ছয় গ্রেডে বাড়ল পোশাক শ্রমিকদের বেতন
ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
পোশাক শ্রমিকদের মজুরি বৈষম্য দূর করতে নতুন মজুরি কাঠামো ঘোষণা করেছে সরকার। এ ক্ষেত্রে সর্বশেষ মজুরি কাঠামোর ছয়টি গ্রেডের বেতন বেড়েছে।
রবিবার শ্রম মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মালিক-শ্রমিক ও প্রশাসনের প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত ত্রিপক্ষীয় কমিটির বৈঠক শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এই সিদ্ধান্তের কথা জানান।
মন্ত্রী বলেন, সংশোধিত এই কাঠামো ২০১৮ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর ধরা হবে। আর বাড়তি অংশের টাকা ফেব্রুয়ারির বেতনের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে। আগামি সাত দিনের মধ্যে সংশোধিত কাঠামোর গেজেট প্রকাশ করা হবে বলে জানান তিনি।
নতুন মজুরি কাঠামোতে যাতায়াত, বাড়িভাড়া, চিকিৎসার জন্য বরাদ্দ বাড়ানো ছাড়াও মূল মজুরির সঙ্গে পাঁচ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট ঘোষণা করা হয়েছে।
এখন থেকে প্রথম গ্রেডের একজন কর্মী সব মিলিয়ে ১৮ হাজার ২৫৭ টাকা বেতন পাবেন। এই গ্রেডে ২০১৮ সালে ১৭ হাজার ৫১০ টাকা করা হয়েছিল। ২০১৩ সালের বেতন কাঠামোতে এই গ্রেডের মজুরি ছিল ১৩ হাজার টাকা।
দ্বিতীয় গ্রেডের সর্বমোট বেতন ধরা হয়েছে ১৫ হাজার ৪১৬ টাকা। ২০১৩ সালের বেতন কাঠামোতে এই গ্রেডে ১০ হাজার ৯০০ টাকা বেতন ছিল। ২০১৮ সালের গেজেটে তা ১৪ হাজার ৬৩০ টাকা করা হয়েছিল।
তৃতীয় গ্রেডের সব মিলিয়ে বেতন ধরা হয়েছে ৯ হাজার ৮৪৫ টাকা। যা ২০১৩ সালের বেতন কাঠামোতে ৬ হাজার ৮০৫ টাকা এবং ২০১৮ সালের গেজেটে ৯ হাজার ৮৪৫ টাকা করা হয়েছিল।
চতুর্থ গ্রেডে সর্বমোট বেতন ধরা হয়েছে ৯ হাজার ৩৪৭ টাকা। এই গ্রেডে ২০১৩ সালে বেতন ৬ হাজার ৪২০ টাকা ছিল। ২০১৮ সালে করা হয়েছিল ৯ হাজার ২৪৫ টাকা।
পঞ্চম গ্রেডে বেতন ঠিক হয়েছে ৮ হাজার ৮৭৫ টাকা। এটা সব মিলিয়ে ধরা হয়েছে। ২০১৩ সালে এই গ্রেডে ৬ হাজার ৪২ টাকা এবং ২০১৮ সালের ছিল ৮ হাজার ৮৭৫ টাকা।
ষষ্ঠ গ্রেডের সর্বমোট বেতন ৮ হাজার ৪২০ টাকা ধরা হয়েছে। ২০১৩ সালের বেতন কাঠামোতে তা ছিল ৫ হাজার ৬৭৮ টাকা। ২০১৮ সালে করা হয়েছিল ৮ হাজার ৪০৫ টাকা।
সপ্তম গ্রেডের মজুরি সব মিলিয়ে ৮ হাজার টাক ধরা হয়েছে। ২০১৩ সালের বেতন কাঠামোতে সর্বনিম্ন গ্রেডের বেতন ছিল ৫৩০০ টাকা।মজুরি কাঠামোতে বৈষম্যের অভিযোগ গত ৭ম দিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন পোশাক শ্রমিকরা। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে ভাঙচুরও করেন। এতে শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সাভার, গাজীপুর, রাজধানীর মিরপুর, মোহাম্মদপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ করা হয়।
টানা শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনায় অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মুখে পড়ে তৈরি পোশাক মালিকরা। শ্রমিক বিক্ষোভের মুখে আশুলিয়ার জামগড়া, নরসিংহপুর, জিরাবো, কাঠগড়াসহ বিভিন্ন এলাকার অর্ধশতাধিক কারখানা ছুটি ঘোষণা করে মালিকপক্ষ।