একটা একাউন্টে রেখেছেন। যা সুদ-আসল মিলে এখন আট কোটি টাকা। অথচ বিনা কারণে তাকে সাজা দেওয়া হলো। জেলে রাখা হচ্ছে অসুস্থতার মধ্যেও। এমনকি জামিনযোগ্য হলেও দেওয়া হচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, ফাহাদ হত্যায় জড়িত ১৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। একদিন শুনতে হবে ১৯ জনের ১৮ জন বেকসুর খালাস। আমরা বিশ্বজিৎ হত্যায় দেখেছি আসামিরা কীভাবে মাফ পেয়ে যায়। তারা এখন বলছে, ফাহাদ হত্যায় ন্যায় বিচার হবে। আমাদের ন্যায়ের প্রতীক ফাহাদ। এই প্রতীক নিয়ে আমরা অন্যায়ের প্রতিবাদ করবো যত বাধাই আসুক। ডাকসুর সাবেক ভিপি আ স ম আবদুর রবের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন ডাকসুর সাবেক ভিপি বিএনপি নেতা আমানুল্লা আমান, ডাকসুর সাবেক জিএস বিএনপি নেতা খায়রুল কবির খোকন, এজিএস নাজিম উদ্দিন আলমসহ ডাকসুর সাবেক নেতাকর্মীরা বক্তব্য রাখেন। মানববন্ধন আ স ম আবদুর রব বলেন, দেশের জন্য, দেশের জনগণের পক্ষে কথা বলার কারণে বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদকে হত্যা করা হয়েছে। দেশের স্বার্থ বিকিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে লেখার মাধ্যমে প্রতিবাদ করার কারণে সরকার পরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। ফাহাদকে নয়, তাকে হত্যার মাধ্যমে পুরো জাতিকে হত্যা করা হয়েছে। এ হত্যার দায় স্বীকার করে ছাত্রলীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা উচিত।