চাঁদপুরে বাবার বিরুদ্ধে মাকে হত্যার অভিযোগে মেয়েদের সংবাদ সম্মেলন
ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ গল্লাক আদর্শ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ ও মহিলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শাহিন সুলতানা ফেন্সি খুনের ঘটনায় বাবাকে অভিযুক্ত করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন নিহতের বড় মেয়ে ফারজানা শাহীন পদ্ম ও ছোট মেয়ে ডা. ফাতিমা শাহিন পুষ্প। গতকাল রোববার দুপুরে চাঁদপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ছোট মেয়ে ডা. ফাতিমা শাহিন পুষ্প। তিনি বলেন, আমার মা নিহত শাহিন সুলতানা ফেন্সি ও বাবা অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম (পিতা) দীর্ঘ ৩২ বছর দাম্পত্য জীবন কাটান। আমরা তিন বোন। এর মধ্যে বড় বোন বিবাহিতা স্বামীসহ থাকেন ইতালি, দ্বিতীয় বোনও বিবাহিত, স্বামীসহ থাকেন জার্মানিতে এবং আমি চিকিৎসক। আমার বাবা অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম চার বছর আগে জুলেখা বেগম নামে স্বামী পরিত্যক্তা এক নারীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। শেষ পর্যন্ত তিনি সবার অগোচরে ওই নারীকে বিয়েও করেন। আমার মা এবং আমরা তা মেনে নিইনি। যা নিয়ে আমার মায়ের সঙ্গে বাবার প্রায়ই ঝগড়া-বিবাদ হতো, আমার বাবা আমার মাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতেন। আমার বাবা প্রকাশ্যেই আমার মাকে জীবননাশের হুমকিও দিতেন এবং দ্বিতীয় স্ত্রীও মোবাইলে আমার মাকে হত্যার হুমকি দিতেন। যা আমরা বোনেরা বহুবার দেখেছি এবং শুনেছি। পুষ্প বলেন, মাকে হত্যার হুমকি শুনে সতর্ক করি এবং বিদেশে বড় বোনের কাছে চলে যাওয়ার জন্য বলি। কিন্তু মা বাবাকে একা ফেলে আমার বোনদের সঙ্গে যাননি। ঘটনার দিন গত ৪ জুন সন্ধ্যা থেকে রাত ১০টার মধ্যে কোনো একসময় আমার বাবা পূর্বপরিকল্পনা মতো তার দ্বিতীয় স্ত্রীর সহযোগিতা ও প্ররোচণায় আমার মাকে খুন করেন। পরে আমার বাবার ছোট ভাই নয়ন ও বোন রানুর সহযোগিতায় খুনের আলামত নষ্ট করে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করে। নিহত ফেন্সির বড় মেয়ে ফারজানা শাহীন পদ্ম বলেন, মা জীবদ্দশায় আমাদের বলতেন আমার যদি অস্বাভাবিক মৃত্যু হয় তাহলে তোমরা তোমার বাবাকে ছেড়ে দিও না। আমার বাবাই যে খুনি এটি তার প্রমাণ। সুতরাং সাংবাদিকদের কাছে অনুরোধ আপনারা অন্যায়ের সঙ্গে আপস না করে সত্যটা তুলে ধরবেন। কারণ অ্যাড. জহিরুল ইসলাম চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি। তার কাছে যেহেতু আমার মায়ের মত মানুষটি নিরাপদ ছিলেন না। তাহলে আপনাদের কারো মা, বোন, মেয়েই বর্তমানে নিরাপদে নেই। সংবাদ সম্মেলনে মামলার বাদী ছোট ভাই ফোরকান উদ্দিন খান, বড় ভাই নঈম উদ্দিন খান বলেন কোনোভাবেই যাতে প্রকৃত খুনি আড়াল না হয়ে যায়। তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তারা। সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের মধ্যে প্রশ্ন করেন এবং বক্তব্য রাখেন প্রেসক্লাব সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটওয়ারী, সাধারণ সম্পাদক মির্জা জাকির, সাবেক সভাপতি কাজী শাহাদাত, সহ-সভাপতি সোহেল রুশদী, সাংগঠনিক সম্পাদক আলম পলাশ, প্রচার সম্পাদক এ এইচ এম আহসান উল্যাহ ও সাংবাদিক রিয়াদ ফেরদৌস।