মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভারের উদ্বোধন আজ
ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভারের উদ্বোধন করা হবে আজ বৃহস্পতিবার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুপুর ১২টায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সেতুর উদ্বোধন করবেন। প্রকল্পের পরিচালক সুশান্ত পাল বলেন, ফ্লাইওভারের নির্মাণকাজ এরইমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করবেন। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পরই নগরবাসীর দীর্ঘদিনের কাক্সিক্ষত এই ফ্লাইওভার জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। এতে যানজটের তীব্র যন্ত্রণা থেকে নগরবাসী যেমন রেহাই পাবেন, তেমনি যাতায়াত সময়ও কমবে অনেক। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হয়েছে এক হাজার ২১৮ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকার অর্থায়ন করেছে ৪৪২ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। সৌদি ফান্ড ফর ডেভেলপমেন্ট (এসএফডি) এবং ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ওএফআইডি) দিয়েছে ৭৭৬ কোটি ১৬ লাখ টাকা। চার লেনের এ ফ্লাইওভারে ওঠানামার জন্য ১৫টি র্যাম্প রয়েছে। তেজগাঁওয়ের সাতরাস্তা, এফডিসি, মগবাজার, হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল, বাংলামোটর, মালিবাগ, রাজারবাগ পুলিশ লাইন এবং শান্তিনগর মোড়ে ওঠানামা করার ব্যবস্থা রয়েছে। এটি রিখটার স্কেলে ১০ মাত্রার ভূমিকম্প সহনীয় বলে প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে। প্রতিটি পিলার পাইলের গভীরতা প্রায় ৪০ মিটার গভীর। ২০১৩ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায় নয় কিলোমিটার লম্বা ফ্লাইওভারটির নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন। ফ্লাইওভারটির কাজ তিন ভাগে করা হয়েছে। গত বছরের ৩০ মার্চ সাতরাস্তা-মগবাজার-হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল অংশে যান চলাচল উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর ফ্লাইওভারের ইস্কাটন-মৌচাক অংশের উদ্বোধন করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তৃতীয় ধাপে এফডিসি মোড় থেকে সোনারগাঁও হোটেলের দিকের অংশটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয় এ বছর ১৭ মে। এখন খুলে দেওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে ফ্লাইওভারের মগবাজার-মৌচাক-মালিবাগ-শান্তিনগর-রাজারবাগ অংশ।
মৌচাক এড়িয়ে চলার অনুরোধ মেয়রের: মৌচাক-মগবাজার ফ্লাইওভারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের কারণে বৃহস্পতিবার মৌচাক-মালিবাগ এলাকা এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ ফ্লাইওভারের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর স্থানীয় সরকারমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী এবং প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা থাকবেন মৌচাক এলাকায় বানানো অনুষ্ঠান মঞ্চে। মেয়র সাঈদ খোকন গতকাল বুধবার দুপুরে বলেন, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের জন্য মৌচাক এলাকায় প্যান্ডেল তৈরি করা হবে। এ কারণে ওই এলাকায় যানজট হতে পারে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গণভবনে থাকবেন। আমরা থাকব এই প্রান্তে। সেখানে একটা অনুষ্ঠান হবে। এ কারণে ওই রাস্তাটা বন্ধ থাকবে। নাগরিকদের অনুরোধ করা হয়েছে যেন তারা খুব জরুরি কাজ না থাকলে ওই এলাকার সড়ক ব্যবহার না করেন। যানজট এড়াতে তারা যেন বিকল্প রাস্তা ব্যবহার করেন। মেয়র বলেন, শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে নানা ব্যক্তি, সংগঠন অনুষ্ঠানে আসবেন। তারা মিছিল নিয়ে অনুষ্ঠানস্থলে আসবেন তো, এ কারণে যানবাহন চলাচল কিছুটা বিঘœ হবে। এ কারণে আমরা অনুরোধ করছি এ এলাকা এড়িয়ে চলতে। রাজধানীর মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার নির্মাণের তৃতীয় ধাপে এফডিসি মোড় থেকে সোনারগাঁও হোটেলের দিকের অংশটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয় এ বছর ১৭ মে। তার আগে, ২০১৬ সালের ৩০ মার্চ এ ফ্লাইওভারের হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল থেকে সাতরাস্তা পর্যন্ত অংশটি যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তা উদ্বোধন করেন। ওই বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর এ ফ্লাইওভারের ইস্কাটন-মৌচাক অংশের যান চলাচল উদ্বোধন করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন। ২০১৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্য নিয়ে ২০১১ সালে যখন এই ফ্লাইওভার নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল, তখন এর ব্যয় ধরা হয়েছিল ৭৭২ কোটি ৭০ লাখ টাকা। এরপর কয়েক ধাপে ব্যয় বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ১৩৫ কোটি টাকা। ফ্লাইওভারটির নির্মাণ কাজ তিন ভাগে করা হয়েছে। একটি অংশে রয়েছে সাতরাস্তা-মগবাজার-হলি ফ্যামিলি পর্যন্ত, আরেকটি অংশে শান্তিনগর-মালিবাগ-রাজারবাগ পর্যন্ত এবং শেষ অংশটি বাংলামোটর-মগবাজার-মৌচাক পর্যন্ত।