November 9, 2024, 1:59 pm

সংবাদ শিরোনাম
আজ শহীদ সাংবাদিক কামরুল হাসান চৌধুরী আলীমের ১৮তম মৃত্যুবার্ষিকী পাবনায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে ঘুষ বানিজ্যের বিস্তর অভিযোগ জাতির ভাগ্যে স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের স্বাদ কবে পাবে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম ও আইন শৃঙ্খলার পরিস্থিতি উদ্বেগ জনক বোরহানউদ্দিনে টিকা নেওয়ার পরে অসুস্থ হয়ে প্রায় অর্ধ শতাধিক ছাত্রী হাসপাতালে ভর্তি শার্শায় হতদরিদ্রদের মাঝে জামায়াতের ভ্যান,ছাগল ও নগদ অর্থ বিতরন নবাবগঞ্জে জামায়াতের আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত বাগেরহাটের কচুয়ায় যুবদলের ৪৬ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত সুন্দরগঞ্জে আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভা স্বাধীনতা, সার্বভৌম হ্যাঁ ও সাংবিধানকে করা প্রয়োজন

কাজ চলছে ঢিমেতালে কমছেই না নাগরিক দুর্ভোগ উন্নয়ন প্রকল্পে বড় বাধা বৃষ্টি

মোঃ ইকবাল হাসান সরকারঃ

রাজধানীজুড়ে উন্নয়নের নামে চলছে খোঁড়াখুঁড়ি। এর মধ্যে বর্ষা মৌসুম শুরুর আগেই প্রতিদিন ঝড়-বৃষ্টির কারণে বাড়ছে নাগরিক ভোগান্তি। কাদাপানিতে সয়লাব হচ্ছে পথঘাট। রাস্তা খুঁড়ে রাখায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা অসহনীয় যানজটে আটকে থাকতে হচ্ছে রাজধানীবাসীকে।

এ ব্যাপারে নগরবিদ স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, এক রাস্তা তিনবার খোঁড়া হচ্ছে। বৃষ্টির মৌসুম শুরুর সময় ছোট-বড় সব প্রকল্পের কাজ শুরু করা এগুলো স্পষ্টতই টাকা খরচের ফন্দি। বার বার খোঁড়াখুঁড়ির কারণে শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা সারা বছরই দুর্ভোগ পোহাতে হয় রাজধানীবাসীকে। তিনি আরও বলেন, সেবা সংস্থাগুলোর মধ্যে কোনো সমন্বয় নেই। যার যখন মন চায় পরিকল্পনা জমা দেয়, বাজেট আনে, রাস্তা কাটে। মানুষ কীভাবে যাবে, যানজট হবে— সেসব নিয়ে তাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। আর এপ্রিল পার হতেই শুরু হয় প্রকল্পের কাজ হাতে নেওয়ার ধুম। অথবা কাজের গতি কমিয়ে জুন মাসে নিয়ে যাওয়া হয়। ফলে উন্নয়ন ভেসে যায় বৃষ্টির পানিতে। এগুলো টাকা খরচের ধারাবাহিক পদ্ধতি। বছরের পর বছর ধরে এসব চললেও কেউ দেখে না।

এ বছর সেবা সংস্থাগুলোর আওতায় চলছে উন্নয়ন কার্যক্রম। দুই সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, রাজধানীর উন্নয়ন কাজের অংশ হিসেবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের শান্তিনগর এলাকার জলাবদ্ধতা দূরীকরণে ৯ দশমিক ২৭২ কিলোমিটার রাস্তার উন্নয়ন, ১১ দশমিক ৭২ কিলোমিটার ড্রেন নির্মাণ এবং ১১ দশমিক ৪০২ কিলোমিটার ফুটপাথ উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়িত হয়েছে। বংশাল, নাজিরা বাজার, লক্ষ্মী বাজার, নবাবপুর, জনসন রোড, লালবাগ, কামরাঙ্গীরচর, হাজারীবাগ, মতিঝিল, খিলগাঁও, শহীদ মিনার, বেইলি রোড, বাংলামোটর এলাকায় জলাবদ্ধতা নিরসনে ৪৬৯ দশমিক ৯৬ কিলোমিটার নর্দমা এবং ২৫৯ দশমিক ৬১ কিলোমিটার সড়ক ও ৫১ দশমিক ৫১ কিলোমিটার ফুটপাথ উন্নয়নের কাজ চলছে। এসব উন্নয়ন কাজ শেষ না হতেই শুরু হয়েছে বৃষ্টি। ফলে রাস্তায় পানি জমে তৈরি হচ্ছে ভোগান্তি। আর পানি নেমে গেলেও কাদায় পিচ্ছিল হয়ে থাকছে সড়ক। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আওতায় বাড্ডা থেকে কুড়িল পর্যন্ত রাস্তা কেটে বসানো হচ্ছে পয়ঃনিষ্কাশন নালা। রিং বসানো শেষে বালু দিয়ে গর্ত ভরাট করা হয়েছে। কিন্তু বৃষ্টির কারণে পিচ ঢালাই না হওয়ায় দু-তিন ইঞ্চি নিচু হয়ে গেছে মূল রাস্তা থেকে। ফলে এই রাস্তায় একটার বেশি গাড়ি পার হতে পারছে না। দিনের সব সময়ই যানজট লেগে থাকে।

তবে এবারের বর্ষা মৌসুমে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) রাজধানীতে কোনো সড়ক কাটার অনুমোদন দেবে না বলে জানিয়েছেন মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। পাশাপাশি রমজানে যানজট সহনীয় পর্যায়ে রাখতে রাস্তা সংস্কারের কাজ দু-চার দিনের মধ্যে শেষ করাসহ বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

এদিকে বৃষ্টির কারণে ফ্লাইওভারের দুই প্রান্তে জমে থাকছে পানি। এতে দুর্ঘটনার প্রবণতা আরও বাড়ছে। সরেজমিন দেখা যায়, মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারে ওঠার মুখে থৈ থৈ করছে পানি। বৃষ্টি থামার এক ঘণ্টা পার হলেও কমেনি পানি। একই অবস্থা মিরপুর-এয়ারপোর্ট ফ্লাইওভারের। পানিতে ডুবে থাকে হোটেল র‌্যাডিসন ব্লুর সামনের রাস্তা। বর্তমানে রাজধানীতে চালু ফ্লাইওভার-ওভারপাস ৯টি। এগুলো হলো— মহাখালী ওভারপাস, খিলগাঁও ফ্লাইওভার, বিজয় সরণি-তেজগাঁও লিংক রোড ওভারপাস, টঙ্গী ওভারপাস, বনানী ওভারপাস, মিরপুর-এয়ারপোর্ট রোড ফ্লাইওভার, কুড়িল ফ্লাইওভার, মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভার ও মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার। সবকটি ফ্লাইওভারেই ড্রেনেজ ব্যবস্থা দুর্বল। খিলগাঁও ফ্লাইওভারের সায়েদাবাদগামী লুপ দিয়ে নামলেই চোখে পড়বে জলাবদ্ধতা। শুধু প্রবেশ মুখে নয়, ফ্লাইওভারের ওপরেও জমছে পানি। রাজারবাগ পুলিশ লাইনস মোড় থেকে বাসাবো যাওয়ার লুপের কয়েকটি পয়েন্টে পানি জমে থাকতে দেখা গেছে। লুপের মুখেও জলাবদ্ধতা। পানি জমে থাকছে মহাখালী ফ্লাইওভারের মুখগুলোতেও। কয়েক মাস আগে চালু হওয়া মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভারের দুই প্রান্তেও একই চিত্র।

এ ব্যাপারে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ বিলাল বলেন, রাজধানীর জলাবদ্ধতা নিরসনে সিটি করপোরেশন কাজ করে যাচ্ছে। আমরা বেশ কিছু প্রকল্প হাতে নিয়ে জলাবদ্ধতা নিরসনে সফলতা পেয়েছি। এ ছাড়া বর্ষা মৌসুমে নগরবাসীর দুর্ভোগ কমাতে নতুন করে আর কোনো রাস্তা কাটা বা খোঁড়ার অনুমতি দেওয়া হবে না বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নগরবিদ স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন বলেন, যার যখন ফান্ড আসে সে তখন রাস্তা খোঁড়ে। ফলে রাজধানীবাসীর সারা বছরই ভোগান্তি পোহাতে হয়। এ বছর তো আবার আগাম বৃষ্টি শুরু হয়েছে। খাল-বিল উদ্ধার না করলে কখনই জলজট দুর্ভোগ কমানো যাবে না।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

প্রাইভেট ডিটেকটিভ/১৯মে২০১৮/ইকবাল

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর