কেমন আছে নূতন?
ডিটেকটিভ বিনোদন ডেস্ক
দীর্ঘদিন ধরে চলচ্চিত্রের পর্দায় অনুপস্থিত এক সময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী নূতন। সিনেমা থেকে কেন তার দূরে থাকা এবং অন্য নানা প্রসঙ্গ নিয়ে সম্প্রতি আলাপ হলো নৃত্য পটিয়সী সুনয়না এ পর্দাকন্যার সঙ্গে। প্রথমেই কেমন আছেন জানতে চাইলে একরাশ অভিমান ঝরা কণ্ঠে বললেন, আপনারা কি জানতে চান আমাদের কথা? আমাদের কথা এই জন্যই বললাম, সেই পুরনো দিনের সিনেমায় আমরা যারা অভিনয় করতাম সবাই নিজেদের একই পরিবারের সদস্য মনে করতাম। একে অন্যের সুখ দুঃখে সাথী হতাম। আপনি জানতে চাচ্ছেন নূতন কেমন আছে। কেমন যাচ্ছে তার দিনকাল তাই না? যদি জানতে চান শিল্পী নূতনের কথা, তার উত্তর হবে, খুব একটা ভালো নেই। এর কারণ বর্তমান ফিল্ম ইন্ড্রাস্ট্রির করুণ অবস্থা। দুঃখজনক বিষয় কি জানেন বর্তমানে যে ক’জন চিত্র প্রযোজক পরিচালক, শিল্পী কাজ করছেন তারা আমাদের কথা চিন্তাই করেন না।
তারা ভাবেন নূতনরা তো ফুরিয়ে গেছেন তাদের আর নিয়ে লাভ কি? একজন শিল্পী সাংবাদিক কি কোনো দিন ফুরিয়ে যায়। এইসব পেশা তো মৃত্যুর আগ পর্যন্ত থেকে যায়। প্রতিবেশী দেশ কলকাতা, মুম্বই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির দিকে তাকান দেখবেন আমাদের ঠিক উল্টো চিত্র। তারা সিনিয়র শিল্পীদের সময়োপযোগী চরিত্রে নিয়মিত কাজ করাচ্ছেন। অমিতাভ বচ্চন, রেখা, হেমা, পশ্চিম বাংলার রঞ্জিৎ মল্লিক, সৌমিত্র, সাবিত্রী সবাইকে নিয়ে আজও চলচ্চিত্র নির্মাণ হচ্ছে। ঠিক তার উল্টো চিত্র আমাদের। শুধু আমারই নয়, ববিতা ম্যাডাম, শাবানা ম্যাডাম, কবরী ম্যাডাম, সূচরিতা সবার দিন শেষ মনে করেন অনেক নির্মাতা। আমার কথাই বলি, নূতন যদি ফুরিয়ে যেত তাহলে শাাকিব খানের সঙ্গে ‘কিং খান’, ‘রংবাজ’ সুপারহিট হতো না। কত দুঃখজনক চিন্তা ভাবনা তাদের। আর নতুন কিছু নির্মাতা মনে হয় দ্বন্দ্বে ভোগে আমাদের মতো সিনিয়র শিল্পীদের নির্দেশনা দিবে কীভাবে তা ভেবে। আরে ভাই শিল্পী তো সব সময় পরিচালকের নির্দেশনা মেনেই তার চরিত্র পর্দায় ফুটিয়ে তোলে। এখানে সিনিয়র জুনিয়র মিলেই তো সফল একটি সিনেমা তৈরি হয়। এই শিল্পে সিনিয়র জুনিয়র অবহেলিত সব শিল্পী আমার পরম আত্মীয়। চলচ্চিত্রে দীর্ঘ সময়ের পথচলায় প্রাপ্তি সম্পর্কে জানতে চাইলে এ অভিনেত্রী বলেন, দেখেন আমি নূতন আজও যখন কোনো অনুষ্ঠানে যাই, মার্কেটে যাই দর্শকরা আগ্রহ ভরে আমার সঙ্গে কথা বলে, জানতে চায় এখন সিনেমায় কেন আমার অল্প উপস্থিতি। এ প্রজন্মের দর্শকরা আমাকে চেনে জানে স্যোশাল মিডিয়ায় যোগাযোগ করে। এটাই তো আমার প্রাপ্তি। এ জীবনে আর কি লাগে বলেন। আজকাল এফডিসি যেতে ইচ্ছে করে না বলে জানান নূতন। কারণ হিসেবে বলেন, খুব কষ্ট হয় ইন্ডাস্ট্রির খারাপ অবস্থা দেখে। কান্না পায়। এই এফডিসি জন্ম দিয়েছে শিল্পী নূতনকে। অবক্ষয় চারপাশ ঘিরে ধরেছে। নূতনকে প্রশ্ন করা হয়, আপনার এই যে অফুরন্ত অবসর কাটে কীভাবে? অভিনেত্রী বলেন, ব্যক্তি নূতন সব সময় ফুরফুরা থাকার চেষ্টা করেন। সংসার, একমাত্র মেয়ে নাতি সবাইকে নিয়ে ভালোই কাটে। মেয়ে দেশের বাইরে থাকে। আমি মাঝে মধ্যে বেড়াতে যাই। সামনে নতুন কোনো চলচ্চিত্রে আপনাকে দেখা যাবে কি? নূতন বলেন, দুটি ছবির কথা হচ্ছে। একটি ‘বাসর হবে মাটির ঘরে’। আরেকটি ছবির নাম এখনো ঠিক হয়নি।