অবুঝ দুই শিশু কন্যা, একটির বয়স ৬, আরেকটির বয়স ৯। দুই কন্যা শিশুকে ধর্ষণ করেছে তাদেরই আপন পিতা- ধর্ষক মোঃ আবুল কালাম ওরফে ড্রাইভার রাজু (৪০)। ১২ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার তার স্ত্রীর দায়ের করা মামলায় হাটহাজারী থেকে তাকে আটক করে কারাগারে পাঠিয়েছে হাটহাজারী মডেল থানা পুলিশ।
চট্টগ্রাম সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ এর সিনিয়র জজ হোসেন মোহাম্মদ রেজার খাস কামরায় ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেছে ধর্ষক আবুল কালাম রাজু। বিজ্ঞ আদালত তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হাটহাজারী মডেল থানার পুলিশ উপ-পরিদর্শক মোঃ খলিলুর রহমান জানান, খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়ি থানাধীন বোথাছড়ি ইউনিয়নের মৃত আবদুস সালামের পুত্র ধর্ষক আবুল কালাম ওরফে রাজু ড্রাইভার এ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি বিয়ে করেছে। ৪ মাস পূর্বে সে নোয়াখালী জেলার মাইজদী থানা এলাকার তালাকপ্রাপ্ত এক পোশাক শ্রমিককে বিয়ে করে। ওই পোশাক শ্রমিকের আগের ঘরের ৬ বছরের এক কন্যা সন্তান রয়েছে। আবুল কালাম তার পূর্ববর্তী স্ত্রীর ৯ বছরের মেয়েকে নিয়ে হাটহাজারীর চিকনদন্ডী ইউনিয়নে বাস করে।
জীবিকার তাগিদে ওই পোশাক শ্রমিক চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে বিকাল ৩টা-রাত ১২টা পর্যন্ত হাটহাজারী থানাধীন বালুচরা এলাকার একটি কারখানায় রাতের পালায় কাজ শুরু করেন। গত সোমবার স্ত্রীর কর্মস্থলে যাওয়ার সুযোগে সে তার ৯ বছর বয়সী কন্যাকে ঘরের দরজা বন্ধ করে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।
রাতে তার স্ত্রী বাসায় ফিরে মেয়ের কাছ থেকে ঘটনা শুনে স্বামীকে জিজ্ঞাসা করেন। এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে স্ত্রীকে মারধর করে তালাকের ভয়ভীতি দেখায় ড্রাইভার রাজু। জিদের বশে পরদিন মঙ্গলবার স্ত্রী কর্মস্থলে গেলে রাজু তার ৬ বছরের কন্যাকেও ধর্ষণ করে। ওই রাতে ২ মেয়েকে ধর্ষণের মতো জঘণ্য কাজের জন্য গালাগাল করলে রাজু তার স্ত্রীকে বেদম মারধর করে।
এরপর গত বুধবার সন্ধ্যায় স্ত্রীর অনুপস্থিতিতে রাজু আগের মতো তার ৯ বছর বয়সী কন্যাকে আবারও ধর্ষণ করে। শেষ পর্যন্ত ২ কন্যাকে নিয়ে রাজুর স্ত্রী হাটহাজারী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে বুধবার মামলা (নং-১৮) দায়ের করেন। হাটহাজারী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ জহির উদ্দিনের নেতৃত্বে ধর্ষক মোঃ আবুল কালাম ওরফে রাজু ড্রাইভারকে বুধবার মধ্যরাতে হাটহাজারী উপজেলার নতুন পাড়া এলাকা থেকে আটক করা হয়।
১২ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির করা হলে সে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে। আদালত তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন। ধর্ষক রাজু ড্রাইভারের স্ত্রী কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনায় আমি আমার স্বামীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। তার ফাঁসী হওয়া উচিৎ।
হাটহাজারী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ বেলাল উদ্দিন জাহাঙ্গীর ঘটনাটি সম্পর্কে প্রতিবেদককে বলেন, চট্টগ্রাম সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ এর সিনিয়র জজ হোসেন মোহাম্মদ রেজার খাস কামরায় ১৬৪ ধারায় ধর্ষণের ঘটনা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেছে ধর্ষক রাজু ড্রাইভার।