রাজশাহীতে ২ আ.লীগের নেতার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন
ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
রাজশাহীর বাঘায় দুই আ.লীগের নেতার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। বাঘা পৌর আ.লীগ নেতা আবদুল কুদ্দুস সরকার ও তার সহযোগী আরেক নেতা অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য ইউসুফ আলীর বিরুদ্ধে চেক জালিয়াতির অভিযোগে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) বিকেলে বাঘা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপজেলার অমরপুর গ্রামের ইন্তাজ আলী এই দুই নেতা জুলুমবাজ, অত্যাচারি ও ভুমি দস্যু আখ্যায়িত করে লিখিত বক্তব্য বলেন, আমার বিশেষ টাকার প্রয়োজনে নিজের ১১ বিঘা জমিতে পুকুর খননের জন্য বিঘা প্রতি ২৬ হাজার টাকা চুক্তিতে ১২ বছরের জন্য বাঘা পৌর আ.লীগের সভাপতি ও পৌর কাউন্সিলর আবদুল কুদ্দুস সরকারের নিকট লিজ দেওয়া হয়। যাহার টাকা ২০১৬ সালের ১০ ডিসেম্বর হতে ২০১৭ সালের ২৩ জানুয়ারী পর্যন্ত ১০ কিস্তিতে সর্বমোট ১৫ লক্ষ টাকা প্রদান করে। এর মধ্যে প্রশাসনিক খরচ ও ইউসুফ আলীর লাভের ৫ লক্ষ ৭২ হাজার টাকা বাদ দেওয়া হয়। এই টাকা বাদ দিয়েও চুক্তি মোতাবেক ২৮ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা অবশিষ্ট থাকে। কিন্তু স্বাক্ষরিত চুক্তিপত্রে ২৮ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা না লিখে ২৭ লক্ষ ৪৯ হাজার ৯৯৯ হাজার লিখে নেয়। ফলে ইন্তাজ আলী এক লক্ষ ১০ হাজার টাকা পাওনা থাকে। যা পরে নগদ দেওয়ার কথা বলেই চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করে। উল্লেখ্য কুদ্দুস সরকারের কাছে লিজ দেওয়ার আগে উপজেলার আড়ানী পৌর এলাকার বাসিন্দা ও সাবেক নিমপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ইউসুফ আলীর নিকট ১১ বিঘা জমিতে পুকুর খনন করে দেওয়ার শর্তে ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে লিখিত চুক্তিপত্রে ১০ বছরের জন্য ২৯ লক্ষ ৭০ হাজার টাকায় লিজ দেওয়া হয়। সেই চুক্তি মোতাবেক বাংলা ১৪২৩ সনের ১লা বৈশাখের মধ্যে পুকুর খনন করে দেওয়ার শর্ত করা হয়। ফলে ইউসূফ আলীর কাছে থেকে ২০১৬ সালের ২১ জানুয়ারী ৫ লক্ষ টাকা গ্রহণ করা হয়। কিন্তু চুক্তি পত্রে উল্লিখিত সময়ের মধ্যে পুকুর খনন করে দিতে না পারায় ইউসূফ আলী ৫ লক্ষ টাকা ফেরত চায়। সেই টাকা নগদ পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে, সোনালী ব্যাংক আড়ানী শাখার চলতি হিসাব নম্বর-০০১০০৪৩০৩ এর অনুকূলে তারিখ ও টাকা উল্লেখ ছাড়াই স্বাক্ষরিত ফাঁকা দুইটি চেক প্রদান করা হয়। যাহার নম্বর-গঙ-৪৮৬৪৯২৭ এবং গঙ-৪৮৬৪৯২৮। আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ইন্তাজ আরো বলেন, পরবর্তীতে ইউসুফ আলীর প্রদানকৃত টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য ১১ বিঘা জমি বাঘা পৌর এলাকার মিলিকবাঘা গ্রামের বাসিন্দা পৌর কাউন্সিলর ও বাঘা পৌর আ.লীগের সভাপতি আবদুল কুদ্দস সরকার এর নিকট ১৫ লক্ষ টাকার বিনিময়ে লিজ দেওয়া হয়। এই টাকার মধ্য থেকে আবদুল কুদ্দুস সরকারের মাধ্যমেই ইউসুফ আলীকে ৫ লক্ষ টাকা ফেরত দিয়ে চেক দুটি ফেরত চায়। ইউসূফ আলী তাকে একটি চেক যাহার নম্বর-গঙ-৪৮৬৪৯২৭ ফেরত দেন। অপর চেকটি যাহার নম্বর-গঙ-৪৮৬৪৯২৮ খুঁজে না পাওয়ার অজুহাতে তার কাছে থেকে যায়। পরে ইউসুফ আলীর যোগসাজসে স্বাক্ষরিত ফাঁকা এই চেক হস্তগত করে চল্লিশ লক্ষ টাকার অঙ্ক বসিয়ে অসৎ উপায়ে টাকা আদায়ের লক্ষে আদালতে আমার বিরুদ্ধে মামলা করেন আবদুল কুদ্দুস সরকার। এ নিয়ে বাংলা ১৪২৩ সনের চৈত্র মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে অমরপুর গ্রামের ও ইউনিয়ন সদস্য মসলেম উদ্দীন, গ্রাম প্রধান আবদুর রাজ্জাক, আলেক সেখ, রেজাউল করিম নিজল, খলিল সরকারসহ অনেকের উপস্থিতিতে শালিস হয়। এই শালিশে ইউসুফ আলীর কাছে থাকা চেক নিয়েও কথা হয়। এ সময় বৈশাখে ফিডের হালখাতা করে আমার পাওনা টাকা ও ইউসুফ আলীর কাছে থাকা চেক ফেরত নিয়ে দেওয়ার কথা থাকলে তা দেয়নি। পরে চেক ফেরত না দিয়ে আবদুল কুদ্দুস সরকার বাদি হয়ে ৪০ লক্ষ টাকার অঙ্ক বসিয়ে আমার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। সরকার ও দলীয় নের্তৃবৃন্দ এবং প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করে ইন্তাজ বলেন, টাকার প্রয়োজনে সম্পত্তি লিজ দিয়ে উল্টো দুই প্রতারকদের ফাঁদে পড়ে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি। ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া ও সংসার চালানো নিয়েও বিপদে পড়েছি। দেন দরবার করলে তারা প্রাণনাশের হুমকিও দিচ্ছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন ইন্তাজ আলী।