May 9, 2024, 5:50 am

সাঘাটা ভুমি অফিসে ৬ হাজার টাকা ঘুষ ছাড়া ভুমি খারিজ হয় না

মোস্তাফিজুর রহমান ফিলিপস্,সাঘাটা (গাইবান্ধা) প্রতিনিধিঃ

সারাদেশের মতো গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলা ভুমি অফিসে জমির খারিজ বা নামজারি করতে সরকার নির্ধারিত ফি এক হাজার ১৫০ টাকা । অথচ ৬ হাজার টাকা ঘুষ দিয়ে ৬ মাস ধরে অফিসে ঘুরেও খারিজ বা নামজারি করা সম্ভব হচ্ছে না । তাই ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ। অতিরিক্ত টাকা ছাড়া কোন খারিজ হয় না সাঘাটা উপজেলা ভুমি অফিসে। আর এই অফিসের উপজেলা ভুমি কর্মকর্তা ছাড়া নাকি অফিসের সবাই পদে পদে ঘুষ নেয়, এমন অভিযোগ করলেন খোদ সাঘাটা ভুমি অফিসের উপসহকারী ভুমি কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান । তার দাবি অফিসের কেউ ঘুষ না নিলে তিনি নিজেও ঘুষ নিবেন না । তবে উপজেলা ভুমি কর্মকর্তা জানালেন, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের কথা ।সরেজমিনে দেখা যায়, সাঘাটা উপজেলা ভুমি অফিসের যাত্রী ছাইনির নিচে চলছে সাঘাটা ইউনিয়ন ও ঘুড়িদহ ইউনিয়নের ভুমি অফিসের কার্যক্রম । কারণ এই ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা উপসহকারী ভুমি কর্মকর্তা মাহাবুর রহমান সরকার নির্ধারিত ফি’র চেয়ে চার গুণ টাকা নেন । তাই তাকে ক্লোজ করে উপজেলা সদরে রাখা হয়েছে তার কার্যক্রমের গতিবিধি লক্ষ রাখতে । সাঘাটা উপজেলার হাসিলকান্দি গ্রামের বাসিন্দা নাজমুল ইসলাম জানান, ৬ মাস থেকে সাঘাটা ভুমি অফিসে ঘুরছি জমির খারিজের জন্য। কিন্তু হচ্ছে না । আজ না কাল, কাল না পরশু । এভাবে ঘুরতে ঘুরতে জীবন শেষ । তবুও মিলছে না খারিজ । সরকার নির্ধারিত ফি ১১৫০ টাকার খারিজ দ্রুত সময়ে কাজ করার জন্য ৬ হাজার টাকা দিয়েছি তবুও হচ্ছে না । জানি না আরো কত দিন লাগবে ।তার মতো একই অবস্থা সাঘাটা উপজেলার সাঘাটা গ্রামের শামীম বেপারির । তিনি জানান, পারিবারিক প্রয়োজনে জমি বিক্রি করতে খারিজের প্রয়োজনে আসেন সাঘাটা ইউনিয়ন ভুমি অফিসে। অফিসের দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী ভুমি কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান তার কাছ থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহন করেন এবং বলেন দ্রুত সময়ের মধ্যেই খারিজ/ নামজারী কাগজ বুঝে দেয়া হবে । দীর্ঘ ২ মাসেও মেলেনি তার সেই খারিজ বা নামজারি । নাম প্রকাশের অনিচ্ছুন একাধিক ব্যাক্তি জানান, সাঘাটা উপজেলা ভুমি অফিসের সার্টিফিকেট সহকারী আয়সা সিদ্দিকা জমি খারিজ বাবদ দলিল যাচাইবাছাই করতে ২ থেকে ৪ হাজার টাকা ঘুষ নেন । ঘুষ না দিলে তিনি খারিজের ফাইল আটকে রাখে এবং নানা তালবাহনা করেন । এই কারণে ইউনিয়ন ভুমি অফিসাররা জমি খারিজের জন্য ঘুষ নিতে বাধ্য হন । আয়শা সিদ্দিকার বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিকবার লিখিত অভিযোগ করা হয়েছিল । কিন্তু কোন পদক্ষেপ নেননি সংশ্লিষ্ট দপ্তর। তাই এই অফিসের সহকারীরা ঘুষ নিতে কোন দ্বিধাবোধ করেন না ।তবে সাঘাটা ইউনিয়ন উপ-সহকারী ভুমি কর্মকর্তা মাহবুর রহমান তার বিরুদ্ধে অতিরিক্ত টাকা তথা ঘুষ নেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, উপজেলা ভুমি অফিসের বড় স্যার ছাড়া সবাই ঘুষের টাকা খায় আমি কি করবো । তাদের দেয়া লাগে বলেই আমি নিই । তাদের না দেয়া লাগলে আমিও নেবো না । ওরা অফিসে বসে ঘুষ খায়, বলেই আমাদের ঘুষ নিতে হয় । জমি খরিজ বা নামজারির সরকার নির্ধারিত ফি’র চেয়ে বেশি টাকা নেয়া বিষয়ে উপজেলা ভুমি কর্মকর্তা শাকিল আহম্মেদ ক্যামরার সামনে কথা বলেননি । তবে তিনি জানান, মাত্র ২ মাসে এই অফিসে যোগদান করেছি । তাই অফিসের সমস্যা সমাধান করতে আরো সময় লাগবে । যদি কেউ সরকার নির্ধারিত ফি’র চেয়ে বেশী টাকা নেয়, তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে ।

প্রাইভেট ডিটেকটিভ/২১ ডিসেম্বর ২০১৯/ইকবাল

Facebook Comments Box
Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর