January 16, 2025, 11:33 pm

সংবাদ শিরোনাম
শিবচরে খানকান্দি দৈয়দ আশরাফ আলী উচ্চ-বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নবীন বরণ শিবচরে খানকান্দি দৈয়দ আশরাফ আলী উচ্চ-বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নবীন বরণ টেকনাফ ২ বিজিবি”র অভিযানে আটক-৬ লক্ষ্মীপুরে তিন পুলিশ সদস্যকে পেটালেন সিএনজি চালকরা মধুপুরে জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের উদ্যোগে কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত বেনাপোলে বিজিপি বিএসএফ সেক্টর কমান্ডার পর্যায়ে সীমান্ত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হারিয়ে যাওয়া মায়ের খোঁজে দিশেহারা সন্তানরা ভিসা জটিলতায় বেনাপোল বন্দরে পরিবহন ব্যাবসার ধ্বস তেজগাঁও থানা ছাত্রদলের শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচি সম্পন্ন শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি প্রজেক্টরে ভেসে উঠায় স্থানীয় জনতার প্রতিবাদ

ক্ষেতলালে বিনাই মাদ্রাসা সুপার বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ

এস এম মিলন জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধিঃ
জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে প্রত্যন্ত অঞ্চল বড়াইল ইউনিয়নের বিনাই দারুল উলুম দাখিল মাদ্রাসার সুপারের বিরুদ্ধে একের পর এক অনিয়মের অভিযোগ উঠছে। অভিযোগকারী শিক্ষক-কর্মচারী ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সহ স্থানীয়রা বলছেন- মাদ্রাসার সুপার রেজাউল করিম মাদ্রাসায় নিয়মিত অনুপস্থিত থাকছেন। পাশাপাশি মাদ্রাসায় ভুয়া বিল ভাউচার রেজুলেশন স্বাক্ষর করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
মাদ্রাসার সাবেক সুপার মাওলানা আবুল হক  জানান, ইসলাম শিক্ষা প্রসারে ১৯৭৩ সালে স্থানীয় শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিরা বাশ-কাঠ টিন সহ জমি অনুদান দিয়ে জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের বিনাই গ্রামে বিনাই দারুল উলুম দাখিল মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর প্রতিষ্ঠানটির প্রসার ঘটতে থাকে।
পড়াশোনা ভাল হওয়ায় এমপিওভুক্তি হয় এবং স্থাপনা নির্মাণ হয়। বিগত ১৯ ৯২ সালে রেজাউল করিম সহকারী মৌলভি হিসেবে যোগদান করেন। পরে পদন্নোতি পেয়ে সহ সুপার হন। নিজের ক্ষমতার দাপটে সাবেক সুপার আব্দুল হককে জোর পূর্বক স্বাক্ষর নিয়ে লক্ষাধিক টাকার বিনিময়ে ডিজিটাল পদ্ধতিতে মাদ্রাসায় সুপার পদে নিয়োগ নেন। এরপর তিনি নানা দুর্নীতি জড়িয়ে পড়েন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মাদ্রাসার একাধিক শিক্ষক শিক্ষিকারা জানান, আমাদের উপর শারীরিক ও মানসিকভাবে অত্যাচার নির্যাতন করেন তিনি। আমরা মেয়ে মানুষ, প্রকৃতির নিয়মে চলতে হয় আমাদের। তাই মাদ্রাসায় আসতে ৫ /১০ মিনিট বিলিম্ব হতেই পারে। এর জন্য তিনি আমাদের অশ্লীল ভাষা ব্যবহার  করেন। এ নিয়ে এক পর্যায়ে জেলা শিক্ষা অফিসে আমাদের যেতে হয়েছে৷ যে কজন প্রতিবাদ করেন তাদের নানা অপমান-অপদস্ত হতে হয়।
মাদ্রাসা ছাত্র মোস্তাকিন বিল্লাহ বলেন, আমার শিক্ষক হলে কি হবে, তিনি একজন দুর্নীতি–মামলাবাজ ও পল্টিবাজ লোক। নিজ স্বার্থের জন্য গ্রামবাসীর মধ্যে দুটি গ্রুপে বিভক্ত করে রেখেছে। দল পাল্টানোর ওস্তাদ। তিনি জামায়াতের কর্মী। সহ সুপার নিয়োগে অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগে নিয়োগ বোর্ডের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন ওই মামলার বাদী  ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুল ওহাব৷ ছাত্র নির্যাতন সহ ইভটিজিং মামলা দিয়ে ফাঁসানোর হুমকি দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে তার বিরুদ্ধে।
ক্ষেতলাল উপজেলার বিনাই দারুল উলুম দাখিল মাদ্রাসায় নিয়োগ পাওয়া শিক্ষক বাদল চন্দ্র গত ২ জানুয়ারী সাংবাদিকদের জানান, তিনি নিজেই তিন দফায় ২০ হাজার ৫০০ টাকা দেওয়ার পর তাঁর ফাইল প্রসেস করা হয়েছে। আমাকে প্রচুর মানষিক হয়রানী করা হয়েছে।  আমি অসহায় পরিবারের সন্তান, এই চাকরি পৃর্বে প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করতাম। এখানে করোনার মধ্য (২৯জানুয়ারি) ২২ ইং যোগদান করেছি৷ ওই কোম্পানির ক্লিয়ারেন্স দিয়ে আমি মদ্রাসায় নিয়িমিত ডিউটি করছি।  গত ২৭/২৮ সরকারি ছুটি সুপার আমাকে অনুপস্থিত দিখিয়েছে হাজিরা খাতায়, সে আরও এক মাসের বেতন দাবি করেন। এভাবে প্রতিনিয়ত আমাকে হেরেজ করা হচ্ছে এবং প্রতিবাদ করলেই হত্যার হুমকি দিচ্ছেন৷
অভিযোগ মিলেছে, সম্প্রতি এন টি আর সিএর মাধ্যমে সুপারিশ প্রাপ্ত ক্ষেতলাল উপজেলার বিনাই দারুল উলুম দাখিল মাদ্রাসায় ইংরেজি বিষয়ে পড়ানোর জন্য নিয়োগ পান বাদল নামের এক শিক্ষক। এরপর এমপিওর জন্য আবেদন করেন তিনি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে। উপজেলা থেকে ফাইল জেলায় পাঠাতে তাঁকে ঘুষ দিতে হয়েছে মোট ২৫  হাজার টাকা। এই টাকা না দিলে সুপার রেজাউল করিম ফাইল প্রসেসিং করতেন না।
এমপিও প্রার্থী শিক্ষক-কর্মচারীদের হয়রানির ফাঁদে ফেলে ঘুষ আদায়ের মূল কারিগর বিনায় দারুল উলুম মাদ্রাসার সুপার রেজাউল করিম যাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে এমপিওর নাটাই। অসহায় শিক্ষক-কর্মচারীদের নাকে হয়রানির দড়ি লাগিয়ে তাঁর ইচ্ছামতো ঘুরিয়ে-চড়িয়ে নাজেহাল করে ছাড়ছেন। আর নিজেদের আড়ালে রেখে পকেট ভরছেন।
জানতে চাইলে সুপার মাওলানা রেজাউল করিম বলেন, শিক্ষক বাদল মাদ্রাসায় ইংরেজি শিক্ষক হয়ে এন টি আর সি থেকে সুপারিশ প্রাপ্ত হয়েছেন। আমরা তাকে যোগদান করে নিয়েছি৷ আমি এমপিও আবেদনের জন্য টাকা নিয়েছি তার বিলের জন্য। মাদ্রাসার জমির খারিজ বাবদ ১০ হাজার নিয়েছি। অন্যনান্য আনুষাঙ্গিক মাদ্রাসার অনুদানের জন্য ১৫ হাজার এবং  মাদ্রাসার রসিদ দিয়ে দুই হাজার নিয়েছি৷ বাবা আপনারা নিউজ করলে করেন৷ আমি হজ্বে যাবো, হজ্ব করে এসে চাকরি থাকে থাকবে, না থাকলে না থাকবে৷ বাদল সাংবাদিকদের তুমি  দুই হাজর টাকা দাও৷
মাদ্রাসার সাবেক সভাপতি ও বড়াইল ইউপি সদস্য সাবু মিয়া বলেন, সুপার রেজাউলের সকল কার্যকালাপ দূর্নীতি অনিয়ম ওই মাদ্রাসার শিক্ষক শিক্ষিকাদের জিম্মি করে অর্থ আদায় করা আর সুপার নিজেই ঠিক মত মাদ্রাসয় আসে না৷ বিনা কারনে সহকর্মীদের অনুপস্থিত শোকজ করে চাঁদা দাবি করেন৷
মাদ্রাসার সদস্য আব্দুল ওহাব বলেন, এটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। সুপারের অসৎ আচরনে শিক্ষার্থী ভর্তি হতে চায়না। তিনি বিখ্যাত সুদারু, একজন সুপারের এহেন কর্মকান্ডে আমরা হতাশ। মাদ্রসার প্রায় এক একর জমি আয়ব্যয় সহ ভুয়া বিল ভাউচার করে প্রতিষ্ঠানটিকে ধ্বংস করেছে। আমরা এই ঘুষ খোর চাঁদাবাজ দাদন ব্যবসায়ী শিক্ষর্থী সহ সহকর্মীদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণে ক্ষুব্দ গ্রামবাসি এই সুপারের পদত্যাগ সহ মাদ্রাসার শিক্ষার মান ও পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জোর দাবি জানায়৷
এ ব্যাপারে ক্ষেতলাল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ছফিউল্লাহ সরকার বলেন, মাদ্রাসার বিষয়ে কেও অভিযোগ করেনি। অভিযোগ আমাদেরে কাছে আসলে আমরা তদন্ত সাপেক্ষে আইনত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর