অং মারমা বান্দরবান জেলা প্রতিনিধিঃ
পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসকারী সাধারণ বাঙালী জনগোষ্ঠী ও সেখানে সক্রিয় আঞ্চলিক বাঙালী সংগঠনগুলোর প্রতি নিরাপত্তা বাহিনী ও অসামরিক প্রশাসনকে সহানুভূতিশীল, মানবিক ও হেয় প্রতিপন্ন মনে না হয় এমন আচরণের পরামর্শ দিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এমনকি সোনামিয়া টিলাসহ বাঙ্গালীদের বেদখল হয়ে যাওয়া ভুমি উদ্ধারে বাঙ্গালীদের পূর্ণ প্রশাসনিক ও আইনি সহায়তা প্রদান করার সুপারিশ করা হয়েছে।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সম্প্রতিকালে পার্বত্য চট্টগ্রামে ঘটে যাওয়া বেশ কিছু ঘটনা এবং প্রশাসনের কিছু আচরণ, পদক্ষেপ ও ভূমিকার কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত সাধারণ বাঙালী জনগোষ্ঠী ও বাঙালী সংগঠনগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তারা নিজেদের অসম্মানিত, হেয় প্রতিপন্ন ও দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক এবং নিজ দেশে পরবাসীর মতো পরিস্থিতির শিকার হয়েছে। এ কারণে সেখানে বসবাসরত বাঙালী জনগোষ্ঠী সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, জীবনযাপন, অধিকারের প্রশ্নে পদে পদে বঞ্চিত হচ্ছিল। ফলে তাদের অনেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছেড়ে সমতলে স্থানান্তরিত হতে শুরু করেছিল।এ প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের গোয়েন্দা পরিদপ্তর থেকে সাধারণ বাঙালি জনগোষ্ঠীর এবং বাঙালি আঞ্চলিক দলসমূহের প্রতি নিরাপত্তা বাহিনী ও অসামরিক প্রশাসনের বর্তমান মনোভাব এবং সম্ভাব্য দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব বিষয়ে করণীয় সম্পর্কে গত সেপ্টেম্বর মাসের ৬ তারিখে কিছু সুপারিশ পেশ করে।এর প্রেক্ষিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় গত ১ নভেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব রীভা চাকমা খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসকের প্রতি পাঠানো এক পত্রে বেশ কিছু পরামর্শ প্রদান করেছে।এতে বলা হয়েছে:“ক. নিরাপত্তা বাহিনী এবং প্রশাসন কর্তৃক বাঙালিদের প্রতি সহানুভূতিশীল ও মানবিক আচরণ এবং হেয় প্রতিপন্ন না করার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা যেতে পারে খ. বাঙালি সংগঠন কর্তৃক বিভিন্ন কর্মসূচি পালন ও বাঙ্গালীদের আইনগত অধিকার নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে। গ. সোনামিয়া টিলাসহ বাঙ্গালীদের বেদখল হয়ে যাওয়া ভুমি উদ্ধারে বাঙ্গালীদের পূর্ণ প্রশাসনিক ও আইনি সহায়তা প্রদান করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে। ঘ. পার্বত্য চট্টগ্রাম হতে সমতলে বাঙ্গালীদের সম্ভাব্য স্থানান্তর রোধকল্পে তাদের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনার কার্যকরী পরিকল্পনা প্রণয়ন করার পাশাপাশি এদের শিক্ষা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে এনজিও, স্থানীয় প্রশাসন এবং নিরাপত্তা বাহিনীকে কার্যকরী ভূমিকা পালনের নির্দেশনা প্রদান করা যেতে পারে। ২. এমতাবস্থায় উপরোল্লিখিত সুপারিশসমূহের বিষয়ে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হল।” এখন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সূত্রে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রেরিত সুপারিশ বাস্তবায়নে খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক কী পদক্ষেপ গ্রহণ করে তা দেখার বিষয়।
প্রাইভেট ডিটেকটিভ/২১ নভেম্বর ২০১৮/ইকবাল