May 20, 2024, 5:14 am

সংবাদ শিরোনাম
শাহপরাণ (রহঃ) থানা পুলিশের অভিযানে ১৯,৬০০ কেজি ভারতীয় চিনিসহ ০৩ জন গ্রেফতার উখিয়ায় রোহিঙ্গা শিবিরে অভিযানে ৪ আরসা সদস্য অস্ত্রসহ গ্রেফতার রাজধানীর ডেমরা এলাকা হতে আনুমানিক ছয় কোটি টাকা মূল্যমানের ৮৬০০ লিটার বিদেশী মদসহ ০৩ জন কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০ উলিপু‌রে পাঁচ কেজি গাঁজাসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক কাউনিয়ায় (ব্লাস্ট) এর উদ্দোগে ধর্মীয় সম্প্রীতির উপরে আলোচনা সভা কুড়িগ্রামে ১ টাকায় ১০ টি পরিবেশ বান্ধব পাখা বিক্রি করছে ফুল জৈন্তাপুরে গভীর রাতে পুলিশের অভিযানে ৬১৫ বোতল মদ ৮ কেজী গাঁজা উদ্ধার রাজধানী ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকা হতে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ০৫ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০ ক্ষেতলালে কলেজ প্রতিষ্ঠাতার মৃত্যু বার্ষিকীতে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে সার্কেল হিসেবে সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ মাসুদ রানার যোগদান

খেলাপি ঋণের ৫৫ হাজার কোটি টাকা মামলার জালে

বিশাল পরিমাণ এই অর্থ আদায়ে ব্যাংকগুলোকে আরও কঠোর হওয়ার পরামর্শ আইএমএফ ও বিশেষজ্ঞদের

প্রাইভেট ডিচেকটিভ ডেস্কঃ

মামলার জালে খেলাপি ঋণের ৫৫ হাজার কোটি টাকা আটকে আছে দীর্ঘদিন। এই অর্থের ৫১ হাজার কোটি টাকাই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর। আইনের জটিলতা ও মামলার দীর্ঘসূত্রতার কারণে বিশাল পরিমাণ এই অর্থ আদায় করতে পারছে না ব্যাংকগুলো। এই অর্থসহ খেলাপি ঋণের ৮০ হাজার ৩০৭ কোটি টাকা আদায়ে ব্যাংকগুলোকে আরও কঠোর হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। আর এর জন্য উচ্চ আদালতে পৃথক বেঞ্চ গঠনের পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন বিশাল পরিমাণ অনাদায়ী খেলাপি ঋণ ব্যাংকিং খাতের সংকটকে আরও ঘনীভূত করছে। সূত্র জানায়, অর্থঋণ আদালতে খেলাপি ঋণের দুই লাখ আড়াই হাজার মামলার বিপরীতে ৫৫ হাজার ৩১১ কোটি টাকা আটকে রয়েছে ব্যাংকগুলোর। যা মোট খেলাপি ঋণের ৭৩ শতাংশ। বিপুল পরিমাণ এই অর্থ তুলতে না পারলে ব্যাংকিং খাতে ভয়াবহ সংকট নেমে আসবে। কেননা এই অঙ্ক দিন দিন বেড়েই চলছে। এ জন্য পৃথক বেঞ্চ গঠন করে এবং এ সংক্রান্ত আইনে সংশোধনী এনে অর্থ আদায়ের ব্যবস্থা করার তাগিদ দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। বাংলাদেশ প্রতিদিনকে তিনি বলেছেন, খেলাপি ঋণের সংস্কৃতি থেকে বেরুতে না পারলে ব্যাংকিং খাত ভয়াবহ সংকটে পড়বে। এ জন্য ঋণ প্রস্তাব অধিক যাচাই-বাছাই করে তা অনুমোদন করা প্রয়োজন। কেননা বহু ঋণ খেলাপি হয়ে যায় ব্যাংকের তদারকির অভাবে। সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত খেলাপি ও অবলোপনকৃত ঋণ আদায়ে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকের পক্ষ থেকে ৬ লাখ ১৩ হাজার ৭৫৫টি মামলা করা হয়। এ মামলার সংখ্যা অর্থঋণ আদালতে এ যাবৎ ব্যাংকিং খাতের দায়েরকৃত মোট মামলার ৫৩ দশমিক ৪০ শতাংশ। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো ৬০ হাজার ৫৭৪ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ আদায়ের জন্য এসব মামলা করে। তবে এ পর্যন্ত ৫ লাখ ২৮ হাজার ৫৩টি মামলা নিষ্পত্তি করে ৮ হাজার ৫৯০ কোটি টাকা আদায় করা হয়েছে। বাকি ৫১ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকা আটকে আছে। বিপরীতে মামলা ঝুলে আছে ৮৫ হাজার ৭০২টি। এদিকে বিশেষায়িত ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণ আদায়ের জন্য একই সময় পর্যন্ত অর্থাৎ গত বছরের জুন পর্যন্ত মোট ৪ লাখ ৭ হাজার ৩৩২টি মামলা করে। যা ব্যাংকিং খাতে মোট মামলার ৩৫ দশমিক ৪৪ শতাংশের সমান। খেলাপি ঋণের ৫ হাজার ৪৩০ কোটি টাকা আদায়ের জন্য এ মামলাগুলো দায়ের করা হয়। সর্বশেষ প্রকাশিত তথ্যমতে, ২ লাখ ৯০ হাজার ৬২০টি মামলা নিষ্পত্তি করে আদায় করা হয় মাত্র ২ হাজার ১০৩ কোটি টাকা। এখন ১ লাখ ১৬ হাজার ৭১২টি মামলার বিপরীতে খেলাপি ঋণের ৩ হাজার ৩২৭ কোটি টাকা আটকে আছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সোনালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রদীপ কুমার দত্ত বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, খেলাপি ঋণ ব্যাংক খাতের জন্য এক ধরনের রোগ। এ রোগ সারাতে হলে ঋণ প্রস্তাব অনুমোদনে আরও কঠোর হতে হবে। সেই সঙ্গে কোনো প্রতিষ্ঠান বা ঋণগ্রহীতা যাতে খেলাপি না হয় সেজন্য ব্যাংকগুলোরও কিছু দায়িত্ব রয়েছে সেগুলো অবশ্যই পালন করতে হবে। এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে উদ্বেগজনক হারে খেলাপি ঋণ বাড়ছে। যে কারণে বাড়ছে মূলধন ঘাটতিও। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি প্রায় ১৯ হাজার কোটি টাকা দাঁড়িয়েছে। আর খেলাপি ঋণ আদায় সন্তোষজনক নয়। গত জুন পর্যন্ত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের মোট শ্রেণিকৃত ঋণের মধ্যে মাত্র ৪ দশমিক ১০ শতাংশ আদায় সম্ভব হয়েছে। টাকার অঙ্কে এক হাজার ৪৬৪ কোটি টাকা। একইভাবে বিশেষায়িত ব্যাংকের খেলাপি ঋণ আদায়ের পরিমাণ হচ্ছে ৬৪৯ কোটি টাকা, শতাংশের হিসাবে ১২ দশমিক ৭২। খেলাপি ঋণ আদায়ের ব্যাপারে সম্প্রতি আর্টিকেল ফোরের অধীনে আইএমএফের একটি প্রতিনিধি দল ঢাকা সফর করে। এ সময় প্রতিনিধি দলটি খেলাপি ঋণ আদায়ে ব্যাংকগুলোকে আরও যত্নবান ও কঠোর হওয়ার পরামর্শ দেয়। পাশাপাশি প্রতি বছর জাতীয় বাজেট থেকে মূলধন ঘাটতি পূরণেরও কড়া সমালোচনা করা হয়। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যারা ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপি হচ্ছেন তাদের থামাতে হবে। আর মামলা হচ্ছে একটা দীর্ঘ প্রক্রিয়া। এতে অতিরিক্ত সময় ক্ষেপণ হয়। যা খেলাপি ঋণ আদায়ের কোনো উত্তম প্রক্রিয়া নয়।এ ছাড়া ইদানীং স্বেচ্ছা-খেলাপি হওয়া অনেক প্রতিষ্ঠান নিজেরাই মামলা করছে অর্থ পরিশোধ প্রক্রিয়া দীর্ঘ করতে। এ জন্য এসব মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি করতে পৃথক বেঞ্চ গঠন করা প্রয়োজন। একই সঙ্গে আইনের ফাঁকফোকরগুলো বন্ধ করা প্রয়োজন বলে তারা মনে করেন। অর্থ বিভাগের একটি সূত্র জানায়, অর্থঋণ আদালতের মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করতে আলাদা বেঞ্চ গঠনের অনুরোধ করে বেশ কিছু দিন আগে আইনমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। চিঠিতে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত অর্থঋণ সংক্রান্ত রিটের কারণে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলো কীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, সেই চিত্রও তুলে ধরেছেন। পাশাপাশি অর্থঋণ আদালত আইন সংশোধনের সুপারিশ করেছে আইন কমিশন। এ দুটি প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হলে খেলাপি ঋণ আদায় প্রক্রিয়াতে গতি আসবে বলে মনে করে অর্থবিভাগ।

 

 

 

প্রাইভেট ডিটেকটিভ/২১মার্চ২০১৮/ইকবাল

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর