October 8, 2024, 5:51 pm

সংবাদ শিরোনাম
প্রশাসন সংস্থা ব্রিটিশ আইনের মাধ্যমে শাসন ব্যবস্থা চলতে পারে না-পর্ব ৭ মাতৃভূমির এক ইঞ্চি জমি ছাড় দেওয়া হবে না, পর্ব ৬ স্বাধীন সার্বভৌম মাতৃভূমি রক্ষা করতে হলে প্রতিটি ঘরে সেনাবাহিনী তৈরি করতে হবে(পর্ব-৫) আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজায় শান্তি শৃংখলা বজায় রাখার জন্য সকলকে সজাগ থাকার আহ্বান জামায়াত নেতা মাওলানা মমতাজ উদ্দিনের স্বাধীন সার্বভৌম মাতৃভূমিকে রক্ষা করতে হলে সশস্ত্র ট্রেনিং এর প্রয়োজন। বৈষম্য বিরোধী অভিভাবক ছাত্র শ্রমিক জনতা ঐক্য কমিটির (পর্ব- ৪) ভঙ্গুর রাষ্ট্রকে গড়তে হলে সংস্কার প্রয়োজন=== বৈষম্য বিরোধী অভিভাব ছাত্র শ্রমিক জনতা ঐক্য কেন্দ্রীয় কমিটির ব্যাংক কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত নাটোর পল্লী বিদ্যুত সমিতিতে অদ্ভুতুরে কাণ্ডকীর্তি ভোলা বোরহানউদ্দিনে প্রাথমিক সহকারি শিক্ষকগণের ১০ম গ্রেডের দাবিতে মানববন্ধন শারদীয় দুর্গাপূজায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করণের লক্ষে বগুড়ায় বিএনপির মতবিনিময় সভা!

পথের কাঁটা করোনা ভাইরাস

ডিটেকটিভ আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ

ছবি সংগৃহীত

করোনা ভাইরাস। বলা হচ্ছে এটা যতটা না ভয়ংকর, তার চেয়ে বেশি ছড়ানো হচ্ছে। চীনের অভিযোগ: যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশ সহায়তা না করে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। রুশ মিডিয়া ভাইরাস ছড়ানোর জন্য প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং গোয়েন্দা সংস্থাকে দায়ী করছে। তবে দোষারোপের খেলা যাই থাকুক না কেন এই ভাইরাস ক্রমেই বিপর্যয়কর হয়ে উঠছে তা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়। বিশেষত অর্থনীতির পথের কাঁটা এখন করোনা বা নভেল করোনা ভাইরাস (২০১৯-এনসিওভি)। উদাহরণস্বরূপ চীনে চুল রপ্তানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ভগবানপুর এলাকা। খুলনায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা কাঁকড়া ও কুঁচিয়া চীনে রপ্তানি করতে না পারায় প্রতিদিন ৪ কোটি টাকা লোকসান দিতে হচ্ছে। ২০০২-০৩ সালে চীনে উত্পত্তি হওয়া সার্স ভাইরাসে মারা গিয়েছিল ৭৭৪ জন ও আক্রান্ত হয়েছিল ৮ হাজার ৯৮ জন। কিন্তু চীনে এরই মধ্যে ৮ শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। চীন ও বাইরে ২৫টি দেশ ও অঞ্চলে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ৩৫ হাজার। মারা গেছে ৭০০। চীন সরকার ভাইরাসের উত্পত্তিস্থল উহানসহ কয়েকটি শহরে সবকিছু বন্ধ করে দিয়েছে।চীনা অর্থনীতি হুমকিতে! : ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে চীনের বেশ কয়েকটি শহর অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ চীনে আসা-যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। বিমানের ফ্লাইটও স্থগিত রেখেছে। চীনের কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক চিকিত্সার যন্ত্রপাতিসহ বিভিন্ন ব্যয়ের জন্য এরই মধ্যে প্রায় ১ হাজার ৩০০ কোটি ডলার বরাদ্দ করেছে। অর্থনীতিবিদরা জানিয়েছেন, এই অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে চীন ৬ হাজার কোটি ডলারের ক্ষতির মুখে পড়তে পারে। চীনা চান্দ্র নববর্ষের ছুটির সময় সংকট দেখা দেওয়ায় সংশ্লিষ্ট শিল্পগুলো বিশেষ করে বড়ো ধরনের বাণিজ্যিক ক্ষতির মুখে পড়েছে। চীনের জাতীয় কর্তৃপক্ষ নববর্ষের ছুটি আরো বাড়িয়েছে এবং কোনো কোনো প্রদেশে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এই ছুটির মেয়াদ আরো লম্বা করেছে। কিছু ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে কর্মচারীদের দেরি করে কাজে ফেরত আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আশঙ্কা যে উত্পাদনের কাজ এবং পণ্য বিক্রি বেশিদিন বন্ধ রাখলে বাজারে নগদ অর্থের প্রবাহে ঘাটতি দেখা দিতে পারে, বিশেষ করে অপেক্ষাকৃত ছোটোখাটো ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য। যেসব পণ্যনির্মাতা বিদেশে তাদের পণ্য বিক্রি করে তারা চীনের কাছ থেকে পণ্য কেনায় অনাগ্রহ দেখাতে পারে। স্ট্র্যাটেজি অ্যানালিটিক্স টি এফ ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটিস জানায়, অক্সফোর্ড ইকোনোমিক্স নামে একটি সংস্থা অনুমান করছে চলতি বছরের প্রথম চার মাসে চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার এক বছর আগের তুলনায় ৪ ভাগ কমবে। ভাইরাস সংক্রমণের আগে চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ছিল শূন্য দশমিক ৪ ভাগ কমবে।কতোটা ক্ষতি হবে বিশ্ব অর্থনীতির : ২০০৩ সালে সার্স ভাইরাসের সময় বিশ্ব জিডিপিতে চীনের অবদান ছিল ৪ ভাগ। বর্তমানে প্রায় ১৭ ভাগ। ফলে চীনে সংকট দেখা দিলে তা বিশ্ব অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাবও বেশি রাখবে। ক্যাপিটাল ইকোনোমিকসের মুখ্য অর্থনীতিবিদ নেইল শিয়ারিং বলেন, এটা অর্থনীতিতে মারাত্মক প্রভাব ফেলত পারে। তবে ভবিষ্যতে এটা কতটা ছড়ায় এবং সরকার কী ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখায় তার ওপর নির্ভর করছে ক্ষতির পরিমাণ। বিশেষ করে বর্তমানে যেভাবে জাতীয়তাবাদ বাড়ছে তা ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়িয়ে দিতে পারে। উল্লেখ্য, চীন এরই মধ্যে অভিযোগ করেছে, যুক্তরাষ্ট্র বাড়াবাড়ি করছে এবং আতঙ্ক ছড়াচ্ছে।গাড়ি : চীনে ভক্সওয়াগন ও টয়োটাসহ বিশ্বের খ্যাতিমান সব গাড়ি প্রস্তুতকারী কোম্পানি রয়েছে। এগুলোর কার্যক্রম বন্ধ। এস অ্যান্ড পি গ্লোবাল রেটিংস জানায়, প্রথম প্রান্তিকে গাড়ির উত্পাদন ১৫ ভাগ হ্রাস পাবে।বিনোদন : এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে সাংহাই ও হংকংয়ে ডিজনির থিম পার্ক বন্ধ। এ কারণে দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির লোকসান হবে ১৭৫ মিলিয়ন ডলার। ডিজনির মুখ্য অর্থনৈতিক কর্মকর্তা ক্রিস্টিনে ম্যাককার্থি এই তথ্য জানান। কানাডার কোম্পানি আইম্যাক্স নববর্ষে চীনে পাঁচটি ফিল্ম মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও তা বন্ধ করতে হয়েছে। জাপানের নিনতেনদো ভিডিও গেমস ও গেমিং ডিভাইস তৈরি করে। কিন্তু তারা পাঠাতে পারছেন না। চলতি সপ্তাহে চীনের ম্যাকাও শহরে কর্তৃপক্ষ ৪১ ক্যাসিনো বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে। এতে ঐ অঞ্চলে মার্কিন ক্যাসিনো পরিচালকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। ক্যাসিনো বন্ধ থাকায় উইন রিসোর্ট প্রতিদিন ২৪ লাখ ডলার থেকে ২৬ লাখ ডলার হারাবে।প্রযুক্তি ও খাবার : অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী টিম কুক জানান, জানুয়ারিতে কোম্পানিটির সরবরাহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং হচ্ছে। চীনের তাদের আমদানি পড়ে গেছে। অ্যাপল চীনে সর্ববৃহত্ প্রযুক্তি পণ্য সরবরাহকারী। তাদের সব শোরুম সেখানে বন্ধ রয়েছে। স্মার্টফোনের চিপ তৈরিকারক কুয়ালকমের ব্যবসাও ক্ষতিতে, কারণ গত বছর তাদের আয়ের অর্ধেকই আসে চীন থেকে। চীনেই সবচেয়ে বেশি স্মার্টফোন তৈরি করা হয়। ম্যাকডোনাল্ডের ৩ হাজার ৩০০ রেস্টুরেন্ট বন্ধ। তবে এতে মুনাফায় খুব বেশি প্রভাব ফেলবে না জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। স্টারবাকস তাদের ৪ হাজার ৩০০ শোরুমের অর্ধেকের বেশি বন্ধ করে দিয়েছে।তেল ও তামা : গত দুসপ্তাহে তেলের দাম পড়েছে প্রায় ১৫ ভাগ যা চীনে তেলের চাহিদা কমে যাবার প্রতিফলন। চীনের তেল শোধনাগার সাইনোপেক অপরিশোধিত তেলের আমদানি কমিয়ে দিয়েছে। তামার দামও আন্তর্জাতিক বাজারে প্রায় ১৩ ভাগ কমেছে। ধারণা, তামার এই মূল্যহ্রাসও চীনের ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপর প্রভাব ফেলবে। এসব পণ্য সরবরাহের জন্য অন্য দেশ এগিয়ে আসছে যেটা চীনের অর্থনীতির জন্য দুঃসংবাদ হতে পারে। তবে এই ক্ষতির চেহারা কী দাঁড়াবে তা এখনই বলা কঠিন।স্মার্টফোন : বিশেষজ্ঞদের ধারণা, প্রথম চার মাসে আইফোনের চালানের পরিমাণ ৪০ লাখ কমবে। এ সময়ে আনুমানিক ৩২ ভাগ কমবে চীনা স্মার্টফোনের চালান। অক্সফোর্ড ইকোনোমিক্স নামে একটি সংস্থার অনুমান, বিশ্ব অর্থনীতিতেও প্রবৃদ্ধির হার গড়ে শূন্য দশমিক ২ ভাগ কমবে। তবে এই পূর্বাভাস তারা বলছেন সঠিক হতে পারে একমাত্র চীন এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে সফল হলে। না হলে অর্থনীতিতে এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব হবে আরো মারাত্মক।

প্রাইভেট ডিটেকটিভ/১০ ফেব্রুয়ারী ২০২০/ইকবাল

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর