নাগরিক সমাবেশ ঘিরে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও এর আশপাশে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। শনিবার দুপুরে ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এজন্য নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় সাজানো হয়েছে পুরো এলাকা। সকাল থেকেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রত্যেকটি প্রবেশমুখে পুলিশ এবং আনসারের উপস্থিতি দেখা গেছে। সব প্রস্তুতি শেষে শনিবার ভোরে উদ্যানের সবক’টি গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। সমাবেশে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে তল্লাশি শেষে নেতাকর্মীদের ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে।
আয়োজকরা জানিয়েছেন, ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশনের পাশের গেইট দিয়ে নাগরিক সমাবেশে প্রবেশ করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আমন্ত্রিত অতিথিরা। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউট থেকে তিন নেতার মাজার পর্যন্ত বাকি পাঁচটি গেইট দিয়ে সাধারণ জনগণ প্রবেশ করবেন।
পুলিশের রমনা জোনের ডিসি মারুফ হোসেন সরদার বলেন, ‘সমাবেশের নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয়ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ডিএমপি এটি সরাসরি মনিটর করছে।’
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান বলেন, ‘নাগরিক সমাবেশকে কেন্দ্র করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ পুরো বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা গ্রহণ করা হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকেই উদ্যানে জনসাধারণের প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত করা হয়। রাত থেকেই সমাবেশস্থল ছিল হকার ও বাস্তুহারা মানুষমুক্ত।’
তিনি বলেন, ‘শনিবার সকালে যাবতীয় কার্যক্রম শেষে নিরাপত্তা তল্লাশির মধ্য দিয়ে সবাইকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে।’
বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণকে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের প্রামাণ্য দলিল হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ায় এই নাগরিক সমাবেশের আয়োজন করেছে আওয়ামী লীগ।
তাদের দাবি, সমাবেশে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ফিরে পাবে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণের আবহ।
আয়োজকরা জানান, একাত্তরের ৭ মার্চের আবহ ফিরিয়ে আনতে নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে বিস্তারিত কর্মসূচি। সমাবেশস্থলকে সাজানো হয়েছে সেই দিনের মতো করে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের কৃত্রিম লেকে শোভা পাবে পাট বোঝাই পাল তোলা নৌকা। আর নৌকার পালে থাকবে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের বিভিন্ন অংশ।
জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হবে সমাবেশ। তারপর বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থ পাঠ করা হবে। ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠ শেষে স্বরচিত কবিতা পাঠ করবেন কবি নির্মলেন্দু গুণ। তিনি পাঠ করবেন ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণকে নিয়ে তার নিজের লেখা কবিতা, ‘স্বাধীনতা, এই শব্দটি কিভাবে আমাদের হলো।’
নাগরিক সমাবেশের আহবায়ক এমিরেটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্বাগত বক্তব্য রাখবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বেলা আড়াইটায় শুরু হবে সমাবেশ। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক বিশালাকৃতির নৌকার ওপর তৈরি করা হয়েছে সমাবেশের মঞ্চ। মঞ্চের সামনে দেশের বিশিষ্ট নাগরিকরা বসবেন। তারপর বাঁশের তৈরি বেঁড়ার পাশে সারিবদ্ধভাবে বসানো হয়েছে ২৫ হাজার চেয়ার।
পুরো সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে জনতার জন্য সুন্দরভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে। যাতে তারা সুন্দরভাবে সমাবেশে অবস্থান করতে পারেন।