রংপুর প্রতিনিধিঃ
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, ‘বর্তমান মন্ত্রিসভায় জাতীয় পার্টির তিনজন মন্ত্রী আছেন। আমি নিজেও মন্ত্রীর পদমর্যাদায় আছি। আমরা কিছুদিনের মধ্যে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করব। এ বিষয়টি এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।’ গতকাল শুক্রবার রংপুর সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এরশাদ এসব কথা বলেন।
এরশাদ বলেন, ‘প্রথমত আমাদের কাউকেই মন্ত্রিসভায় নেওয়া ঠিক হয়নি। বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ সংসদে এ বিষয়ে সঠিক কথাটি বলেছেন। তিনি বলেছেন, মন্ত্রিসভায় আমাদের দলের লোক থাকায় দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। অনেক সমালোচিত হয়েছি আমরা। তবে সরকারি দলের সঙ্গে মন্ত্রিসভায় যোগদান করার বিষয়টি ছিল রাজনৈতিক কৌশল। জার্মানিসহ অনেক দেশে এ নজির আছে। তবে আমরা আর মন্ত্রিসভায় থাকতে চাই না।’
বিএনপির সঙ্গে জাতীয় পার্টির জোট করার সম্ভাবনা নেই জানিয়ে এরশাদ বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে বিএনপি আসবে কি না সেই ব্যাপারে আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে। বিএনপি এখন নেতৃত্বহীন হয়ে পড়েছে। তাদের দলে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো নেতা নেই। তার পরও সরকার চেষ্টা করছে, আমরাও মনে করি তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা উচিত।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে এরশাদ বলেন, বিএনপি নির্বাচনে না গেলে তো নির্বাচন বন্ধ হবে না। জাতীয় পার্টি আর আওয়ামী লীগ যদি নির্বাচনে যায়, বিএনপি না গেলেও সেই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে।
এরশাদ আরো বলেন, ‘আমরা আগামী ২৪ মার্চ ঢাকায় মহাসমাবেশের তারিখ ঘোষণা করেছি। আশা করছি সেখানে পাঁচ লাখ মানুষের সমাবেশ হবে। আমরা দেখাতে চাই জাতীয় পার্টি কতটা শক্তি সঞ্চয় করেছে। আগামী দিনে আমরা জনগণের রায় নিয়ে এককভাবে ক্ষমতায় যেতে চাই। আমাদের মূল লক্ষ্য হবে মহাসমাবেশের মাধ্যমে দেশের
মানুষকে দেখানো যে আমরা নির্বাচন করে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য প্রস্তুত।’
এর আগে এরশাদ ঢাকা থেকে বিমানযোগে সৈয়দপুরে অবতরণ করার পর সড়কপথে রংপুর সার্কিট হাউসে এসে পৌঁছেন। সেখানে দলের নেতাকর্মীরা তাঁকে স্বাগত জানান। এ সময় দলের মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার, কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়াউদ্দিন বাবলু, রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা এরশাদের সঙ্গে ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ মন্ত্রিসভা থেকে দলটির সদস্যদের পদত্যাগ করার নির্দেশ দিতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, তাঁরা দেশ-বিদেশে নিজেদের পরিচয় দিতে পারেন না। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে লজ্জা লাগে। কারণ সবাই জানতে চায় জাতীয় পার্টি সরকারি দল না বিরোধী দল?