শামীম মীর,গৌরনদী প্রতিনিধি::
ফ্যাসিষ্ট শেখ হাসিনা ক্ষশতাসীন থাকাকালীন সময়ে বরিশালের গৌরনদী প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও দৈনিক প্রথম আলোর গৌরনদী প্রতিনিধি সিনিয়র সাংবাদিক জহুরুল ইসলাম জহিরের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা থেকে অব্যহতি দিয়েছে আদালত। গত ২৩ জানুয়ারি বরিশাল জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেড চতুর্থ বিচারিক আদালতের বিচারক আফসান শারমিন ইভা এ রায় প্রদান করেন। এ মামলার অব্যহতির মধ্য দিয়ে জহিরের বিরুদ্ধে দায়ের করা ৫টি মিথ্যা মামলার সকল মামলা থেকে অব্যহতি পেলেন সিনিয়র সাংবাদিক জহুরুল ইসলাম জহির। মামলা থেকে অব্যহতি পাওয়ায় প্রতিক্রিয়ায় জহুরুল ইসলাম জহির বলেন, মামলার রায়ে সত্য ও ন্যায়ের জয় হয়েছে। মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করা যায় কিন্তু মিথ্যা প্রতিষ্ঠিত হয় না।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ২৮ ফেব্রæয়ারি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও গৌরনদী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. অসাদুজ্জামান খান আদালতে সাংবাদিক জহিরের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দিলে গৌরনদী আমলী আদালতের বিচারক মো. ইফতেখার আহম্মেদ অভিযোগপত্র গ্রহন করে মামলাটি বিচারিক আদালতে প্রেরন করেন। গত সাড়ে ৬বছর মামলাটি বিচারাধীন থাকার পর গত ২৩ জানুয়ারি স্বাক্ষ্য গ্রহন শেষ হয়। গত ২৩ জানুয়ারি বরিশাল জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেড চতুর্থ বিচারিক আদালতের বিচারক আফসান শারমিন ইভা নির্দোশ প্রমানিত হওয়ায় মামলা থেকে জহুরুল ইসলাম জহিরকে অব্যহতি দেন। জহির বলেন, মামলার রায়ে সত্য ও ন্যায়ের জয় হয়েছে। মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করা যায় কিন্তু মিথ্যা প্রতিষ্ঠিত হয় না। আসামি পক্ষের আইনজীবি ছিলেন এ্যাডভোকেট আব্দুর রহমান চোকদার ও শেখ আব্দুল কাদের।
স্থানীয় লোকজন, সাংবাদিক ও পুলিশ সুত্রে জানাগেছে, সিনিয়র সাংবাদিক জহুরুল ইসলাম জহির গত ২৬ বছর দৈনিক প্রথম আলোর বরিশালে গৌরনদী, আগৈলঝাড়া ও উজিরপুর উপজেলার দায়িত্ব পালন করেন। আওয়ামীলীগের ক্ষমতাসীন সময়ে গত ১৬ বছর দক্ষিনাঞ্চলের গডফাদার বরিশাল-১ আসনের সাংসদ আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ ও তার প্রধান সেনাপতি দাবনখ্যাত গৌরনদী পৌর সভার মেয়র মোঃ হারিছুর রহমানসহ তার বাহিনীর সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, দখল ও দূনীতির বিরুদ্ধে লেখনি অব্যহত রাখেন সাংবাদিক জহির। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে হয়রানী করতে একের পর মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। এজাহার সূত্রে জানা গেছে, মেয়র হারিছুর রহমান তার অনুগত গৌরনদী উপজেলা ছাত্রলীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক ও ইউপি সদস্য মোঃ রাসেলের স্ত্রী রুপা আক্তারকে দিয়ে ২০১৮ সালের ২৯ জুন প্রথম আলোর সাংবাদিক জহিরকে আসামি করে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (সংশোধন) আইন ২০১৩ ৫৭(২) ধারায় একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। তৎকালীন আইজিপির হস্তক্ষেপে ও পুলিশ সদর দপ্তরের অনুমতি না পাওয়ায় মামলা থেকে অব্যহতি পান জহির। এ মামলায় জহিরকে আটকাতে ব্যর্থ হয়ে পরবর্তিতে ২০১৮ সালের ৫ জুলাই হয়রানীর উদ্দেশ্যে জহুরুল ইসলাম জহিরকে আসামি করে ছাত্রলীগ নেতার স্ত্রী রুপা আক্তার গৌরনদী মডেল থানায় একটি মানহানি ও শ্ল¬ীলতাহানির মামলা করেন। সুপ্রিমকোর্টের হাইকোট বিভাগের বিচারপতি ইনায়েতুর রহিম ও মো. মোস্তাফিজুর রহমানের দ্বৈত বেঞ্চের শুনানীন্তে এক আদেশে প্রথম অলোর গৌরনদী প্রতিনিধি জহুরুল ইসলাম জহিরের ৬মাসের অর্ন্তবতিৃতালীন আগাম জামিন পান জহির। এছাড়া সাংবাদিক জহিরকে হয়রনী করতে হারিছুর রহমানের নির্দেশে হামলা ও হত্যার চেষ্টা মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে সি, আর মামলা নং-১৭৮/২০১৭ইং মামলার তারিখ ঃ ১০/২/২০১৭ইং ও নারী নির্যাতন ও সন্ত্রাসী হামলা লুটের ঘটনা দেখিয়ে এম,পি কেস নং-৮৭/২০১৭ইং মামলার তারিখ ঃ ১৪/৩/২০১৭ইং মামলা দায়ের করেন। আদালতে অভিযোগ মিথ্যা প্রমানিত হওয়ায় এ মামলা থেকে বিচারক আগেই জহিরকে অব্যহতি দেন। এ ছাড়া প্রথম আলো পত্রিকায় পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপকর্মে নিউজ হওয়ায় নভেম্বর ২০১৭ইং থেকে জুলাই ২০১৮ পর্যন্ত ফ্যাসিষ্টের পদলেহনকারী হারিছুর রহমানের অনুগত ওসি ফিরোজ কবির জহুরুল ইসলাম জহিরকে ক্রস ফায়ার দেয়ার ষরযন্ত্র করেন এবং জহিরের বিরুদ্ধে ১১টি জিডি করেন হারিস বাহিনী।
১৯৯৬ সালে আওয়ামীলীগ ক্ষমতা গ্রহনের পর দলীয় নেতাদের সন্ত্রাস, ধর্ষন, লুটপাট, চাদাবাজি, টেন্ডারবাজি নিউজ প্রকাশ করায় দক্ষিন বঙ্গের গড ফাদারের আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর নির্দেশে ২০০১ সালের ১৬ জুলাই অনন্যা ভবনে ঢুকে অস্ত্রধারী শতাধিক ছাত্রলীগ নেতারা ফ্যাক্স ফোনসহ মালামাল লুটপাট করে। তাকে বিশাক্ত ইনজেকশন পুশ করে হত্যার চেষ্টা চালায় । যা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সাংবাদিকতা অঙ্গনে প্রতিবাদের ঝরসহ আলোচিত ছিল।
শামীম মীর
গৌরনদী (বরিশাল) প্রতিনিধি