ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমানঃ
দেশে এযাবৎ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ৬৫,৭৬৯ এবং মৃত্যু ৯৩০ জনের।সরকার, ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ, সাংবাদিকসহ সকলেই চেষ্টা করছে এই রোগ থেকে সতর্ক থাকার পরামর্শ ও চিকিৎসা দিয়ে আসছে। অনেক করোনা হাসপাতাল থাকলেও এ রোগকে কোনভাবেই প্রতিরোধ করা যাচ্ছে না। দিন দিন আক্রান্ত ও মৃত্যু বেড়েই চলেছে। সরকারের শত চেষ্টায় সত্ত্বেও জনগণকে এই ব্যাপারে পুরোপুরি সচেতন করা সম্ভব হচ্ছে না।আমেরিকা, ব্রিটেন, ইতালি, স্পেন, ব্রাজিলসহ উন্নত বিশ্বের দেশগুলিতে পাল্লা দিয়ে মৃত্যুর হার বাড়ছে। কোনভাবেই মৃত্যুর লাগাম টেনে ধরতে পারছে না। সেই ক্ষেত্রে বাংলাদেশে আল্লাহ্র অশেষ রহমতে মৃত্যুর হার তুলনামুলক অনেক কম। সারাদেশে গত দু’মাসের অধিককাল লকডাউন দেওয়ার পরও জনগণকে সচেতন করা সম্ভব হয় নি। বাধ্য হয়ে সরকার সাধারণ ছুটি না বাড়িয়ে অফিস আদালত, গণ-পরিবহন খুলে দিয়েছে শারিরিক দূরত্ব, মুখে মাস্ক পরা ও হাতে গ্লাভস ও গণ-পরিবহনে উঠার আগে হ্যান্ড স্যানিটাইজ করার বিধি আরোপ করেছে। অথচ প্রতিদিনই পাল্লা দিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এমত অবস্থায় এলোপ্যাথি চিকিৎসকরা যেখানে করোনা রোগীদের আক্রান্ত ও সেবায় হিমশিম খাচ্ছে সেখানে বাংলাদেশের একদল হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক করোনা রোগের চিকিৎসায় সরকার ও জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে চিকিৎসা সেবা দেওয়ার মহৎ উদ্ব্যোগ নিয়েছে। বঙ্গবন্ধু হোমিওপ্যাথিক বিশ্ববিদ্যালয় ও হাসপাতাল (প্রস্তাবিত) উদ্যোক্তা ডাঃ সাখওয়াত ইসলাম (ভুঁইয়া) এভারগ্রীন হোমিও হোম সার্ভিসের প্রতিষ্ঠাতা ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান,পাবনা হোমিও হলের মালিক মিরপুরের ডাঃ রফি্কুল ইসলাম, এনেক্স ফার্মার প্রতিষ্ঠাতা গাজীপুরের ডাঃ মোজাম্মেল হক প্রাক্তন অধ্যক্ষ ময়মনসিংহ হোমিও ডিগ্রি কলেজ ও গাজীপুরের ডাঃ রায়হান এর উদ্ব্যোগে হোমিওপ্যাথির লক্ষণভিত্তিক চিকিৎসায় করোনার রোগের চিকিৎসায় ব্যাপক সফলতা অর্জন করেছে। শুধু তাই নয় এখনো দেশের সিংহভাগ মানুষ করোনার আওতামুক্ত, তাদের প্রতিষেধক ও করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের এলোপ্যাথির পাশাপাশি হোমিও চিকিৎসার মাধ্যমে দেশ থেকে করোনাকে বিদায় দিয়ে দেশের মানুষকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।এই বিষয়ে ডাঃ সাখওয়াত ইসলাম (ভুঁইয়া) তার দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে এলোপ্যাথি ডাক্তারদের নিয়োগের মত হোমিও বিএইচএমএস ডাক্তারদের জরুরি নিয়োগের মাধ্যমে সরকারি হাসপাতালগুলিতে একটি করে হোমিও ইউনিট করার প্রস্তাব দেন। সেক্ষেত্রে হোমিওতে সর্বশেষ নিয়োগের লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ যাদের বাদ দেওয়া হয়েছে তাদের নিয়োগের মাধ্যমে এই প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। করোনা চিকিৎসার সাফল্য হিসেবে ডাঃ সাখওয়াত ইসলাম (ভুঁইয়া) ইতিমধ্যে পুলিশ প্রশাসনের অনুমতিক্রমে সারাদেশে পুলিশ বাহিনীর মধ্যে করোনার প্রতিষেধক বিতরণ করেছেন। তার দাবী রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালের ৫০ জন করোনা পজেটিভ রোগীর মধ্যে হোমিও ঔষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে প্রায় ৪৭ জনকে করোনা নেগেটিভে পরিণত করা সম্ভব হয়েছে। তাই তিনি সরকারের মাধ্যমে অধিক হোমিও ডাক্তার নিয়োগের মাধ্যমে করোনা চিকিৎসায় সরকারের সফলতাসহ জনগণকে করোনার হাত থেকে রক্ষা তথা দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি অব্যাহত রাখার আহবান জানান।
করোনা নিয়ে কিছু কথা:
করোনা বা Covit-19 virus এ সংক্রমন রোগ কোন মরন ব্যাধি নয়।করোনায় আক্রান্ত রোগীদের বাঁচার সম্ভবনা থাকে ১০০% যদি না সেই রোগীর অন্য কোন পুরাতন বা ক্রনিক রোগ না থাকে। বয়স্কদের একটু ঝুকি থাকলেও ৫০ এর নীচে বয়সের কোন পুরাতন রোগ হীন সুস্থ্য ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হলে মৃত্যুর ঝুকি একেবারেই নেই। যদি এর ব্যতিক্রম হয় তা হলো ডাক্তারের অবহেলা/ গুজব/ অন্য কোন কারন হতে পারে।
আগে জানা যাক – মানুষ কিভাবে রোগে আক্রান্ত হয়? আর জীবনী শক্তিই বা কি?
স্যামুয়েল হ্যানিম্যান ( হোমিওপ্যাথির আবিষ্কারক) বলেছেন, মানুষ তিন ভাবে রোগাক্রান্ত হয়।
কোন ব্যক্তির জীবনী শক্তি সুস্থ্য থাকলে তার করোনা আক্রমন করতে পারে না। যেমন:
বগুড়ায় এক করোনা রোগাক্রান্ত স্বামীর সেবা করার পরেও স্ত্রীর শরীরে করোনা নেগেটিভ এসেছে। তথ্যসুত্র: কালের কন্ঠ ১০ এপ্রিল,২০২০
সময় মত খাওয়া-দাওয়া, পরিষ্কার-পরিচ্ছুন্নতা, পরিমিত ঘুম, চলাফেরা প্রাকৃতিক নিয়মে বা স্বাভাবিক নিয়মে হলে জীবনী শক্তি সুস্থ্য-সবল থাকে।
হ্যানিম্যান এই নব চিকিৎসার (হোমিওপ্যাথি) আবিষ্কার করতে গিয়ে নানা ধরনের নির্যাতনের স্বীকার হয়েছিলেন । তিনি তার অর্গননে ( হোমিও চিকিৎসার নিয়ম নীতির গ্রন্থ) বলেছেন, একটি ফলে তখনই পোকা আক্রমন করে যখন ফলটি পচন শুরু হয় বা প্রতিরোধ পাওয়ার কমে যায়।
যেমন: একই ডালে বা বোটায় দুটি ডালিম থাকলে অনেক সময় দেখা যায় একটি ডালিম ভালো আর অন্যটি পোকায় আক্রান্ত। আবার পাশের ডালের ডালিমটিও পোকা আক্রান্ত। পোকা কি অভাব ছিল , একই ডালে দুটি ডালিম থাকার পরেও কেন অন্য ডালের ডালিমকে পোকা আক্রমন করল।
পুরো বস্তুবাদী পৃথিবী তার বিরুদ্ধাচরন করেছিলেন। সকলে বলেছিল, পোকা আক্রমন করেছিল বলেই ডালিম/ ফলের পঁচন শুরু হয়েছিল। এর বিপরীতে হ্যানিম্যান বলেছিলেন, ফলটি পঁচতেছে বলেই পোকা আক্রমন করেছে। পরবর্তীতে হ্যানিম্যানের মতবাদই সত্য প্রমানিত হয়।
তদ্রুপ- সুস্থ্য সবল জীবনী শক্তি সম্পন্ন কোন ব্যক্তিকে করোনা আক্রমন বা সংক্রমন করতে পারে না। সেই ব্যক্তিকে করোনা আক্রান্ত করবে যার জীবনী শক্তি দুর্বল বা নানা ধরনের দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত।
জীবনী শক্তি সুস্থ্য রাখার উপায় সমুহ:
১. পরিষ্কার-পরিচ্ছুন্নতা থাকা।
২. সময় মত স্বাস্থ’্যকর খাবার খাওয়া।
৩. সময় মত ও পরিমার মত ঘুমানো।
৪. ধর্মীয় নিয়ম নীতি মেনে চলা।
৫. সকলের সাথে সদ্বাচরন বা ভালো ব্যবহার করা।
৬. মিথ্যা কথা না বলা, যেনা-ব্যাভিচার না করা, সুদ,ঘুস ও আমানত আত্মসাৎ না করা সহ সকল প্রকার অন্যায় কাজ থেকে বিরত থাকা।
বর্তমানে বাংলাদেশে করোনা রোগীদের নিয়ে যে নাটক বা সারকাস:
চায়নার ওহান থেকে বিশে^ করোনা ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ার শুরুতেই বাংলাদেশ সরকার সকল প্রকার পদক্ষেপ ( সাধারন ছুটি, কোয়ারেনটাইন, আইসোলেশন, লকডাউন ইত্যাদি) নেওয়ার পরও দেখা গেল যে, পর্যাপ্ত ডাক্তাদের অভাব, পিপিই এর অভাব, করোনা সনাক্তের কিট সহ বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হোন। বে-সরকারী টিভি চেনেল, সামাজিক গণ মাধ্যম যেমন: ফেসবুক, ইউটিউব,ইমো ইত্যাদির মাধ্যমে যে অসংগতি দেখতে পাওয়া যায় তা বিশ^াস করার মত না।
হাসপাতাল গুলোতে কোন রোগী আসলে করোনা ভেবে ভর্তি না করা এবং করোনা রোগীদের ডাক্তার বা নার্স ঔষধ না দিয়ে হাসপাতালের ওয়াড বয়/ সুইপারদের মাধ্যমে ওষধ দেওয়ার ঘটনা ঘটে।
ডাক্তারেরা হাসপাতাল থেকে পালানোর ঘটনাও ঘটে।
যে ডাক্তারেরা প্রতিদিন ১০০/২০০ রোগী ১/২ মি. করে ৫০০ থেকে ১৫০০ টাকার বিনিময়ে দেখে এবং ৫/৭ টা টেস্ট নামের যে কমিশন ধান্দাবাজি করে, সেই টেস্ট রিপোর্ট ১/২ মি. দেখে আবারও ফি নেওয়া ডাক্তাদের নাকি পিপিই কেনার টাকা থাকে না। তাই পিপিই না থাকার কারনে করোনা রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত হয় । এজন্য সরকার তাদের উৎসাহ দেওয়ার জন্য তাদের ৩/৪ গুন পেনশন লাইফ ইনসুরেন্স দেওয়ার যে নাটক তা শুধু টাকারই খেলা। সুচিকিৎসার নমুনা এটা হতে পারে না।
বিশ্ব জুুেড় করোনার চিকিৎসা:
এ রোগের টিকা বা প্রতিষেধক আবিষ্কার না হলেও , বিভিন্ন দেশে নানা ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানা যায়। কখনো বলে ম্যালেরিয়া এ রোগের প্রতিষেধক, কখনো বলে এজিথ্রোমাইসিন গ্রুপের ঔষধ, কখনো বলে এন্টারসিড প্লাস, কখনো বলে প্লাজমা পদ্ধতি( আলেজান্ডার ফ্লেমিং এর জীবনী পড়লেই এই ব্যর্থ পদ্ধতির কথা জানা যায়) ইত্যাদি।
কিভাবে ছড়ায়?
১. মুলত: বাতাসের Air Droplet এর মাধ্যমে। ২. হাঁচি ও কাশির মাধ্যমে। ৩. আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসলে। ৪. বাহিরে ঘুরা ঘুরির পর হাত ও মুখ সাবান ও পানি দিয়ে পরিষ্কার না করলে।
করোনা আক্রান্ত রোগীদের লক্ষণ গুলো হলো-
সর্দি, গলা ব্যাথা, জ¦র, কাশি, হাঁচি, মাথা ব্যাথা, অবসাদ, শ্বাস নিতে কষ্ট।
Respiratory symtoms ছাড়াও জ¦র, সর্দি, কাশি, হাঁচি, শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যাই মুলত প্রধান লক্ষণ।
সাধারন সর্দি কাশি ও জ¦রের মাধ্যমেই শুরু হয় উপসর্গ। পরে শ্বাস- প্রশ্বাসের সমস্যা দেখা দেয়।
সাধারন রোগের উপসর্গ গুলো প্রকাশ পেতে গড়ে পাঁচ দিন সময় নেয়। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছেন, এই ভাইরাসটি incubation period 14 days পর্যন্ত স্থায়ী থাকে।তবে 24 days পর্যন্ত স্থায়ী থাকতে পারে।
প্রতিরোধ:
১. হাঁচি বা কাশির সময় মুখ ঢেকে রাখা।
২. ঘন ঘন সাবান ও পানি দিয়ে বা স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধোয়া।
৩. ঠান্ডা লেগেছে বা জ¦রের লক্ষন আছে এমন ব্যক্তির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা
৪. মাস্ক ব্যবহার করা
৫. জ¦র , কাশি বা শ^াসকষ্ট হলে দ্রুত চিকিৎসা সেবা নেয়া শা
৬. সবশেষে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা বা প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাহিরে না যাওয়া।
প্রাইভেট ডিটেকটিভ/৮জুন ২০২০ /ইকবাল