ডিটেকটিভ ডেস্কঃঃ
বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলার প্রাপ্ত বয়স্ক ১০ আসামির রায় ঘোষণা হবে কিছুক্ষণের মধ্যে। এই নিয়ে আদালত চত্বরে নেয়া হয়েছে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এরইমধ্যে আদালতে নেয়া হয়েছে রিফাতের স্ত্রী ও এই মামলার সাত নম্বর আসামি আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিসহ অন্য আসামিদের। মামলার আসামিদের মধ্যে কেবল মিন্নিই জামিনে আছেন।
বুধবার সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে বাবার সঙ্গে মোটরসাইকেলে করে আদালত প্রাঙ্গণে পৌঁছান মিন্নি। মামলার বাদী রিফাতের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফসহ তার পরিবারের কয়েকজন সদস্যও রায়ের জন্য উপস্থিত হয়েছেন আদালতে।
সকাল থেকে জজ আদালত চত্বরে মোতায়েন করা হয়েছে বিপুল সংখ্যক পুলিশ। আদালত পাড়ায় যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। বিচারপ্রার্থী ও আইনজীবীদের তল্লাশি করে আদালত চত্বরে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে। জেলা ও দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামান সকাল সোয়া ৭টার দিকেই কড়া নিরাপত্তার মধ্যে আদালতে এসেছেন।
সব আসামির সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছে রিফাতের পরিবার। তবে মিন্নিকে নির্দোষ দাবি করে ন্যায় বিচারের প্রত্যাশা জানায় তার পরিবার। আর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা বলছেন, আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তির মাধ্যমে মাইলফলক হয়ে থাকবে এই রায়।
২০১৯ সালের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে রিফাত শরীফকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। হত্যাকাণ্ডের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি হয়। প্রকাশ্যে এমন হত্যাকাণ্ডের পর পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনার মধ্যে ২ জুলাই গোলাগুলিতে মারা যায় অন্যতম আসামি নয়ন বন্ড। এর ১৪ দিন পর মামলার মূল সাক্ষী রিফাতের স্ত্রী মিন্নিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তার হয় মামলার অন্য আসামিরাও। হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেয় স্ত্রী মিন্নিসহ আসামিরা।
এ বছরের পয়লা জানুয়ারি হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগে রিফাতের স্ত্রী মিন্নিসহ ৭ জন এবং আসামিদের পালাতে সহায়তার অভিযোগে ৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় পুলিশ। প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে শেষ হয় ৭৬ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ।
করোনার কারণে ১৬৭ দিন পিছিয়ে যায় বিচার কাজ। সব মিলিয়ে হত্যাকাণ্ডের ৪৬১ দিন পর দেয়া হচ্ছে রায়।
মামলার আসামিরা হলেন- রাকিবুল হাসান ওরফে রিফাত ফরাজী (২৩) আল কাইয়ুম ওরফে রাব্বি আকন (২১), মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত (১৯), রেজোয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয় (২২), হাসান (১৯), মুসা (২২), আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি, রাফিউল ইসলাম রাব্বি (২০), সাগর (১৯) ও কামরুল হাসান সায়মুন (২১)।
মামলার এক আসামি মুসা এখনো পলাতক। অন্যদিকে, অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামির মধ্যে ৮ জন জামিনে ও ৬ জন কিশোর অপরাধ সংশোধনাগারে রয়েছে।