আব্দুল্লাহ্ আল মামুন
রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ন্যাশনাল সার্ভিস ৪র্থ ধাপে নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে প্রায় ২ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা খন্দকার এনামুল কবিরের বিরুদ্ধে প্রকল্পের কোর্স কো অর্ডিনেটর ও দালালদের মাধ্যমে জন প্রতি ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা উৎকোচ গ্রহন করে নিয়োগ প্রদান করার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও গঙ্গাচড়ার স্থায়ী বৈধ প্রার্থীদের কাছ থেকে উৎকোচ না পেয়ে তাদের সার্টিফিকেটসহ কথিত নানা ক্রটি দেখিয়ে আবেদন বাতিল করে তার স্থলে ৩৫-৫০ হাজার টাকার উৎকোচ গ্রহণ করে বহিরাগত প্রার্থী নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এভাবেই ন্যাশনাল সার্ভিসকে বির্তকিত করতে কোর্স কো অর্ডিনেটরকে ব্যবহার করে প্রায় ২ কোটি টাকার নিয়োগ বাণিজ্য করেছেন দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তা এনামুল কবির। এদিকে তার দূর্নীতির ঘটনা গোটা উপজেলায় জানাজানি হলে তিনি ন্যাশনাল সার্ভিসে নিয়োগ নিয়ে সাংবাদিকদের তথ্য প্রদানে গড়িমসি করাসহ সাংবাদিকদের মিথ্যা মামলা দায়ের করারও হুমকি প্রদান করেন। এতে করে গঙ্গাচড়া উপজেলায় প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুত ঘরে ঘরে চাকুরী দেয়ার সুনাম ভেস্তে যেতে বসেছে। তবে দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তা এনামুল কবির তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে স্থানীয় সাংবাদিকদের নামে পাল্টা অভিযোগ করেছেন।
ভুক্তভোগীরা জানান, ২০১৫ সালে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি শুরু হয় উপজেলায় শিক্ষিত বেকার যুবকদের আবেদন যাচাই বাছাই করে তালিকা অনুযায়ী প্রশাসন চারটি পর্বে ভাগ করে উর্ত্তীণ প্রার্থীদের প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করে ১ জুন ২০১৬ সালে। গঙ্গাচড়া মহিলা ডিগ্রী কলেজ মাঠে প্রথম ব্যাচের উদ্বোধন করেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গা এমপি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এই প্রকল্পে যেন বহিরাগতরা অংশ নেয়ার সুযোগ না পায়। প্রতিমন্ত্রীর কথা মতো উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাশেদুল হক যাচাই বাছাই করে ১ম ব্যাচে ১ হাজার জনের মধ্যে বহিরাগত, ভুয়া সনদ, ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য ২৯৩ জনকে বাতিল করেন। পরে এনামুল কবির ২০১৬ সালে দায়িত্ব নেয়ার পর তিনি অনিয়ম শুরু করেন। তিনি অফিস সহকারী দেলোয়ার হোসেন, কোর্স কো-অর্ডিনেটর চিহ্নিত দালালের মাধ্যমে পার্শ্ববর্তী রংপুর সদর, কাউনিয়া, কালীগঞ্জ, বদরগঞ্জ উপজেলার লোকদের নিয়োগ দেয়া শুরু করেন এবং অনেককে নিয়োগ দিয়েছেন। দূর্নীতি বিষয়ে যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা এনামুল কবীর অস্বীকার করে জানান, আবেদন যাচাই করে নিয়োগ কমিটি নিয়োগ প্রদান করেছেন। সময় হলে তথ্য দেয়া যাবে। ২০০৯ সালের তথ্য অধিকার আইন খ ফরমে ন্যাশনাল সার্ভিস ৪র্থ পর্বের তথ্য চেয়ে গত ১৮/১২/২০১৬ তারিখে আবেদন করা হলে ওই দিন সন্ধ্যায় মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সাংবাদিকদের মিথ্য চাঁদাবাজি মামলা করার হুমকি দেয়। অভিযোগ রয়েছে ২য় ব্যাচে বৈধ তালিকায় নাই ও রেজাল্টশীটের নাম পরিচয় নং না থাকলেও সরাসরি তাদের নামে ব্যাংক হিসেব খোলা হয় ও নিয়মিত ভাতার টাকা উত্তোলন করে চলছে। এমনি অভিযোগ পরিচিত নং ৩৩৯৮, ৩৩৯৯, ৪২৯৯, ৫১১২, ৬৩৮৪, ৬৩৬৮, ৫৬১৫, ২৯৪৫ তারা নিয়মিত ভাতার টাকা উত্তোলন করেছেন। অপর দিকে প্রাপ্ত অভিযোগ ৩য় ব্যাচের ৮৩৪, ১১৯১, ১৪২৫, ১৫৫৫, ২৬৬৫, ২৭২৯, ২৬৬৭, ৩৮১০, ৫২১৭, ৩০১৬, ৫৫৬২, ৬৩২৫, ৫৮৭৭, ৫৬৪৯ রেজাল্ট শীটে নাম না থাকলেও ব্যাংক থেকে ভাতার টাকা উত্তোলন করছে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাশেদুল হক বলেন, পূর্বে যারা অনিয়মের সাথে জড়িত ছিলো তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এখনও কেউ যদি থাকে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে। উপজেলাবাসী সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনাসহ দূর্নীতির সাথে জড়িতদের শাস্তি দাবী করেন।