মৌলভীবাজারে যৌতুক লোভী স্বামীর নির্যাতনে স্ত্রী এখন পঙ্গু
মশাহিদ আহমদ, মৌলভীবাজার
মৌলভীবাজারে যৌতুক লোভী স্বামীর নির্যাতনে ৩ সন্তানের জননী সেলিনা এখন পঙ্গুত্ব বরণ করে চরম মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। অবুঝ সন্তানদেরকে নিয়ে পিত্রালয়ে হুইল চেয়ারে বসে সময় কাটান। এ ঘটনায় মৌলভীবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে সেলিনা বেগম বাদী হয়ে স্বামী মোঃ ইব্রাহিম মিয়া (৩৫), ভাসুর মোহাম্মদ আলী (৪০), শাশুরী জায়েদা বেগম, ননড়ীর স্বামী মোঃ মাহমুদ (৫০), ননড়ী ছায়া বেগম (৪৫), দেবর মোঃ ইয়াকুব আলী (২৮) ও ননদ সেলি বেগমকে আসামী করে (মামলা নং ৩৯৬/২০১৮ইং) মামলা দায়ের করেছেন। মামলা সুত্রে জানা গেছে- নবীগঞ্জ থানার নোয়াগাঁও গ্রামের মোঃ ইব্রাহিম মিয়ার সাথে বিগত ২০০৪ সালে ইসলামী শরার বিধান মতে শ্রীমঙ্গল উপজেলার শমসেরগঞ্জ বাজার কামাসিদ গ্রামের মোঃ ইব্রাহিম মিয়ার সাথে বিবাহ হয়। দাম্পত্য জীবনে তার ঔরসজাত ২টি মেয়ে ও ১টি ছেলে সন্তান জন্ম গ্রহন করে। দীর্ঘদিন যাবৎ ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য যৌতুক হিসাবে ২ লক্ষ টাকা তার পিত্রালয় থেকে এনে দেয়ার জন্য তাকে শারিরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করেন স্বামী ইব্রাহিম। বিগত ১ নভেম্বর বিকাল অনুমান ৩ ঘটিকায় স্বামী ও তার বাড়ীর লোকজন একজোটবদ্ধ হয়ে তাকে প্রানে হত্যা করার জন্য দা দিয়ে মাথা লক্ষ করে ছেদ মারিলে ছেদটি বাম গোড়ালীর উপর অংশে মারান্তক কাটা রক্তাক্ত জখম হয়। লোহার রড়ের উপর্যুপরি আঘাতেন হাঠুর নিচের ঘিলার ২টি স্থানে হাড় ভাঙ্গিয়া যায় এবং বাম পায়ের জোড়া ছুটে যায়। তাকে অমানবিক নির্যাতনের পর পাষন্ড স্বামী তার ভাতা বাবুল মিয়াকে মুঠোফোনে দাবীকৃত যৌতুকের টাকা নিয়ে আসতে বলেন। ভাতা বাবুলসহ আশপাশের লোকজন তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিস্ট হাসপাতালে সার্জারী বিভাগে ( ০১/১১/২০১৮ইং হইতে ০৬/১১/ ২০১৮ইং, বেডনং- ৭, রেজি নং- ৭০১৮৭) ভর্তি করেন। গত ১০ নভেম্বর সেলিনার পিত্রালয়ে এক মীমাংসা বৈঠক অনুষ্টিত হলে সেখানেও তার স্বামী ২ লক্ষ টাকা যৌতুকের দাবীতে অটল থাকায় বিষয়টি চুড়ান্ত মীমাংসা হয়নি। সর্বশেষ তিনি মৌলভীবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলা দায়ের করেন।