চবি প্রতিনিধিঃ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের উপর হামলা, তাদের গাড়ি ভাঙচুর ও শিক্ষার্থী অপহরণের ঘটনায় ৮ শিক্ষার্থীকে ২ বছরের জন্য বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলথ এন্ড ডিসিপ্লিনারি কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বহিষ্কৃতরা হলেন, গত ২০ ফেব্রুয়ারি প্রক্টর অফিস ভাঙচুর ও গণমাধ্যম কর্মীদের উপর হামলার ঘটনায় নেতৃত্বদানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের ২০১১-১২ সেশনের সাইদুল ইসলাম সাইদ এবং ঘটনায় প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহনের জন্য অর্থনীতি বিভাগের ২০১৪-১৫ সেশনের লোকমান হোসেন, আধুনিক ভাষা ইনিস্টটিউটের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের কনক সাহা জয় ও নাট্যকলা বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের মাহফুজুল হুদা লোটাস। বহিষ্কৃত ৪ জনই সিটি মেয়র ও নগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারি হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত।
অন্যদিকে, গত ২২ তারিখ অপহরণের ঘটনায় আধুনিক ভাষা ইনিস্টটিউটের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের মোঃ শফিকুল ইসলাম, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের ইয়াসিন আরাফাত, আধুনিক ভাষা ইনিস্টটিউটের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের ইফতেখার উদ্দিন রিয়াজ ও ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের সাব্বির হোসেনকে ২ বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কৃত এ ৪ জন কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান নওফেলের অনুসারি।
প্রসঙ্গত, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি দুপুরে ক্যাম্পাসে সংঘর্ষে জড়ায় ছাত্রলীগের দুই পক্ষ। এরপর রাতে শাহজালাল ও শাহ আমানত হলে তল্লাশী চালিয়ে ধারালো অস্ত্র ও দুইটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার এবং কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী আটক করে পুলিশ । এর প্রতিবাদে লাগাতার অবরোধের ডাক দেয় আ জ ম নাসির উদ্দিনের অনুসারীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক অবরোধ করে রাখলে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে তাদেরকে সেখান থেকে সরিয়ে দেয় পুলিশ। প্রতিবাদে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুর চালায় ছাত্রলীগ। এসময় প্রক্টর অফিস ও সময় টিভির গাড়িতেও ভাঙচুর চালায় তারা।
এছাড়াও গত ২২ ফেব্রুয়ারি অপহরণ করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৭-১৭ ১৮ সেশনের শিক্ষার্থী প্রাণ রসায়ন বিভাগের মোঃ সাজিদ খানকে। তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্ট থেকে দক্ষিণ ক্যাম্পাসের পাহাড়িকা হাউজিং সংলগ্ন একটি বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তার কাছ থেকে কয়েক দফায় ১ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা আদায় করে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে তার পরিবার পুলিশ প্রশাসন ও প্রক্টর অফিসকে অবহিত করে। হাটহাজারি থানা পুলিশ বাদি হয়ে একটি মামলাও দায়ের করা হয়।