ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
এই ব্যক্তিরা কর ফাঁকি দিতে বিভিন্ন ট্যাক্স হেভেনে (কর দিতে হয় না বা সামান্য হারে কর দেওয়া যায় এমন দেশ) বিনিয়োগ করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।
সম্প্রতি তাদের কর ফাঁকি দেওয়া বিষয়ের এক কোটি ৩৪ লাখ গোপন নথি ফাঁস হয়ে পড়েছে। জার্মান দৈনিক জিটডয়েচ সাইতং প্রকাশ করেছে এ কেলেঙ্কারির কথা।
বারমুডায় অবস্থিত অ্যাপলবাই নামের এক আইনি সহযোগী সংগঠনের গোপন নথি জোগাড় করে তা দিয়ে দিয়েছে আন্তর্জাতিক অনুসন্ধানী সাংবাদিক সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টকে (আইসিআইজে)।
৬৭টি দেশের ৩৮০ জন সাংবাদিক ১ কোটি ৩৪ লাখ দলিলের তথ্যাদি এখন তদন্ত করে দেখছেন। গত ৫ নভেম্বর প্রথম তারা তথ্য ফাঁস করে। সেদিন কেলেঙ্কারির সঙ্গে বিশ্বের ১২০ জন রাজনৈতিক নেতার নাম প্রকাশিত হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় আইসিআইজে’র ওয়েবসাইটে দেওয়া তালিকায় ঠিকানাসহ যেসব বাংলাদেশি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম এসেছে, তারা হলেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুল আউয়াল মিন্টু, স্ত্রী নাসরিন ফাতিমা আউয়াল এবং তিন ছেলে- মো. তাবিথ আউয়াল, মোহাম্মদ তাফসির আউয়াল ও মো. তাজওয়ার আউয়াল, তাজওয়ারের অভিভাবক হিসেবে আব্দুল আওয়াল মিন্টু।
এছাড়া রয়েছে ফয়সাল চৌধুরী, ফরিদা ওয়াই মুগল, শহিদ উল্লাহ ও সামির আহমাদের নাম।
আর তালিকায় থাকা একমাত্র প্রতিষ্ঠানটি হলো ব্রামার অ্যান্ড পার্টনার্স অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট (বাংলাদেশ) লিমিটেড। তাদের ঠিকানা হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে ৫০ মহাখালী বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকা-১২১২।
অ্যাপলবাই থেকে ফাঁস হওয়া গোপন নথির বরাতে আইসিআইজে জানায়, আউয়াল পরিবারের সদস্যরা ১৯৯৯ সালের ৯ আগস্ট বারমুডায় ‘এনএফএম এনার্জি লিমিটেড’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান খুলে গোপনে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করেন।
আইসিআইজে’র ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর পানামা পেপারস কেলেঙ্কারির ঘটনা সামলাতে না সামলাতে নতুন করে এই কেলেঙ্কারি ফাঁস হলো। এবারও পানামা পেপারসের মতো এসব নথি প্রথমে জার্মান দৈনিক সুইডয়চে সাইটংয়ের হাতে আসে। পরে সেসব নথি আইসিআইজে’র হাতে তুলে দেয় তারা।
পরে এসব নথি পেয়েছে বিবিসি, গার্ডিয়ানসহ বিভিন্ন দেশের ১০০টি সংবাদমাধ্যম। গত ৫ নভেম্বর প্রথম আইসিআইজে তাদের ওয়েবসাইটে এসব তথ্য প্রকাশ করে।
ওইদিনই সংগঠনটি জানায়, তদন্তের এখন শুরু মাত্র। তাই পুরো তথ্য পাওয়া এখনো সম্ভব নয়। ধারাবাহিকভাবে প্রতিবেদন প্রকাশ করবে তারা।
প্যারাডাইস পেপার্সের আগে গত বছরের এপ্রিলে প্রকাশিত পানামা পেপার্স কেলেঙ্কারিতেও বাংলাদেশের ২১ ব্যক্তি ও তিনটি প্রতিষ্ঠানের নাম এবং ১৮টি ঠিকানা প্রকাশ করা হয়েছিল।