December 22, 2024, 8:09 pm

সংবাদ শিরোনাম
পুলিশ ও জনগণের মধ্যে সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়, পুলিশ ও জনগণ একে অন্যের পরিপূরক-রেজাউল করিম মল্লিক দলের পরিবর্তন হয়েছে চরিত্রের পরিবর্তন হয়নি শায়খে চরমোনাই মুফতি ফয়জুল করীম আপনারা শান্তিতে থাকুন আমরা চাই,আমাদেরকেও আপনারা শান্তিতে থাকতে দিন- ডা. শফিকুর রহমান যশোরে গাছের সাথে বাসের ধাক্কায় নিহত ১ পার্বতীপুরে ঘোড় দৌড় প্রতিযোগিতা ২০২৪ অনুষ্ঠিত বাংলাভিশন ডিজিটালের নির্বাহী সম্পাদকের বিরুদ্ধে নাবিলের অপপ্রচারের প্রতিবাদ হিলিতে বিজিবি দিবসে বিএসএফকে মিষ্টি উপহার বিজিবির কুড়িগ্রামের ফুলবাড়িতে আওয়ামী লীগের নেতা গ্রেপ্তার পটুয়াখালীতে বাড়ির সীমানা নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত-৬ গভীর রাতে আশ্রায়ন প্রকল্পের শীতার্তদের পাশে হাকিমপুরের ইউএনও অমিত রায়

প্রধানমস্ত্রীর আশ্বাসে চা-শ্রমিকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার ঘোষণার পরেই আবার প্রত্যাখান

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি;
প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক চা-শ্রমিকদের নতুন মজুরি ২৫ টাকা বাড়িয়ে ১৪৫ নির্ধারণ করার ঘোষণায় চা
শ্রমিক ইউনিয়েনের নেতৃস্থানীয় নেতারা মেনে কর্মসুচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিলেও মানতে নারাজ
সাধারণ চা- শ্রমিকরা। তারা নেতাদের দাবী মেনে নেওয়ার ঘোষণার প্রতিবাদের রাতেই বিভিন্ন এলাকায়
গভীর রাত পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল করেন। সন্ধার পর শ্রীমঙ্গল চৌমুহনায় কিছু চা শ্রমিক ঢাকা-সিলেট-
মৌলভীবাজার আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে রাখে।এ সময় তারা তাদের নেতাদের চামচা নামে বলে তাদের সাথে
মিত্যা ও প্রতারোণা করছেন বলে জানান। এসময় বাংলাদেশ চা কন্যা নারী সংসদের সভানেত্রী কায়রুন
আক্তারসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও চা-অঞ্চলের কোথাও কোথাও রাস্তা অবরোধের ঘটনাও ঘটে বলে
জানাগেছে। চা শ্রমিকদে নেতার বক্তব্যে সাধারণ চা শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ, উত্তেজনা দ্বিধাবিভক্তি দেখা
যাচ্ছে। এছাড়াও সাধারণ শ্রমিকরা প্রধানমন্ত্রী যে নির্দেশ নিয়েছেন, তা তারা লিখিত দেখাতে
পারেনি বলে জানান, প্রধানমন্ত্রীর মুখে শুনতে চান বলেও অনেকে জানান।
এর আগে শনিবার চা-শ্রমিক নেতাদের সাথে শ্রীমঙ্গল উপশ্রম পরিচালকের কার্যালয়ে প্রধানমস্ত্রী
ঘোষণা সকলের সামনে উপস্থাপন করেন মৌলভীবাজার-৪ আসনের সংসদ সদস্য উপাধ্যক্ষ ড. আব্দুস শহীদ
এমপি। এসময় শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরী, মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার
মোহাম্মদ জাকারিয়াসহ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ওই সভা শেষে বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল জানান, যে
আমাদের শ্রমিক বান্ধব প্রধানমন্ত্রী ১৪৫ টাকা আপাদত মজুরী নির্ধারণ করেছে, আমরা তার সম্মানের
জন্য তারা তক মেনে নিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বিদেশ থেকে ফিরে আসলে তাদের ৩০০ টাকা মজুরির
দাবিতে আবারও কথা বলবেন। একারণে আপাতত শ্রমিকদের চলমান কর্মবিরতি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।
এ সময় তিনি কর্মসূচি পালনকালে গত ১২ দিনের মজুরি, রেশনসহ আনুষঙ্গিক অন্যান্য সুবিধা
প্রদানের দাবি জানান।
দিকে গত রবিবার সন্ধ্যা সাড়ের সাতটায় শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়
মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান, স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে কথা বলেন। তিনি
প্রধানমন্ত্রী অনুরোধ ১৪৫ টাকা মেনে নেওয়ার জন্য আহবান জানান। এবং তারা প্রধানমন্ত্রী অনুরোধ
মেনে নিয়েছেন বলে জানান। তিনি আরো জানান, প্রধানমন্ত্রী চা শ্রমিকদের প্রতি
সুহানুবুতিশীল। প্রধানমন্ত্রী খুব কম সময়ে চা শ্রমিক নেতাদের সাথে বসে কথা বলবেন এবং তাদের
স্থায়ী সমাধাননের ব্যবস্থা করবেন।
রবিবার চা বাগানে সাপ্তাহিক ছুটির দিন ও আন্দোলনের ১২ম দিনেও সড়ক অবরোধসহ বিক্ষোভ
কর্মসূচী পালন করেন শ্রমিকরা।
উপজেলার বিভিন্ন বাগান ঘুরে দেখা যায়, বাগানে বাগানে জড়ো হয়ে শ্রমিকরা স্বতস্ফূর্তভাবে
মিছিল ও পথসভা করছেন। সভায় বাঁচার মতো ৩০০ টাকা মজুরিসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা প্রদানের
দাবি করছেন। আলীনগর চা বাগানে মিছিল শেষে পথসভায় বক্তব্য রাখেন গৌরী রানী কৈরী, বিউটি
নায়েক, গণেশ পাত্রসহ চা শ্রমিকরা।
তারা আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কথা বলে তারা কিভাবে ১৪৫ টাকা মজুরি মেনে নিতে বললেন তা বোধগম্য
নয়। সাধারণ একটি শ্রমিক পরিবার ১৪৫ টাকায় কি সংসার চালানো থেকে শুরু করে সন্তানদের
পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে।
চা শ্রমিকরা গত ৯ আগষ্ট থেকে তাদের ন্যুনতম মজুরি দৈনিক ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা
করার দাবিতে প্রথমে ২ ঘন্টা করে ও ১৩ আগষ্ট থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করে। এ নিয়ে
শ্রীমঙ্গলস্থ শ্রম দপ্তরে চা শ্রমিক নেতৃবৃন্দের বৈঠকে ১৪৫ টাকার মজুরি নিয়ে একটি সমঝোতার
কথা শোনা গেলেও পরে তা প্রত্যাখান করে বিক্ষোভ কর্মসূচী শুরু করেন শ্রমিকরা।
গৌরী রানী কৈরী ও বিউটি নায়েক বলেন, চা বাগানে একজন শ্রমিকের মজুরির ওপর কমপক্ষে ৫ জনের
ভরণপোষণ নির্ভর করে। বর্তমান দ্রব্যমূল্যের বাজারে ৩০০ টাকা মজুরি পেলেও সংসার চালানো সম্ভব নয়।
ন্যাশনাল টি কোম্পানীর পাত্রখোলা চা বাগান ব্যবস্থাপক শামসুল ইসলাম বলেন, বৈঠকে চা শ্রমিক
নেতারা সিদ্ধান্ত মেনে নিলেও পরে প্রত্যাহার করেছেন।
এ বিষয়ে চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরা জানান, বৈঠকের সিদ্ধান্ত
অনুয়ায়ী ১৪৫ মজুরী মানেনি সাধারণ শ্রমিকরা। তাই তাদের ধর্মঘট ৩০০ মজুরী টাকা না হওয়া পর্যন্ত
চালিয়ে যাবেন।
আব্দুস সামাদ আজাদ,মৌলভীবাজার,তাং-২২/০৮/২০২২

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর