বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যবহারে এখনও পিছিয়ে
ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
দক্ষিণ এশিয়ার দেশ শ্রীলঙ্কায় যখন ৮০ শতাংশ মানুষ ব্যাংক ব্যবহার করে, তখন বাংলাদেশে এই হার ৩৩ শতাংশের আশপাশে।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) এক গবেষণা প্রতিবেদনে এই তথ্য তুলে ধরে বলা হয়েছে ব্যাংক খাতের সঙ্গে জনগণের সম্পৃক্ততায় এখনও কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি বাংলাদেশ।
রোববার ঢাকার মিরপুরে বিআইবিএম মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশের এসডিজি অর্জন : ব্যাংকিং খাতের ভূমিকা’ শীর্ষক জাতীয় সেমিনারে এই গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন হয় বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শ্রীলঙ্কার ৮০ শতাংশের বেশি মানুষের ব্যাংক হিসাব রয়েছে, ভারতে আছে ৫৩ শতাংশের। বাংলাদেশে ব্যাংক হিসাবধারীর সংখ্যা এক-তৃতীয়াংশের একটু বেশি।
ব্যাংকে বেতন দেওয়ার ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে বলে গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
বাংলাদেশে ব্যাংকে বেতন হয় দুই শতাংশের কম মানুষের। এই হার শ্রীলঙ্কায় ৭ শতাংশের বেশি। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়ার সরকারি-বেসরকারি ৩১ শতাংশ চাকুরের বেতন হয় ব্যাংকের মাধ্যমে।
১৬ কোটির বেশি মানুষের দেশ বাংলাদেশে বর্তমানে ব্যাংকের সংখ্যা ৫৮টি। এর মধ্যে নয়টি সরকারি এবং নয়টি বিদেশি।
বিআইবিএমের গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, ডেবিট কার্ড ব্যবহার, সঞ্চয়, আর্থিক অন্যান্য কার্যক্রমেও মানুষের ব্যাংকের সঙ্গে সম্পৃক্ততা কম।
বাংলাদেশের অধিকাংশ বেসরকারি ব্যাংকের কার্যক্রম শহরাঞ্চলকেন্দ্রিক হওয়ায় গ্রামের অধিকাংশ মানুষ এর আওতার বাইরে থেকে যান।
বিআইবিএমের গবেষকরা এসডিজি অর্জনে ব্যাংক খাতের সঙ্গে আরও অর্থনৈতিক সম্পৃক্ততা বাড়ানোর উপর জোর দেন।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের পরিচালক মো. মহিউদ্দিন সিদ্দিকী। গবেষক দলে আরও ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক ও বিআইবিএমের অনুষদ সদস্য আবদুল কাইয়ুম এবং বিআইবিএমের তিন সহকারী অধ্যাপক তানবীর মেহেদী, তাহমিনা রহমান ও অন্তরা জেরিন।
অনুষ্ঠানে আলোচনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং রিফর্মস অ্যাডভাইজর এস কে সুর চৌধুরী ব্যাংকের সঙ্গে জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে গত কয়েক বছরে কৃষকদের ১০ টাকার হিসাব খোলা এবং স্কুল ব্যাংকিং কার্যক্রমের প্রসারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, “এসডিজি তথা আর্থিক অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি বিবেচনায় স্কুল ব্যাংকিং, কৃষকের ১০ টাকার হিসাব এবং এজেন্ট ব্যাংকিং চালু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক, যা ব্যাংকিং খাতের সঙ্গে মানুষের সম্পৃক্ততা বাড়িয়েছে। এ সম্পৃক্ততা এসডিজি অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”
অনুষ্ঠানে সোনালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিআইবিএমের সাবেক চেয়ার প্রফেসর এস এ চৌধুরী বলেন, “ব্যাংকগুলোর ঋণের ৮৫ শতাংশ ঢাকা এবং চট্টগ্রামে দেওয়া হয়। এটি এসডিজি অর্জনে বড় অন্তরায়।”
তিনি বলেন, বেনামী ঋণও এসডিজি অর্জনে একটি বাধা। একই সঙ্গে ব্যাংক অর্থায়নের লিঙ্গ বৈষম্য প্রকট। এটি দূর করে ব্যাংক খাতের ৩০ শতাংশ নারী কর্মী হতে পারে।