গাজীপুরে ভাবীর পরকীয়ায় বাধা দিতে গিয়ে ছুরিকাঘাতে গাজীপুর ভূমি অফিসের কর্মচারী মনির হোসেন (২৭) খুনের মামলার প্রধান আসামি ভাবী ফাহিমা আক্তারকে (২৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গত বুধবার রাতে গাজীপুর মহানগরীর হাতিয়াব এলাকার ফাহিমার নানা বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে খুনের কথা স্বীকার করেছে। তবে ফাহিমা পুলিশের কাছে একেকবার একেক কথা বলছেন। এ খুনের সঙ্গে আর কে কে জড়িত- তা সে কৌশলে এড়িয়ে যাচ্ছে। তাই এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের পুলিশি রিমান্ড চেয়ে তাকে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে গাজীপুর আদালতে পাঠানো হয়। শুনানি শেষে আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শহিদুল ইসলাম আসামি ফাহিমাকে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
জয়দেবপুর থানার ওসি মো. আমিনুল ইসলাম জানান, পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ফাহিমা জানিয়েছেন মনির তাকে প্রায়ই বিরক্ত করত। ঘটনার রাতে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করতে চাইলে সে ঘরে থাকা ছুরি দিয়ে আঘাত করে মনিরকে হত্যা করে। ভোরে সে শিশুপুত্রকে নিয়ে পালিয়ে প্রথমে নানাবাড়ি হাতিয়াবতে যায়। কিন্তু দেবর খুনের ঘটনা জানাজানি হলে নানা বাড়ির লোকজন তাকে বের করে দেয়। পরে সে কাপাসিয়ায় এক ফুফাত ভাইয়ের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। পুলিশ আতংকে গত বুধবার ফুফাত ভাইও তাকে চলে যেতে বলে।
গত বুধবার সন্ধ্যায় সে আবার নানাবাড়িতে এলে বাড়ির লোকজন আটকে রেখে থানায় খবর দেয়। রাতে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে।
ওসি আরও জানান, ফাহিমা দেয়া সব তথ্য সঠিক নয় বিধায় তাকে রিমান্ড আবেদন করা হয়। খুনের ধরন দেখে মনে হচ্ছে, এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে একাধিক ব্যক্তি জড়িত ছিল। কিন্তু ফাহিমা বলছেন, সে একাই খুন করেছেন। আবার জোরপূর্বক ধর্ষণের কথা বললেও তিনি কীভাবে মনিরের ঘরে কখন গেলেন, সে সম্পর্কে কিছুই স্বীকার করছেন না। স্বর্ণালংকারও তিনি নেননি বলে জানিয়েছেন। এমনকি স্বামীর মোবাইলের কললিস্টও তিনি মোছেননি বলে দাবি করেছেন। রিমান্ডে এসব বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
এদিকে মনির হোসেন খুন হওয়ার পর তার পরিবার ও প্রতিবেশীরা দাবি করে, ভাবীর পরকীয়ায় বাধা দিতে গিয়ে খুন হন মনির হোসেন।
উল্লেখ্য, গত ১৮ অক্টোবর রাতে নিজ শয়নকক্ষে খুন হন দেবর মনির হোসেন। পেটে ১১ ছুরিকাঘাত ও মুখে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করা হয়। পরদিন সকালে ঘটনা জানাজানি হলেও ৮ বছরের শিশুপুত্রকে নিয়ে ভোর থেকে নিখোঁজ ছিলেন ভাবী ফাহিমা। ঘরে আলমারিতে থাকা স্বর্ণালংকারও পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় নিহতের বড় বোন নাজমা আক্তার বাদী হয়ে ফাহিমা আক্তার ও অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।