হিলিতে স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যা করেছে স্বামী
মোকছেদুল মমিন মোয়াজ্জেম, হিলি থেকে
দিনাজপুরের হিলি সীমান্তের দক্ষিণ বাসুদেবপুর গ্রামে স্ত্রী শাহানাজ বেগমকে (৩৭) পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। নিহত শাহানাজ ওই গ্রামের মৃত ইসমাইল হোসেনের মেয়ে। এ ঘটনায় রাত ১০টার দিকে তার স্বামী খোরশেদ আলম ও দেবর মুক্তারকে আটক করেছে থানা পুলিশ।
খোরশেদ হাকিমপুর পৌর আওয়ামীলীগের ৫নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক বলে নিশ্চিত করেছেন এই ওয়ার্ডের সভাপতি মো. মোখলেছুর রহমান।
এদিকে মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে দুই শতাধিক এলাকাবাসি রাত সাড়ে ১০টার দিকে শাহানাজের হত্যাকারি স্বামী খোরশেদের ফাঁসিরদাবীতে শ্লোগান দিতে দিতে থানায় একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে যান। এসময় থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুস সবুর মিছিলকারিদেরকে বলেন মামলা দিয়ে ঘাতককে শাস্তির আশ্বাস দিলে মিছিলকারিরা শান্ত হন।
শাহানাজের পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, বেশ কয়েকদিন ধরে পারিবারিকভাবে খোরশেদ ও শাহানাজের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ সৃষ্টি হয়। গত তিনদিন আগে ও খোরশেদ স্ত্রী শাহানাজকে কোনো কারণ ছাড়াই মারধর করলে শাহানাজ বাবার বাড়ীতে চলে যান। এসময় খোরশেদ খবর ছড়ায় তার স্ত্রী বাড়ী থেকে আমার সব টাকা নিয়ে চলে গেছে। এ অবস্থায় আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে খোরশেদ তার শ্বশুড়বাড়ী থেকে স্ত্রী শাহানাজকে নিয়ে তার বাড়ীতে নিয়ে আসেন এবং ঘরের দরজা বন্ধ করে পিটাতে থাকেন। একপর্যায়ে সন্ধ্যা ৬টার দিকে গুরুতরভাবে অসুস্থ্ হয়ে পড়লে প্রতিবেশিরা শাহানাজকে ৬টা ২০মিনিটে ঘরের দরজা ভেঙ্গে উদ্ধার করে দ্রুত হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার রাশেদ জানান, স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ভর্তি থাকার পর তার শারিরীক অবস্থার অবনতি হয়। এসময় তাকে উন্নত চিকি?সার জন্য অন্যত্র রেফার্ড করা হয়।
শাহানাজের চাচাতো ভাই লিটন জানান, রাত ৮টার দিকে শাহানাজকে জয়পুরহাট আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে সে মারা যায়। খোরশেদ কোনো কারণ ছাড়াই শাহানাজের উপর প্রতিনিয়ত শারিরীক ও মানুষিক নির্যাতন করতো। আজ একইভাবে শারিরীক নির্যাতন করে ও বেদম পিটিয়ে শাহানাজকে হত্যা করা হয়েছে। শাহানাজ এক ছেলেও এক মেয়ের জননী।
এদিকে হাকিমপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুস সবুর জানান, খবর পেয়ে পুলিশ নিয়ে ঘটনা স্থলে যায়। সেখান থেকে শাহানাজের স্বামী খোরশেদ ও তার দেবর মুক্তারকে আটক করা হয়েছে। লাশ ও থানায় আনা হয়েছে। খোরশেদ ও মুক্তারকে জিঞ্জাসাবাদ করা হলে জানা যাবে কি কারণে শাহানাজকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তবে লাশের এখনো সুরতহাল রিপোর্ট করা হয়নি বলে জানান তিনি।