October 8, 2024, 12:19 am

সংবাদ শিরোনাম
মাতৃভূমির এক ইঞ্চি জমি ছাড় দেওয়া হবে না, পর্ব ৬ স্বাধীন সার্বভৌম মাতৃভূমি রক্ষা করতে হলে প্রতিটি ঘরে সেনাবাহিনী তৈরি করতে হবে(পর্ব-৫) আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজায় শান্তি শৃংখলা বজায় রাখার জন্য সকলকে সজাগ থাকার আহ্বান জামায়াত নেতা মাওলানা মমতাজ উদ্দিনের স্বাধীন সার্বভৌম মাতৃভূমিকে রক্ষা করতে হলে সশস্ত্র ট্রেনিং এর প্রয়োজন। বৈষম্য বিরোধী অভিভাবক ছাত্র শ্রমিক জনতা ঐক্য কমিটির (পর্ব- ৪) ভঙ্গুর রাষ্ট্রকে গড়তে হলে সংস্কার প্রয়োজন=== বৈষম্য বিরোধী অভিভাব ছাত্র শ্রমিক জনতা ঐক্য কেন্দ্রীয় কমিটির ব্যাংক কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত নাটোর পল্লী বিদ্যুত সমিতিতে অদ্ভুতুরে কাণ্ডকীর্তি ভোলা বোরহানউদ্দিনে প্রাথমিক সহকারি শিক্ষকগণের ১০ম গ্রেডের দাবিতে মানববন্ধন শারদীয় দুর্গাপূজায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করণের লক্ষে বগুড়ায় বিএনপির মতবিনিময় সভা! লক্ষ্মীপুরে কুমিরের আতঙ্কে এলাকাবাসী

সোনামসজিদ স্থলবন্দরে চাঁদাবাজি করে হারুন শত কোটি টাকার মালিক প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা

রুহুল আমীন খন্দকার, ব্যুরো প্রধান :

 টাকার অভাবে পড়াশোনা করতে না পারা খুপরিতে বসবাসকারী সেই  হারুন-অর-রশিদ এখন শত কোটি টাকার সম্পদের মালিক। মো. হারুন-অর-রশীদ ৫০ পিতা- মৃত মেঘু মন্ডল গ্রাম বালিয়াদিঘী পোস্ট সোনামসজিদ ইউনিয়ন শাহবাজপুর থানা শিবগঞ্জ জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ। স্থানীয় একাধিক সুত্রে জানা যায়, তার বাবাও ছিলেন স্বাধীনতাবিরোধী পাকিস্তানী রাজাকারদের একনিষ্ঠ সমর্থক। মৃত মেঘূ মন্ডল পারিবারিক জীবনে দুইটি বিবাহ বন্ধনের সূত্রে হারুন-অর-রশিদের দুই পক্ষ মিলে মোট ছয় ভাই। ভাইদের মধ্যে চতুর্থ সে। বাকি চার ভাই সবাই বিএনপি জামাতের রাজনীতির সাথে বর্তমানে সরাসরি জড়িত এবং হারুনের জামাই মো. নুর আমিন জামাত ইসলামের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের চাঁপাইনবাবগঞ্জ সরকারি কলেজ শাখার সাবেক শীর্ষ পর্যায়ের ক্যাডারদের মধ্য অন্যতম। তার ফেসবুক আইডি দেখলেই অনুধাবন করতে পারা যায় তার রাজনীতির ধারাটা কি।বিশেষ অনুসন্ধানে জানা যায়, মোঃ হারুন-অর-রশিদ একজন ধান্দাবাজ, অতিব ধূর্ত ও প্রতারক প্রকৃতির স্বভাবের। সোনামসজিদ স্থলবন্দরে সবাই তাকে মাফিয়া চাঁদাবাজ মিথ্যাবাদী এবং জালিয়াতি প্রতারক হিসাবে তাকে সবাই জানেন।নিম্নে তার জীবনের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস তুলে ধরা হলো, মো. হারুন-আর-রশিদ অর্থের অভাবে শত চেষ্টা করেও উচ্চমাধ্যমিক পাশ করতে পারেনি। পরপর দুইবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয় এবং বিভিন্নভাবে চেষ্টাও করে জাল সনদে পুলিশের চাকরি করার। লাইনে দাঁড়ালে শারীরিক পরীক্ষায় কৃতকার্য হয় কিন্তু এসএসসির আসল সনদ না থাকায় পড়তে হয় জালিয়াতির অপরাধে এবং অবশেষে তৎকালীন সময়ে ৬৫ হাজার টাকা দিয়ে সমস্যার সমাধান করেন। শেষ পর্যন্ত অষ্টম শ্রেণীর সনদ তার ভাগ্যে জোটে। পরে অর্থের সংকটে হতদরিদ্র হারুন-অর-রশিদ এদিক ওদিক ঘুরে কোন কুল-কিনারা না পেয়ে রাজনীতি শুরু করেন। জীবনের শুরু থেকেই পারিবারিক ঐতিহ্য ধারাবাহিকতায় ২-নং শাহবাজপুর ইউনিয়নের ১-নং ওয়ার্ডের দীর্ঘদিন বিএনপি’র সভাপতি থাকেন। সেই পারিবারিক সূত্রে বিএনপি’র সাবেক সংসদ সদস্য হুইপ অধ্যাপক শাজাহান মিয়ার একমাত্র আস্থাভাজন ব্যক্তি হয়ে ওঠেন।এর পরে সোনামসজিদ স্থলবন্দরে দাপটের সাথে বিএনপি’র রাজনীতি করতেন। ১৯৯৬ সালে বিএনপি’র সংসদ সদস্য অধ্যাপক শাহজাহান মিয়া সোনামসজিদ স্থলবন্দরে শ্রমিক সমন্বয় কমিটি গঠন করলে তাকে বিএনপি মনোনীত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেন এবং একটানা বিএনপি সরকারের ও শাজাহান এমপি থাকাকালীন সময় পর্যন্ত তার একান্ত হিসাবে শ্রমিক সমন্বয় কমিটির দায়িত্ব পালন করেন। এই সেই বিএনপি থেকে উঠে আসা হাইব্রিড হারুন-অর-রশিদ।বিগত ২০০১ সালে ব্রিগ্রেডিয়ার এনামুল হক সাহেব ভোটের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করলে তার নিজ ইউনিয়নে ১৯৯৭ সাল থেকে গ্রামে গ্রামে ঘুরে প্রচার প্রচারণা শুরু করলে বালিয়াদিঘী ও শিয়াল মারা এলাকায় ব্যাপক বাধা প্রদান করে এই হারুন।সেই সময়ে ২০০১ সালে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কেন্দ্র দখল তথা আওয়ামীলীগ ও শাহবাজপুর ইউনিয়ান, সোনা মসজিদে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের উপর নির্যাতন এবং ১-নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের অফিসে আগুন দেওয়া  ভাঙচুর’সহ বিএনপি’র রাজত্ব গড়ে তোলেন।ঠিক একইভাবে ২০০৮ সালে নির্বাচনে আবারো শীর্ষ চাঁদাবাজ সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে এই হারুন অর রশীদ তার ক্ষমতার পুনরাবৃত্তি ঘটান। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আবারো কেন্দ্র দখল ভোট’সহ সন্ত্রাসীদের দিয়ে শক্তিশালী ভূমিকা রাখেন তিনি। সেই সময় ২০০৮ সালে সারা বাংলাদেশে বিপুল পরিমাণ ভোটের ব্যাবধানে আওয়ামীলীগ সরকার জয় লাভ করেন এবং সরকার গঠন করতে সক্ষম হন। এমনকি শিবগঞ্জ উপজেলাতেও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আলহাজ্ব ব্রিগেডিয়ার এনামুল হক কিন্তু ঠিক দুই বছর পর এই হারুন-অর-রশিদ প্রকাশ্যে আওয়ামীলীগে যোগ না দিয়ে ব্রিগেডিয়ার এনামুল হক সাহেবের আপন ভাই মোহাম্মদ নাজমুল হক সাহেবের সঙ্গে অনৈতিক অর্থের বিনিময়ে দ্রুত সম্পর্ক গড়ে তোলেন বলে এলাকায় প্রবাদ ঝড় ওঠে। তার ফলে হারুনকে আবারো পূর্বের মত শ্রমিক সমন্বয় সভাপতি এবং একই সাথে সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচিত কমিটি ভেঙে আইন পরিপন্থী গঠনতন্ত্র কে তোয়াক্কা না করে নতুন কমিটির সাধারণ সম্পাদক করেন নাজমুল সাহেব। সেই নাজমুল সাহেব বর্তমানে শিবগঞ্জ উপজেলার আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি পদে যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার প্রচারণা চালান । হঠাৎ সেই সিদ্ধান্তের সোনামসজিদ স্থল বন্দর এলাকায় যুবলীগ ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুই গ্রামের সকল তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝে হতাশা ও ক্ষোভের জন্ম দেয় এবং প্রকৃত আওয়ামীলীগ দুই গ্রামের বিক্ষোভ মিছিল করেন৷ তবুও নাজমুল তার পক্ষে থাকার কারণে স্থানীয় নেতাকর্মীরা চরম  বিরোধিতা করেও কিছুই করতে পারেননি অবশেষে প্রকৃত আওয়ামীলীগ অভিমানে দূরে সরে যান। সেই সুযোগেই বিএনপি ও জামাতের শীর্ষ অন্যতম হাতেগোনা কয়েকজন ক্যাডার দিয়ে স্থলবন্দর একাধিক আধিপত্য বিস্তার করেন ব্রি: এর সহোদর মো. নাজমুল হক।বলাবাহুল্য যে মো. হারুন-অর-রশিদকে যখন প্রথমে ২০১০ সালে সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক করেন তখন তার নামে কোন লাইসেন্স পর্যন্ত ছিল না। পরবর্তীতে জালিয়াতি করে সিএনএফ এর লাইসেন্স আছে বলে মিথ্যা দাবি করেন। যে লাইসেন্সটির নাম মেসার্স এস নাহার এন্টারপ্রাইজ কিন্তু এ লাইসেন্স এর প্রোপাইটার দেখানো হয়েছে একজন মহিলাকে।এ বিষয়ে জানতে চাইলে কাস্টমস কমিশনার কার্যালয় রাজশাহী লাইসেন্স শাখা কর্তৃপক্ষ বলেন, এই নামে কোন সিএন্ডএফ এজেন্টের বৈধ কোন লাইসেন্স নেই ভুয়া লাইসেন্সের নাম ব্যবহার করে সি এন্ড এফ অ্যাসোসিয়েশন এর দীর্ঘদিন দায়িত্ব থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে সরকারের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন এবং অটল সম্পত্তির মালিক হয়েছেন। এভাবেই সোনামসজিদ ও রাজশাহীতে নামে-বেনামে দামি একাধিক প্লট-ফ্লাট, শত’বিঘা জমি ও দামি গাড়িসহ সোনামসজিদে ৭ তলা বিশিষ্ট ফাউন্ডেশন দিয়ে ৪ তলা বাড়ি তৈরি করেন। বাড়িটির ভিতরের সমস্ত কারুকার্য ও আসবাবপত্র অত্যান্ত দামি বিদেশি সরঞ্জামাদি দিয়ে সুসজ্জিত করেছেন। হঠাৎ ২০১৩ সালে বিএনপি জামাতের আওয়ামীলীগ সরকার পতন জ্বালাও-পোড়াও ভয়াবহ আন্দোলনে তিনি হতাশ হয়ে পড়েন এবং প্রকাশ্যে একাধিক বিএনপির ব্যক্তিদের সাথে বিএনপিতে পুনরায় চলে যাওয়ার প্রস্তাব দেন।এদিকে অর্থ পিপাসু (হাইব্রিড) আওয়ামীলীগে অনুপ্রবেশকারী মো. হারুন-আর-রশিদের এই বিপুল অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়ে সুষ্ঠ অনুসন্ধানে মাননীয় মাতা প্রধানমন্ত্রীসহ আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন শিবগঞ্জের প্রকৃত আওয়ামীলীগ পরিবারের সদস্যরা। এ ছাড়াও তার বিগত দিনে আওয়ামীলীগের উপরে নির্যাতনের দৃষ্টান্ত মুলুক বিচারের দাবিও জানান তারা।

প্রাইভেট ডিটেকটিভ/২১ জুলাই ২০২০/ইকবাল

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর