December 2, 2024, 2:10 am

সংবাদ শিরোনাম
৩ আগস্ট মৌলভীবাজারে কর্মসূচি ছিল না, এদিনের ঘটনায়ও মামলা! যশোরে বাংলাদেশ ক্যাডেট সেফটি ফাউন্ডেশনের শুভ উদ্ভোদন ফুলছড়া চা বাগান মাঠে গারোদের ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠান ওয়ানগালা উৎসব পালিত নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল ইংল্যান্ড মৌলভীবাজারে সাধারণ মানুষের মধ্যে মামলা ভীতি : স্বস্তির বদলে আতঙ্ক কালিয়াকৈর উপজেলায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে কারওয়ান বাজার থেকে সাংবাদিক মুন্নী সাহাকে গ্রেপ্তার কুড়িগ্রামে পরিবার পরিকল্পনা অফিসে থাকা-খাওয়ার সুব্যবস্থা রয়েছে সার্বভৌমত্ব-সরকারের নিরাপত্তা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বর্তমান সরকারকে শক্তিশালী না করলে দেশবাসী নিরাপত্তাহীনতা ভুগবে .লে. কর্ণেল (অব.) খন্দকার ফরিদুল আকবর নবী সা. এর সীরাত-ই আমাদের জীবনের পাথেয়: শায়খুল হাদীস আতাউর রহমান

পাহাড়িদের সামাজিক, সাংস্কৃতিক নিরাপত্তার কথা কেউ ভাবছে না -সঞ্জীব দ্রং

অং মারমা বান্দরবান জেলা প্রতিনিধিঃ

আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে অনুযোগের সুরেই

জার্মান সংবাদ মাধ্যম ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ‘‘পাহাড়িদের সামাজিক, সাংস্কৃতিক নিরাপত্তার কথা কেউ ভাবছে না৷ পাহাড়িরা তো অবর্ণণীয় অবস্থায় পড়তে যাচ্ছে৷
ক্রমশ তাদের অস্তিত্ব কঠিন অনিশ্চয়তায় পৌঁছাবে৷ এমনকি পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে

পাহাড়িরা একেবারে  বিলীন হয়ে যাওয়ার আশংকাও তারা করছেন৷একজন পাহাড়ি হিসেবে আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন৷”তিনি আরো বলেন,  ‘‘নাইক্ষ্যংছড়িতে এরইমধ্যে এক রোহিঙ্গা  জনপ্রতিনিধিও নির্বাচিত হয়েছেন৷ তাঁর কাছে তো এমনিতেই আমাদের কেউ কোনো সমস্যার সমাধান পায় না৷আর এই দশ লাখ যদি যোগ হয়, তাহলে যে কী হবে কে জানে৷ তাছাড়া পাহাড়ের অন্যান্য জায়গাতেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি থাকায় দিন দিন আমাদের বলার জায়গা কমছে৷ এসব কেউ দেখে না৷”তিনি হতাশা জানিয়ে বলেন, ‘‘রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে বাংলাদেশে কোনো জায়গা নেই, ঘুরেফিরে পাহাড়েই জায়গা দেয়া হয় সবাইকে৷ বিভিন্ন সময় পাহাড়ে আদিবাসী পুনর্বাসন করা হলেও তারা আসলে সেখানে সংখ্যালঘু৷ তাদের বেশিরভাগই বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী৷ মিয়ানমারে বৌদ্ধরা মুসলমান হত্যা করছে বলে এ দেশের বৌদ্ধদের অনেকেই নানান হুমকিতে পড়ছেন৷ অথচ রোহিঙ্গাদের সাহায্য করতে নিজেদের ফাণ্ড থেকে অনেকেই অর্থ সহায়তাও দিচ্ছেন৷”উল্লেখ্য,বান্দরবান, রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি– এই তিন জেলা নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম৷ সর্বশেষ ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলায় আদিবাসী আগের তুলনায় বেড়েছে ২ লাখ ৫২ হাজার ৫৬৪ জন৷ ২০০১ সালে তিন পার্বত্য জেলায় আদিবাসী ছিল ৫ লাখ ৯২ হাজার ৯৭৭ জন৷ ২০১১ সালে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ লাখ ৪৫ হাজার ৫৪১ জনে৷ তবে এই বৃদ্ধির কারণ, অন্যান্য এলাকা থেকে আদিবাসীদের এ এলাকায় নিয়ে আসা৷ কিন্তু সাম্প্রতিক এই উদ্যোগ বাদ দিলে বিভিন্ন সময়ে নানা কারণে পাহাড়ে আদিবাসীর সংখ্যা ক্রমাগতই কমেছে৷বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রামে আছে ১১টি জনগোষ্ঠীর মানুষ৷ তাদের মধ্যে অহমিয়া, খিয়াং, খুমী, গুর্খা, চাকমা, তঞ্চঙ্গ্যা, রাখাইন, ত্রিপুরাসহ আরও বেশ কিছু জনগোষ্ঠীর বসবাস আছে এসব এলাকায়৷ সরকারি হিসেবে বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ১ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ ২৭টি আদিবাসী গোষ্ঠীর৷স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশে অন্ততপক্ষে দশটি নৃ-গোষ্ঠী হারিয়ে গেছে, বিলুপ্ত হয়েছে তাদের ভাষা, সংস্কৃতি ও ইতিহাস৷ ১৯৪৭ সালে যে পার্বত্য চট্টগ্রামে আদিবাসী জনসংখ্যা ছিল শতকরা ৯৭ ভাগ, ১৯৬১ সালে তা কমে ৮৫ ভাগে দাঁড়ায়৷ ১৯৯৭-এ শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের সময় পার্বত্য চট্টগ্রামে আদিবাসী ছিল শতকরা ৫২ ভাগ৷১৯৯৭ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামের সংক্ষুব্ধ আদিবাসীদের সঙ্গে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর করার পর বিদ্রোহের অবসান হয় এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়৷ তবে এরপরও এ অঞ্চলের পাহাড়ি সম্প্রদায়ের উপর হামলা, নির্যাতন ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা অনেকবার ঘটেছে৷
অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত তাঁর এক গবেষণায় বলেছেন, ২৭ বছর আগে পার্বত্য চট্টগ্রামে আদিবাসী মানুষ ছিল ৭৫ শতাংশ৷ আর এখন তা ৪৭ শতাংশ৷
অর্থাৎ, পার্বত্য শান্তি চুক্তির পরও শতকরা ১০ ভাগ কমেছে৷ অন্যদিকে ঐ অঞ্চলে বাঙালিদের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে৷গত আগস্ট থেকে প্রায় ছয় লাখের মতো রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে৷ এর আগেও বিভিন্ন সময়ে অবৈধভাবে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে পার্বত্য এলাকায় ঢুকেছে রোহিঙ্গারা৷ আগে আসা রোহিঙ্গাদের কেউ কেউ এরইমধ্যে স্থানীয়দের সহায়তায়, প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে ভোটার হয়েছে৷বাংলাদেশে অবস্থানরত প্রায় দশ লাখ রোহিঙ্গারঅধিকাংশই থাকছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বা তার কাছাকাছি এলাকায়৷ এর ফলে এরইমধ্যে পাহাড়িদের সামাজিক, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ও নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে বলেও জানিয়েছেন পাহাড়িরা৷
দেশের মাটিতে পাহাড়ি জনপদের সংকট নতুন নয়৷ গত কয়েক দশকে নিরবচ্ছিন্ন শান্তির মুখ তাঁরা কখনোই দেখেননি৷ ১৯৯৭ সালে শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও তা এখনো পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি৷এরই মাঝে মিয়ানমার থেকে লাখে লাখে রোহিঙ্গাদের আগমনে জেগেছে নতুন শঙ্কা৷

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

প্রাইভেট ডিটেকটিভ/২২ নভেম্বর ২০১৮/ইকবাল

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর