খন্দকার সোহেল রানা সৈকত-সিলেট:
সিলেটের কানাইঘাটের শিশু মুনতাহা আক্তার জেরিন (৬) কে হত্যা করেছে তার গৃহশিক্ষিকা সুমি। এতে সুমিক সহযোগীতা করেন তার মা। রোববার (১০ নভেম্বর) ভোরে সুমির মা মুনতাহার মরদেহ অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার সময় হাতেনাতে ধরা পড়েন।
এমনটি জানিয়েছেন কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল আওয়াল। তিন জানান, এ ঘটনায় গৃহশিক্ষিকা সুমি এবং তার মা ও মেয়েকে আটক করা হয়েছে। তারা তারা মুনতাহাদের পশের বাসারই বাসিন্দা। ৮ দিন নিখোঁজ থাকার পর রোববার ভোর চারটার দিকে মুনতাহার নিজ বাড়ির পুকুরে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এর আগে গত ৩ নভম্বের দুপুর থেকে নিখোঁজ ছিলো সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার এই শিশু। মুনতাহা উপজেলার সদর ইউনিয়নের বীরদলের ভাড়ারিফৌদ গ্রামের শামীম আহমদের মেয়ে। মুনতাহার নিখোঁজের ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক তোলপাড় হয়। তার সন্ধান চেয়ে দেশ-বিদেশে অনেকে পুরষ্কারও ঘোষণা করেন।
কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল আওয়াল বলেন, গত রাতেই (শনিবার) সন্দেহবশত আমরা মুনতাহার গৃহশিক্ষিকা সুমিকে ধরে নিয়ে আসি। তার কথাবার্তা অসংলগ্ন মনে হচ্ছিলো। তখন গৃহশিক্ষিকা বাড়ির দিকে নজর রাখার জন্য রাতেই আমরা মুনতাহার পরিবারের সদস্যদের বলি।
তিনি বলেন, ভোরের দিকে মুনতাহার পরিবারের সদস্যরা দেখতে পান বাড়ির পাশের একটি ছড়ার মাটি খুঁড়ে মুনতাহার মরদের পাশের পুকুরে ফেলে দেন ওই গৃহশিক্ষিকার মা। সাথে সাথে আমাদের খবর দিলে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করি এবং গৃহশিক্ষিকার মা ও তার নাতনীকে ধরে নিয়ে আসি।
ওসি বলেন, আমাদের জিজ্ঞাসাবাদে গৃহশিক্ষিকা ও তার মা মুনতাহাকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। তবে কি কারনে হত্যা করা হয়েছে তা এখনও জানা যায় নি। এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে। পূর্ব বিরোধের কারণে এটি হয়ে থাকতে পারে।
মেয়ের মরদেহ উদ্ধারের তথ্য নিশ্চিত করে মুনতাহার বাবা শামীম আহমদ বলেন, মরদেহ এখন ময়না তদন্তের জন্য ওসমানী হাসপাতাল মর্গে আছে।
এরআগে মুনতাহার পরিবার দাবি করে, তাকে পরিকল্পিতভাবে ‘অপহরণ’ করা হয়েছে। এ ঘটনায় কানাইঘাট থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী দায়ের করা হয়েছিলো। ‘অপহরণকারীকে’ ধরিয়ে দিতে এক লাখ টাকা পুরুস্কারও ঘোষণা করা হয়েছলো।
গত ৩ নভেম্বর সকালে বাবার সঙ্গে স্থানীয় একটি ওয়াজ মাহফিল থেকে বাড়ি ফিরে মুনতাহা। পরে প্রতিদিনের মতো আশপাশের বাড়িতে শিশুদের সঙ্গে খেলাধুলা করতে যায়। কিন্তু বিকেলে হলে বাড়ি না ফিরলে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। তারপর তাকে আর কোথাও পাওয়া যায়নি।